সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইংল্যান্ডের লর্ডস৷ ক্রিকেটের মক্কা৷ তবে ২০০২-এর ১৩ জুলাই থেকে বাঙালিরা এই স্টেডিয়ামকে মনে রাখে একটু অন্যরকমভাবে৷ লর্ডস বলতেই নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন বাঙালিরা৷ চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনালের দিনটা৷ যেদিন রানের পাহাড় তাড়া করে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ পকেটে পুরেছিল টিম ইন্ডিয়া৷ আর লর্ডসের বিখ্যাত ব্যালকনিতে জার্সি উড়িয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়৷ সেদিন যেন জার্সি নয়, বিদেশের মাটিতে দাদাগিরির ধ্বজা উড়িয়েছিলেন তিনি৷ ১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতির সরণিতে এতটুকুও ফিকে হয়নি দিনটা৷
ইংল্যান্ড তাঁকে অনেক কিছু দিয়েছে৷ ১৯৯৬ সালে লর্ডসেই ভারতীয় দলের হয়ে নিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন৷ ইংল্যান্ডের মাটিতেই ওয়ানডে-তে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮৩ রান করেছিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক৷ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে করা সেই রানই ছিল বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান৷ ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ার ও নর্দাম্পটনশায়ার কাউন্টি ক্লাবের হয়েও খেলেছেন৷ আর লর্ডসে জামা ওড়ানোর গল্প নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই৷ ২০০১-এ ভারত সফরে এসে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ ওয়াংখেড়েতে জার্সি খুলে জয় সেলিব্রেট করেছিলেন৷ ইংরেজ অল-রাউন্ডার সেই ঘটনা না ঘটালে হয়তো লর্ডসের ব্যালকনিতে ‘শার্টলেস’ দাদার দেখা মিলত না কোনওদিনই৷ বর্তমান আইপিএল চেয়ারম্যান রাজীব শুক্লাও সেদিন সৌরভের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, সৌরভ নাকি সেদিন শচীন তেণ্ডুলকর ও ভিভিএস লক্ষ্মণকেও জার্সি খুলে ওড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন৷ ফ্লিনটফের ‘ঔদ্ধত্ব’র জবাব দিতেই আনন্দের বর্হিপ্রকাশ ঘটেছিল জার্সি খুলে৷ শচীনরা অবশ্য সৌরভের প্রস্তাবে রাজি হননি৷ সেই ঘটনা তৎকালীন ভারত অধিনায়ককে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছিল ঠিকই৷ তবে এখন সেসব অতীত৷ এখন আগ্রাসী অধিনায়কের উদাহরণ হিসেবে সৌরভের জার্সি ওড়ানোর ঘটনা উল্লেখ করা হয়৷
বুকিরা অনেক সময় তাঁকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভেবেছে৷ কিন্তু জানত, দেশপ্রেমী সৌরভকে টাকার লোভ দেখিয়ে কেনা যাবে না৷ তাই সরাসরি প্রস্তাব দেওয়ার সাহস হয়নি কখনও৷ সিংহাসনে আসিন হতে হলে মহারাজকে অনেক যুদ্ধ জয় করতে হয়৷ তিনিও করেছিলেন৷ আর তাই হয়ে উঠতে পেরেছেন ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক৷
ইংল্যান্ড তাঁকে কখনও খালি হাতে ফেরায়নি৷ তাই ক্রিকেটের মক্কার প্রতি আলাদা ভালবাসা রয়েছে দাদার৷ সে দেশে একটি বাড়িও কিনেছেন তিনি৷ সময় সুযোগ পেলেই সেখানে চলে যান৷ কখনও একা আবার কখনও সপরিবারে৷ মহারাজের স্মৃতির ক্যানভাসে অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে ইংল্যান্ড৷ ভবিষ্যতেও হয়তো থাকবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.