স্টাফ রিপোর্টার: অত্যাশ্চর্য শোনালেও সত্যি। কেপটাউন টেস্টে ভারতের যে দু’জন শিখর ছুঁয়েছিলেন, সেঞ্চুরিয়নে শনিবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শুরু হতে চলা দ্বিতীয় টেস্টে তাঁরাই অনিশ্চিত! এঁরা হচ্ছেন ঋদ্ধিমান সাহা এবং ভুবনেশ্বর কুমার! এবং এঁদের সম্ভাব্য পরিবর্ত যথাক্রমে পার্থিব প্যাটেল ও ইশান্ত শর্মা!
কেপটাউন টেস্টে দশটা ক্যাচ ধরেছিলেন ঋদ্ধিমান। মহেন্দ্র সিং ধোনির রেকর্ড চূর্ণ করে এক টেস্টে সর্বাধিক শিকারের তাজে হাত রেখেছিলেন বঙ্গসন্তান। বসে পড়েছিলেন বব টেলরদের পাশে। ভুবনেশ্বর কুমার আবার কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংকে প্রথম ইনিংসে একা কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরই অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে তেরো রানের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার তিনটে উইকেট বেরিয়ে গিয়েছিল! ১৩-৩ হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনটে উইকেটই তোলেন ভুবনেশ্বর, নিজের প্রথম তিন ওভারে! সেই সময় তাঁর বোলিং ফিগারটাও অবিশ্বাস্য দেখাচ্ছিল ৩-১-৫-৩! শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে চার উইকেট তোলেন ভুবনেশ্বর। ম্যাচে নেন ছ’টা উইকেট।
[ওপেনিং কম্বিনেশনে বদল এনে চমক দিতে পারবেন কি বিরাট?]
আর আজ? আজ, ক্রিকেট অদৃষ্টের পরিহাসে পারফরম্যান্সের শিখরে থাকা সেই দুই-ই বাদ পড়তে পারেন! সেঞ্চুরিয়নে আরও একটা পরিবর্তনের কথা চলছে। শিখর ধাওয়ানের বদলে লোকেশ রাহুল টিমে আসছেন। কিন্তু তা নিয়ে কারও কোনও বক্তব্য নেই। শিখরের চেয়ে লোকেশের টেকনিক যে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে অনেক বেশি উপযোগী, তা সর্বজনবিদিত। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটমহলের কারও কারও বাকি দু’টো পরিবর্তন বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ, ভারতীয় ক্রিকেটে আজ পর্যন্ত এ রকম পারফরম্যান্সের পরেও ডেঞ্জার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনা ঘটেনি। ঋদ্ধির ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, তাঁর নাকি সাইড স্ট্রেন আছে। এ দিন সেঞ্চুরিয়নের নেট সেশনে ব্যাটিং বা কিপিং কিছুই করেননি ঋদ্ধিমান। তাঁকে শুধু পার্থিবকে কিপিং প্র্যাকটিস দিতে দেখা যায়। কখনও ব্যাট দিয়ে। কখনও বা হাত দিয়ে ছুঁড়ে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কারও চোট লাগলে বোর্ড ইমেল করে জানিয়ে দেয়। ঋদ্ধির চোট লাগলে সেটা হল না কেন? বোর্ড থেকে মেল এল না কেন?
অবশ্যই ঋদ্ধিমান এবং ভুবনেশ্বর দু’জনের ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ, শনিবার। কিন্তু একটা টেস্ট হারের পরেই ভারতের এত অস্থির হয়ে পড়া নিয়ে কোনও কোনও মহল থেকে প্রশ্ন উঠে পড়ছে। আসলে শুধুমাত্র ঋদ্ধি বা ভুবনেশ্বর নন। এ দিন রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিয়েও প্রবল নাটক হয়। আগে একটা ধারণা ছিল যে, অশ্বিনকে সেঞ্চুরিয়নে বসিয়ে বাড়তি ব্যাটসম্যান নিয়ে নামতে পারে ভারতীয় দল। স্পিনার দরকার নেই। চার পেসারই যথেষ্ট । কিন্তু পরে সেই ধারণা পাল্টে যাওয়ায় অশ্বিন হয়তো বেঁচে যাচ্ছেন। বদলে বাদের তালিকায় ঢুকে পড়েছেন ঋদ্ধিরা। ভারতীয় ক্রিকেটমহল তাই প্রশ্নটা তুলছে। বলাবলি চলছে যে, একটা টেস্টে হেরে যাওয়ায় এত অস্থিরতা কেন? প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গেপাধ্যায়ের মতো কেউ কেউ তো পরিষ্কার বলে দিয়েছেন যে, সেঞ্চুরিয়নে একটা বদলেরও প্রয়োজন নেই। তা হলে? সর্বোপরি ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি নিজে। কোহলি নিজেই এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে বলে যান, তিনি আশা করবেন যে একটা টেস্ট হেরে যাওয়ায় টিম প্যানিক বাটনে চাপ দেবে না। কিন্তু এটা তা হলে কি হচ্ছে? ঋদ্ধিমান ও ভুবনেশ্বরের মতো দু’জন কেপটাউন পারফর্মারকে বাদ দিলে কি খুব ভাল বার্তা যাবে?
[মাস্টার ব্লাস্টার নন, ছেলে অর্জুনের রোল মডেল অন্য দুই ক্রিকেটার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.