অভিষেক চৌধুরী,কালনা: এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসাবে আমেরিকার মলোকাই চ্যানেলে (Molokai Channel) নামছেন কালনার ‘জলকন্যা’ সায়নী দাস। গত বছরে মলোকাইয়ে নামার সম্মতি পেলেও করোনার কারণে সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তবে এবার অনুমতি পেয়ে উচ্ছ্বসিক সায়নী। জোরকদমে শুরু করেছেন প্রস্তুতি। বর্তমানে সপ্তসিন্ধু জয়ের স্বপ্নে বিভোর কালনার তরুণী।
২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেল, ২০১৮-তে রটনেষ্ট ও ২০১৯-এ ক্যাটলিনার জলে নেমে ভারত তথা বাংলা ও বাঙালির মুখ উজ্বল করেছিলেন সায়নী। ২০২০ সালে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মলোকাই চ্যানেলে তাঁর নামার ইচ্ছা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। শেষমেশ মিলল অনুমতি। শনিবার রাতে সায়নীকে মেল মারফত জলে নামার সম্মতি দেয় চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। সায়নীর বাবা ও প্রশিক্ষক রাধেশ্যাম দাস জানান, “অন্যান্য চ্যানেলের থেকে মলোকাইয়ের জলে নামা বেশ চ্যালেঞ্জের। কারণ, লম্বায় এই চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ২৬ মাইল। শুধু তাই নয়, কোথাও কোথাও দুই থেকে আড়াই হাজার ফুট পর্যন্ত এর গভীরতা। তার উপর ওই জলেই রয়েছে ভয়ংকর হাঙরের উৎপাত। ফলে যেকোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এই চ্যানেল অতিক্রম করতে প্রায় ১৮-২০ ঘণ্টারও বেশি সময়ও লাগে।”
একাধিক আশঙ্কায় অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও পিছিয়ে যান। তবে সেই ‘অসাধ্য’ সাধনের লক্ষ্যেই কয়েক বছর ধরে পাড়ার পুকুর ও কালনার ভাগীরথী নদীতে কঠোর অনুশীলন করে চলেছেন সায়নী। একের পর এক চ্যানেল জয় করলেও সায়নীর এক সময় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ। পেশায় প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক বাবা রাধেশ্যাম দাস মনের জোরে মেয়েকে একের পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছেন। মনের জোরে জিতে ফিরেছে সায়নী। কখনও বাড়ি বন্দক দিয়ে, আবার কখনও রাজ্য সরকারের সাহায্যে, কখনও কোনও সংস্থা অথবা কোনও ব্যক্তির সহযোগিতায় অনেক দূর এগোলেও আমেরিকায় এই চ্যানেলে নামতে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা তাঁর খরচ রয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই সায়নীর পরিবার এখন এই নিয়েই চিন্তিত।
ফলে স্পনশরশিপের দিকেও তাই তাঁরা তাকিয়ে রয়েছেন। সায়নী দাস বলেন, “সকালে প্রায় তিন ঘণ্টা, বিকেলে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা অনুশীলন করছি। করোনার কারণে লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এখন একটাই লক্ষ্য মলোকাই জয়।” রাধেশ্যাম দাস বলেন, “করোনা বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় গত বছরে মলোকাইয়ের জলে নামতে পারেনি সায়নী। ২০২২ এর মার্চ ও এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়েই ও নামতে চায় সায়নী।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.