প্রতীকী ছবি
অর্ণব আইচ: শহরে দৌরাত্ম্য নতুন ‘গে গ্যাং’য়ের! রীতিমতো বন্ধুত্বের নাম করে ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে লুঠপাট তথা ডাকাতি চালাচ্ছিল এই গ্যাং-এর সদস্যরা। এভাবেই এক যুবককে মারধর করে তাঁর টাকা ও গয়না লুঠ করে তিন সমকামী। উঠেছে এমনই অভিযোগ। এমনকী, জোর করে ওই যুবককে দিয়ে অনলাইনে টাকাও তুলিয়ে নেয় ওই ‘ডাকাত’রা। তদন্ত করে দক্ষিণ পূর্ব কলকাতার ‘গে গ্যাং’য়ের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কড়েয়া থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এই গ্যাংটি ফাঁদে পাতে বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে। ওই অ্যাপে সাধারণত সমকামী ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরাই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে থাকেন। জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী যুবক কয়েকজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য ওই অ্যাপের মাধ্যমে সার্চ করেন। ওই অ্যাপেই একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। ওই ব্যক্তি কড়েয়া এলাকার একটি ঠিকানা দেয় যুবককে। সেখানেই গিয়ে তাঁকে দেখা করতে বলা হয়।
যুবকের অভিযোগ, তিনি ওই বাড়িটিতে গেলে তিনজনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তারা তাঁকে একটি ঘরের ভিতর নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বরূপ ধারণ করে তারা। বন্ধ ঘরে তাঁকে মারধর শুরু করা হয়। তাঁর কাছে থাকা সোনার আংটি-সহ গয়না লুঠপাট করে ওই তিনজন। যুবকের কাছে কয়েক হাজার টাকাও তারা লুঠ করে। শেষ পর্যন্ত অনলাইনেও একজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য হয় ওই যুবক। এভাবে ৬৫ হাজার টাকা ‘গে গ্যাং’ ডাকাতি করে বলে অভিযোগ।
লুঠপাটের পর মারধর করে যুবককে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। তার পরই তিনি কড়েয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। যে মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল ও যে নম্বরে টাকা পাঠানো হয়েছে, তার ভিত্তিতেই পুলিশ আধিকারিকরা তদন্তে নামেন। ওই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরেই কড়েয়া থানার আধিকারিকরা পূর্ব কলকাতার তিলজলা এলাকা থেকে দুজন ও কড়েয়া থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের কাছ থেকে মোট ৪৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বাকি টাকা ও গয়না উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে, কড়েয়া ও বেনিয়াপুকুর এলাকায় ডাকাতি ও লুঠপাটের জন্য ফাঁদ পাতত ওই গ্যাংটি। তার জন্য প্রয়োজনে অল্প সময়ের জন্য তারা ঘরও ভাড়া নেয়। বিশেষ অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই যোগাযোগ করে তারা ফাঁদে ফেলত লোকজনদের। বন্ধুত্বের টোপ গিলে কেউ দেখা করতে এলেই ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে লুঠপাট চলত। ধৃতরা এর আগে কতজনের কাছ থেকে এই পদ্ধতিতে লুঠপাট বা ডাকাতি করছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.