Advertisement
Advertisement

‘সেরেনার মতো আমার বাচ্চাকেও ব্রেস্টফিড করাব’

মাতৃত্বকালীন অবসর কেমন কাটছে টেনিস-সুন্দরীর?

'Want to breastfeed my child', Sania on pregnancy
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:July 22, 2018 11:34 am
  • Updated:July 22, 2018 11:34 am  

স্টাফ রিপোর্টার: তিনি অন্তঃসত্ত্বা। সন্তানসম্ভবা। এটা অনেক দিনই প্রকাশ্য। টেনিস থেকে ‘মেটারনিটি লিভ’ চলছে তাঁর এখন। তা সত্ত্বেও তিনি সানিয়া মির্জা মানসিক ভাবে পুরোদস্তুর টেনিসে আছেন। জনপ্রিয় বিদেশি দৈনিকে শনিবার এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সর্বকালের সেরা মহিলা টেনিস তারকা বলেছেন, টেনিস-ই তাঁকে সব কিছু দিয়েছে। নাম, যশ… সব। এবং তিনি মানুষের মনে চিরকাল থাকতে চান, বিশ্বের এক নম্বর টেনিস প্লেয়ার হিসেবে। বিয়ে, মাতৃত্ব, টেনিস-বিহীন জীবন নিয়ে সানিয়া মির্জা এ দিন যা যা বললেন…

…ছোটবেলা থেকে খেলাধুলো করেই কাটিয়েছি এতগুলো বছর। তাই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বলতে গেলে আমি আশ্চর্যজনক ভাবেই বেশ সুস্থ আছি। শারীরিক ভাবে ভাল বোধ করছি। একজন মহিলা হিসেবে আমার কাছে এটা স্বপ্নের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা চলছে। আমার টেনিস প্লেয়ার সত্ত্বাকে বাইরে রেখেও বলা যায়, এটা জীবনের একটা নতুন শুরু। নতুন জার্নি। আমার প্রিয় চকোলেট খাওয়া একদম ছেড়ে দিয়েছি। ভালই হল। মা হওয়ার পরেও অভ্যেসটা থেকে যাবে। নইলে চকোলেট আমার বড্ড ওজন বাড়িয়ে দেয়। যেটা খেলোয়াড়জীবনের জন্য ভাল নয় মোটেও। তবে আসল হল মশলাদার, চটপটা খাবারদাবার খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে আমার এখন। অতিপ্রিয় ভেলপুরি যে কত দিন হল খাইনি! তারপর মাংস। রেড মিট খাওয়া একদম বন্ধ। এই অভ্যেসটাও মা হওয়ার পর কোর্টে ফিরে বদলাব না আর। ওজনটা আমায় কম রাখতেই হবে এরপর।

Advertisement
[অশোক চক্র ছাড়াই ভারতের জাতীয় পতাকার ছবি, বিতর্কে মহিলাদের হকি বিশ্বকাপ]

স্টেফি গ্রাফের পর সেরেনা উইলিয়ামস আমার বরাবরের প্রিয় টেনিস প্লেয়ার। এই অবস্থায় সেরেনার কথা আরও বেশ মনে পড়ে রোজ। বিশ্বের এক নম্বর প্লেয়ার ছিল যখন অন্তঃসত্ত্বা হয়, গত বছরের গোড়ায়। তার আগেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তা সত্ত্বেও মা হওয়ার পর এ বছর ফরাসি ওপেনে যখন প্রথম গ্র‌্যান্ড স্ল্যামে ফিরল বাছাইয়ের মর্যাদা পেল না। আমাদের মেয়ে প্লেয়ারদের কোনও ‘মেটারনিটি লিভ’ না থাকাটাই এর দুর্ভাগ্যজনক কারণ। যে নিয়মের এখনই বদল হওয়া দরকার। শুধু পেশাদার টেনিস ট্যুরেই নয়, সমস্ত খেলাতেই। আর টেনিসে? এখনই অন্তত কুড়ি জন মা চুটিয়ে পেশাদার সার্কিটে খেলছে। তাদের অন্তত সম্মান দেওয়ার জন্যই উচিত অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় র‌্যাঙ্কিং ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া। আমি যেমন ২০১৮-এ মা হব। ২০১৯-এ কোর্টে ফিরব। কিন্তু আমার লক্ষ্য ২০২০-র ওলিম্পিক। কারণ জানি, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় র‌্যাঙ্কিংয়ে এতটাই নেমে যাব যে, চট করে ভাল টুর্নামেন্টে সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া কঠিন। সেরেনারই তো উইম্বলডনের আগেও বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৮১। ফাইনাল খেলায় এক লাফে সেটা প্রথম তিরিশের ভেতর উঠে এসেছে। আমাকেও সেরকম কোনও পারফরম্যান্স করতে হবে ডাবলসে।

আমার জীবন ঠিক ট্র‌্যাডিশনাল মেয়েদের মতো নয়। আমি একজন পেশাদার প্লেয়ার। নিজের ইভেন্টে বিশ্বমানের প্লেয়ার। আমার ডাবলস-মিক্সড ডাবলসে ছ’টা গ্র‌্যান্ড স্ল্যাম আছে। উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন আমি। এক বছরেরও বেশি ডাবলসে বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস প্লেয়ার ছিলাম আমি। আবার অন্য দিকে, আমি বহু মেয়ে বা মায়ের মতো রান্নাবান্না করতে জানি না। একমাত্র চা আর ডিমসেদ্ধ ছাড়া কোনও খাবার বানাতে জানি না। কিন্তু আমারও সংসার করার, মা হওয়ার ইচ্ছে আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই ছিল। আজ সেটা বাস্তব। এটাই আমার জয়। (আমার স্বামী) শোয়েব (মালিক) এ ব্যাপারে আমাকে সমস্ত রকম সাহায্য করেছে। ও নিজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। নিজে পেশাদার প্লেয়ার বলে আমার ব্যাপারটা আরও ভাল বোঝে। আমরা দু’জনই যখন চেয়েছি, ঠিক তখনই আমাদের সন্তান পৃথিবীর প্রথম আলো দেখতে চলেছে। এ জন্য আমি গর্বিত।

[ভারত নিরাপদ নয়, চেন্নাইয়ের প্রতিযোগিতা থেকে নাম তুললেন সুইস স্কোয়াশ তারকা]

হ্যাঁ, আমি আমার বাচ্চাকে ‘ব্রেস্টফিড’ করাব। এটা আমি কোনও চাপের সামনে করব না। ‘ব্রেস্টফিডিং’ একটা সময় পর্যন্ত বাচ্চার স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলেই এটা করাব। তা ছাড়া এর সঙ্গে আমার খেলার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি চাই আমার নর্ম্যাল ডেলিভারি হোক। তবে এ ব্যাপারে শেষ কথা ডাক্তাররাই বলবেন। তাঁদের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। বেবি ছেলে হোক বা মেয়ে, তার নাগরিকত্ব নিয়ে আমার কোনও পছন্দের ব্যাপার নেই। বাবার পাকিস্তানি নাগরিকত্ব কিংবা মায়ের ভারতীয় নাগরিকত্ব যেটা বাচ্চার হবে তাতেই আমি খুশি। আমার বাচ্চা ভাল, বড় মানুষ হয়ে উঠুক এটাই চাইব…।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement