সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স মাত্র ২৫। রাশিয়াতেই প্রথমবার দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ-এর মঞ্চে নামার স্বপ্ন ছিল দু’চোখে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের দিনের ঘটনা তাঁর বিশ্বকাপ ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছিল। বাঁ-কাঁধে গুরুতর চোট তাঁর। তবে স্পোর্টসম্যান স্পিরিটে এতটুকু ভাটা পড়েনি। স্পেনে চিকিৎসা করিয়ে রাশিয়া পৌঁছতে মরিয়া তিনি। আর ফুটবলের প্রতি তাঁর এই আবেগ, আত্মত্যাগই তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলছে গোটা বিশ্বে। পরিচিত হয়ে উঠেছেন মিশরীয় মেসি হিসেবে। কথা হচ্ছে মহম্মদ সালাহর। কার্যত একাই নিজের দেশ ইজিপ্টকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে পৌঁছে দিয়েছেন এই তরুণ স্ট্রাইকার। মাঠে তাঁর পারফরম্যান্সের ঝলক ইতিমধ্যেই ফুটবল মহলের নজর কেড়েছে। কিন্তু মাঠের বাইরের সালাহকে কি সবাই চেনেন? খ্যাতি আর গ্ল্যামারের আড়ালে থাকা রক্ত-মাংসের মানুষটির স্বভাব, আচরণ, মানবিক চেহারাটা হয়তো এখনও জেনে উঠতে পারেনি গোটা বিশ্ব। তাহলে পড়ুন এই প্রতিবেদন। শুধু ফুটবলার সালাহর নয়, মানুষ সালাহরও ভক্ত হয়ে উঠবেন।
১. ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ওয়াটফোর্ডের বিরুদ্ধে লিভারপুলের জার্সি গায়ে চারটি গোল করেছিলেন সালাহ। ম্যাচ শেষে ওয়াটফোর্ডের গোলকিপারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন মিশরীয় স্ট্রাইকার। যা সচরাচর কোনও ফুটবলারকে করতে দেখা যায় না। সেই ম্যাচে ৫-০ গোলে জিতেছিল লিভারপুল।
২. ভক্তদের প্রতি তাঁর ভালবাসার সবসময় সম্মান জানান সালাহ। কোনও অনুরাগীকে খালি হাতে ফেরান না তিনি। একবার এক খুদে ভক্ত গ্যালারিতে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিল। লেখা ছিল, ‘মো সালাহ, আমি তোমার জার্সিটা পেতে পারি?’ বিষয়টি চোখ এড়ায়নি সালাহর। এগিয়ে গিয়ে নিজে হাতে তাকে জার্সি গিয়ে এসেছিলেন। ফ্যানরা তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে চাইলে তিনি কখনওই বিরক্ত হন না।
৩. তাঁর মধ্যে আরও একটি স্বভাব দেখা যায় তা বেশ বিরল। নিজের পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে মাঠে নামলে গোল করেও সেলিব্রেট করেন না সালাহ। রোমা বা চেলসির বিরুদ্ধে গোল করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন না তিনি। পুরনো দলের প্রতি ভালবাসা ও সম্মান দেখাতেই হয়তো এমনটা করে থাকেন তিনি।
৪. একবার বাড়ির জানলা ভেঙে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল এক চোর। কিন্তু আর পাঁচজনের মতো তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাননি। উলটে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে তাঁকে নিজে থেকেই আর্থিক সাহায্য করেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন।
৫. ২৮ বছরে প্রথমবার বিশ্বকাপের মূলপর্বে ইজিপ্টকে পৌঁছে দিয়েছেন সালাহ। তারপরই এক মিশরীয় ব্যবসায়ী তাঁকে একটি বাড়ি উপহার দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সালাহ তা নিতে রাজি হননি। উলটে বলেছিলেন, তাঁকে বাড়ি না দিয়ে তাঁর গ্রামের উন্নতিতে আর্থিক সাহায্য করলে তিনি বেশি খুশি হবেন।
৬. তাঁর মানবিক রূপের উদাহরণ আরও রয়েছে। নিজের গ্রামে স্কুল ও হাসপাতাল তৈরির জন্য একাধিকবার অর্থ সাহায্য করেছেন সালাহ। এছাড়া হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসার সরঞ্জাম কিনতে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা অর্থ দিয়েছিলেন এই তারকা। যাঁকে নিয়ে এবার টানাটানি করছে রিয়াল মাদ্রিদও। শোনা যাচ্ছে, আসন্ন ট্রান্সফার উইন্ডোতে সালাহকে লোভনীয় অফার দিতে পারে রিয়াল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.