চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: রবিবাসরীয় প্রচারে ঝড় তুললেন বিজেপি প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচারপর্ব শুরু হয় তাঁর। এদিন তিনি বরাকরে কর্মিসভা করেন, কুলটি জনসংযোগ করেন ও রূপনারায়ণপুরে নান্দনিক হলে প্রচারসভা করেন। প্রচারের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। এদিন তিনি তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনকে সরাসরি আক্রমণ করেন তাঁর বক্তব্যে।
এদিন মুনমুন সেনের বেশকিছু বক্তব্যকে বিতর্কিত ও অপমানজনক আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেন বাবুল। তিনি বলেন, ‘একটা ইন্টারভিউতে দেখলাম মুনমুন সেন বলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে চাকরবাকর দাঁড়ালেও কিছু আসে যায় না।’ বাবুল এর জবাবে বলেন, ‘উনি সূচিত্রা সেনের মেয়ে, রাজপরিবারের গৃহবধূ। সোনার চামচ মুখে নিয়ে হয়তো উনি জন্মেছেন। হয়তো ওনার আশেপাশে অনেক কাজের লোক ছিল যাঁদের কে ‘চাকর-বাকরের’ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। সেটা ওনার মানসিকতা। তিনি বলেন, মুনমুন সেন একজন উচ্চ শিক্ষিতা ও এলিগেন্ট মহিলা। আসানসোলে আসার পর এত দ্রুত তাঁর কথাবার্তা রুচিবোধ পালটে যাবে আশা করিনি।’ বাবুলের দাবি, কিছু নিচু নিকৃষ্ট মানের বা ‘পচা’ তৃণমূল নেতা ওনার আশেপাশে রয়েছে। হয়তো তাদেরই প্রভাবেই এই ঘটনা ঘটছে। এদিনের কর্মিসভায় বাবুল বলেন, মুনমুন সেন যদি ভাল সাংসদ হতেন তাহলে বাঁকুড়ার থেকে ওনাকে সরিয়ে দেওয়া হত না। সংসদে মাত্র ১৭ শতাংশ উপস্থিতি দিয়েছেন। মেলা খেলার কিছু উদ্বোধন ছাড়া বাঁকুড়ায় ওনাকে দেখা যায়নি। বন্যার সময় ওনাকে পাওয়া যায়নি। গত পাঁচবছরে তিনি কী কী কাজ করেছেন তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন কুলটিতে।
বাবুল দাবি করেন, বছরে পাঁচ কোটি টাকার বাইরে নতুন ইসিএসআই হাসপাতালের জন্য পঞ্চাশ কোটি টাকার ফান্ড আনিয়েছেন। কুমারপুরে উড়ালপুলের জন্য রেল-সেলকে দিয়ে সাতান্ন কোটি টাকা আনিয়েছেন। আসানসোলে রেলস্টেশনগুলিকে বিমানবন্দরের ধাঁচে সাজিয়েছেন। সিএসআর ফান্ড থেকে আড়াই হাজার সোলার লাইট লাগিয়েছেন। অথচ সেই লাইটগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে রাতের অন্ধকারে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের অনেকে বলছেন বাবুল সুপ্রিয় সংসদ দাঁড়িয়ে কোনও প্রশ্ন করতে দেখা যায়নি। যাঁরা একথা বলছেন তাঁদের প্রতি আমার জবাব আমি কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী। প্রশ্ন আপনারা করবেন জবাব আমি দেব। আপনারা তো কোনও প্রশ্নই করেননি। ডায়মন্ড হারবারের এক সাংসদ প্রশ্ন করেছিলেন তার জবাব আমি দিয়েছি।’ বাবুল বলেন, ‘যেখানেই মুনমুন সেন যাচ্ছেন রাস্তার খানাখন্দের কথা বলছেন। কিন্তু তিনি জানেনই না সেই রাস্তাগুলি পুরনিগম বা জেলাপরিষদের রাস্তা। আমি রাস্তা তৈরির জন্য বহু টাকা দিয়েছি।’ এদিন বাবুল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বন্ধুত্ব আলাদা জায়গায়। রাজনীতি আলাদা জায়গায়। ২৩ তারিখ নিশ্চয় দেখা হবে মুনমুন সেনের সঙ্গে। সেদিন হিসেব ভাল করে বুঝে নেব।’ উল্লেখ্য, বরাকের কর্মিসভায় বাবুলের বিতর্কিত গান ‘তৃণমূল আর না’ আবারও বাজানো হয়।
ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.