রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট: ১৬২/৪ (রাহানে- ৫৬, মনোজ-৫৮)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১৪২/৯ (পার্থিব-৫২)
২০ রানে জয়ী রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হচ্ছেটা কী? মাত্র ১ রানে রোহিত শর্মা প্যাভিলিয়নে ফেরার পরই যখন অম্বতি রাইডু (০) আউট হলেন, গ্যালারিতে বসে থাকা মুম্বই সমর্থকদের মুখের প্রতিক্রিয়াটা তখন ঠিক এমনটাই ছিল৷ আবার তার খানিকক্ষণ আগেই উনাদকাট ক্যাচ মিস করায় লাইফ লাইন পেয়েছেন পার্থিব প্যাটেল৷ এমন অবস্থায় মুম্বই যখন হঠাৎ করে চাপে পড়ে গিয়েছে, উল্টো শিবিরে তখন আত্মবিশ্বাসের পারদ চড়ছে চরচর করে৷ সেই আত্মবিশ্বাসই মহারাষ্ট্র ডার্বিকে জমজমাট করে তুলল৷ যাতে শেষ হাসি হাসল স্টিভ স্মিথ অ্যান্ড কোম্পানি৷
পুণের ইনিংস চলাকালীন সঞ্জয় মঞ্জরেকরের সঙ্গে কথা বলার সময় মুম্বই কোচ মাহেলা জয়বর্ধনে বলছিলেন, “পুণেকে দেড়শো রানের মধ্যে আটকে ফেলতে পারলেই আমাদের সুবিধে৷ তবে ওরা যে রানই তুলুক, নিজেদের মাঠে সেই রান তাড়া করে জেতাটাই আমাদের লক্ষ্য৷” ১৮ ওভার পর্যন্ত মনে হয়েছিল তেমনটাই হতে চলেছে৷ দেড়শো টপকাতে পারবে না পুণে৷ তাদের স্কোরবোর্ডে তখন ৩ উইকেটে ১২১ রান৷ কিন্তু তারপরই ঘটল অঘটন৷ পরের ওভারে ২৬ রান দিয়ে বসলেন ম্যাকলেনাঘান৷ তীরে এসে তরী ডুবিয়ে দেওয়া যাকে বলে আর কি৷ আর তাতেই স্বস্তিজনক জায়গায় পৌঁছে গেল সঞ্জীব গোয়েঙ্কার দল৷ ওই একটা ওভারই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট৷ পুণের ভিতটা যদিও বেশ পক্ত করে দিয়ে গিয়েছিলেন অজিঙ্ক রাহানে৷ ৫৬ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে আউট হন তিনি৷ বাকি কাজটা করলেন মনোজ তিওয়ারি এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি৷ এই ম্যাচে জিততে পারলে আর দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না৷ সে কথা ভেবেই যেন ব্যাট হাতে নেমেছিলেন বাংলার ক্রিকেটার৷ ৪টি চার ও ২টি ছয় হাঁকিয়ে ৫৮ করে শেষ বল পর্যন্ত ক্রিজে থেকে রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন মনোজ৷ আর ধোনি? দেশের জার্সি গায়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঠিক যেভাবে জ্বলে ওঠেন, এদিনও তেমনই দায়িত্বের সঙ্গে ব্যাট করে ৪০ রানে অপরাজিত থাকলেন৷ কর্ণ শর্মা, মালিঙ্গা ও ম্যাকলেনাঘান একটি করে উইকেট তুলে নেন৷
তবে মঙ্গলবার শুধু ব্যাট হাতেই নয়, নেতৃত্বেও নজর কাড়লেন মাহি৷ তিনি পুণে দলের অধিনায়ক নন ঠিকই, কিন্তু স্মিথ যে তাঁর পরামর্শ নিয়েই অধিনায়কত্ব করেন, সে ছবি তো ক্যামেরায় আগেও ধরা পড়েছে৷ ফিল্ডিং সাজানো থেকে বোলারকে বল দেওয়া, সবেতেই ক্যাপ্টেন কুলের জাদুকাঠির ছোঁয়া ছিল এদিনও৷ আর তাতেই যেন আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছিল শেষবারের মতো আইপিএল-এ খেলার সুযোগ পাওয়া দলটি৷ স্মিথ-ধোনির মিলিত মগজাস্ত্রেই চাপে পড়ে গেল হোম ফেভরিটদের ব্যাটিং অর্ডার৷ সিমন্স (৫) থেকে রোহিত, পোলার্ড (৭) থেকে হার্দিক পাণ্ডিয়া (১৪), কাউকেই উইকেটে জাঁকিয়ে বসতে দিলেন না সুন্দর, ফার্গুসনরা৷ পার্থিব প্যাটেলের একার লড়াই শেষমেশ কাজে এল না৷ তিনটি করে উইকেট ঝুলিতে ভরেন সুন্দর ও শারদুল ঠাকুর৷
১০টি ম্যাচ জিতে লিগ তালিকার শীর্ষে থেকে প্লে অফে পৌঁছনো দলকে যে এমন ধাক্কা খেতে হবে, তা অনেকের কাছেই প্রত্যাশিত ছিল না৷ তার উপর পুণে দলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বেন স্টোকস না থাকায় বিশেষজ্ঞরা মুম্বইকেই এগিয়ে রেখেছিলেন৷ কিন্তু মহারাষ্ট্র ডার্বি জিতে সরাসরি ফাইনালের টিকিট পাকা করে ফেললেন ধোনিরাই৷ পুণে বয়স মাত্র দু’বছর৷ আর দ্বিতীয়বারেই ফাইনালে পৌঁছে গেল তারা৷ স্বাভাবিকভাবেই খুশি মালিক থেকে ক্রিকেটার, সকলেই৷ রোহিতদের ফের লড়তে হবে হায়দরাবাদ বনাম কলকাতা ম্যাচের জয়ীদের বিরুদ্ধে৷
ছবি সৌজন্যে BCCI
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.