সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ম যাই হোক, হিজাব পরেই খেলতে হবে দাবা। এমনই আজব বিধান ইরানে। আর তার প্রতিবাদ জানাতে এশিয়ান ন্যাশনাল কাপ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নাম তুলে নিলেন ভারতীয় দাবাড়ু সৌম্যা স্বামীনাথন।
জুলাইয়ের ২৬ তারিখ ইরানে শুরু এবারের ন্যাশনাল কাপ। চলবে ৪ আগস্ট পর্যন্ত। আর সেই দেশের নিয়ম অনুযায়ী দাবার মতো ইন্ডোর গেমেও মহিলাদের মাথা ঢেকে বসতে হবে। যে বিষয়টি কোনওভাবেই সমর্থন করতে পারছেন না ভারতীয় মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার। তাঁর মন্তব্য, এভাবে একটি বিশেষ ধর্মের রীতিকে অনিচ্ছুক কারও উপর চাপিয়ে দেওয়ার মানে তাঁর মানবাধিকারে হস্তক্ষেপ করা। সেই কারণেই তিনি এই চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রাক্তন ওয়ার্ল্ড জুনিয়র (গার্লস) চ্যাম্পিয়ন ফেসবুকে লিখেছেন, “এশিয়ান ন্যাশনাল কাপ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নিজের নাম তুলে নেওয়ায় রাজ্যের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু আমি চাই না কেউ জোর করে আমায় বোরখা পরতে বাধ্য করুক। ইরানের এই আইন আমার স্বাধীনতা, চিন্তাধারা এবং ধর্মে হস্তক্ষেপ করছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে আমি ইরানের প্রতিযোগিতায় অংশ না নিয়ে নিজের অধিকারকেই সুনিশ্চিত করার পথে হাঁটব।”
গোটা ঘটনার সমালোচনা করতেও পিছপা হননি ভারতের পাঁচ নম্বর দাবাড়ু। বলছেন, “খেলোয়াড়দের মানবাধিকার, পছন্দ-অপছন্দকে এখানে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। সেটা দেখে আমি বেশ হতাশ। আয়োজক হিসেবে তারা আশা করতেই পারে, যে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী দলের জার্সি গায়ে প্রতিযোগিতায় বসবে। কিন্তু খেলার মধ্যে এভাবে ধর্মীয় পোশাককে বাধ্যতামূলক করা কখনওই উচিত নয়। কিছু বিষয় কখনও সমর্থনযোগ্য হয় না।” তাই অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গেই নিজের নাম তুলে নিয়েছেন বলে জানান সৌম্যা। বিদেশের মাটিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা প্রত্যেক খেলোয়াড়ের কাছেই অত্যন্ত গর্বের। তাই এমন সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া করতে হচ্ছে বলে হতাশ সৌম্যা।
তবে শুধু সৌম্যাই নন, এর আগে একই কারণে ২০১৬ সালে এশিয়ান এয়ারগান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নাম তুলে নিয়েছিলেন ভারতীয় শুটার হিনা সিধু। সেবারও আয়োজক দেশ ছিল সেই ইরান। এবার মানবাধিকার রক্ষায় অনড় রইলেন সৌম্যা। কিন্তু এতেও কি ইরানের আইনে পরিবর্তন আসবে? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.