অভিষেক চৌধুরী, কালনা: প্রায় ৩৫ কিলোমিটার জলপথ। জলের তীব্র স্রোত। সপ্ত চ্যানেলের মধ্যে সবচেয়ে শীতলতম চ্যানেল। প্রতিপদে জেলিফিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর বাধা। সাঁতরে পার করতে সময় লাগে ১৩ ঘণ্টা ২২ মিনিট। পরিস্থিতি এমনও দাঁড়ায় তিন ঘণ্টায় মাত্র ১ কিলোমিটার পথই মাত্র এগনো গিয়েছে। কখনও কখনও মনে হয়েছে, আর হল না। তবু দাঁতে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকা। আর তারই ফলশ্রুতি, এশিয়ার প্রথম সাঁতারু হিসাবে পঞ্চম চ্যানেল জয়। ইতিহাস গড়লেন বঙ্গতনয়া সায়নী দাস। সঙ্গে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে নর্থ চ্যানেল জয়ের রেকর্ডও গড়লেন তিনি।
উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মাঝামাঝি অবস্থিত শীতলতম চ্যানেল নর্থ চ্যানেল। চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই নিউজিল্যান্ডের কুক স্ট্রেইট চ্যানেল জয় করার পরই এই চ্যানেল জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপান সায়নী। ব্রিটেনের সময় অনুযায়ী ৩০ তারিখ সকাল ৭:৪৫ মিনিটে জলে নামেন তিনি। ভারতীয় সময় শনিবার ভোর ৩টে নাগাদ নর্থ চ্যানেল জয় করেন কালনার মেয়ে। এই জয়ের পরই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছে নর্থ চ্যানেল সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন।
কতটা কঠিন ছিল নর্থ চ্যানেল জয়? সায়নীর বাবা সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, ”এই চ্যানেল জয়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে ওকে। আগের চারটি চ্যানেলের ক্ষেত্রে এই সমস্যায় পড়তে হয়নি। এমন সময়ও আসে যখন ওকে এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ ভেসে থাকতে হয়েছে। এখন ও খুব ক্লান্ত। জেলিফিশ খুব সমস্যা তৈরি করছিল। এক সময় মনে হচ্ছিল হাল ছেড়ে দেবে। তবে আগের অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগিয়েই এই জয় এসেছে।’ এদিকে এই জয়ের পরই দানা বাঁধতে শুরু করেছে নতুন স্বপ্নও। সায়নীর সামনে যে বাকি আর মাত্র দুটি চ্যানেল। সুগারু ও জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করতে পারলেই তার মুকুটে উঠবে ‘ওশেন সেভেন’ মুকুট। আপাতত সেই স্বপ্নেই বুদ বঙ্গতনয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.