ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: প্যারিস অলিম্পিকের সবচেয়ে আলোচিত এবং জনপ্রিয় বিষয় কী? ভোটাভুটি নিষ্প্রয়োজন। এর উত্তর যে তুরস্কের শুটার ইউসুফ ডিকেচের ‘শুটিং স্টান্স’, তা নিয়ে দ্বিমত নেই বললেই চলে।
ডান হাতে আলগোছে ধরা স্পোর্টস পিস্তল। বাঁ হাত পকেটে ঢোকানো। কাঁচাপাকা অবিন্যস্ত চুল। সাদামাটা চেহারা, নেই কোনও বিশেষ শুটিং গিয়ার। সঙ্গী শুধুমাত্র চশমা এবং ছোট্ট ইয়ারবাড। ৫১ বছরের ইউসুফের এই ছবি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যোগ্যতা অর্জন পর্বে সর্বোচ্চ পয়েন্টের রেকর্ড গড়ে মিক্সড টিম ইভেন্টের ফাইনালে উঠে প্যারিসে রুপো পেয়েছিলেন তিনি, সেভাল ইলায়েড তারহানকে সঙ্গী করে। তবে ডিকেচের পদক জয়ের কীর্তির থেকেও বেশি প্রচার পায় তাঁর ‘শুটিং স্টান্স’।
সেই ভাইরাল শুটার আপাতত এসেছেন দিল্লিতে, শুটিং বিশ্বকাপ ফাইনালে যোগ দিতে। সেখানেই নিজের ‘শুটিং স্টান্স’ থেকে হঠাৎ পাওয়া পরিচিতি নিয়ে অকপট ডিকেচ। এই জনপ্রিয়তাকে ডিকেচ কীভাবে দেখছেন তিনি? জবাব এল, “এই জায়গায় আসতে পেরে আমি খুব খুশি। কারণ এমনিতে ফুটবল বা বাস্কেটবলের মতো শুটিং বিশেষ জনপ্রিয় নয়। তবে আমার জন্য যদি শুটিংয়ের পরিচিতি একটুও বৃদ্ধি পায়, সেটা অবশ্যই আমার কাছে আনন্দের বিষয়। সঙ্গে আরও একটা বিষয় বুঝতে পেরেছি। কখনও কখনও রুপোর গুরুত্ব সোনার থেকে বেশি হয়।”
অবশ্য জবাবটা সরাসরি আসেনি। তুর্কি ছাড়া অন্য কোনও ভাষা জানেন না ডিকেচ, ইংরেজিও না। সাংবাদিকদের প্রশ্ন আর তাঁর জবাব অনুবাদের দায়িত্বটা নিয়েছিলেন তারহান, যিনি মিক্সড টিম ইভেন্টে যিনি ডিকেচের ‘পার্টনার’। প্রশ্ন-উত্তর পর্বের একটা বড় সময় অবশ্য তারহানের ভূমিকাটা ছিল শুধু অনুবাদকেরই। সতীর্থের মাধ্যমে নিজের ‘শুটিং স্টান্স’ প্রসঙ্গে ডিকেচ বললেন, “আমার শুট করার টেকনিক কোনও কোচ শেখাননি, একান্তই আমার বিষয়। প্রথম থেকেই আমি দুই চোখ খোলা রেখে শুট করি। কোনও এক চোখ বন্ধ রেখে শুট করার চেষ্টাই করিনি তারপর আর। এখন তো এভাবেই অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।” এত সামান্য আয়োজনে মনসংযোগে বিঘ্ন ঘটে না? তারাহারের মাধ্যমে ডিকেচের জবাব, “এখন আমি শুধু নিজের লক্ষ্যে ফোকাস করি। একবার নিজের শুটিং পজিশনে গিয়ে দাঁড়ানোর পর কে কোথায় কী বলছে, কোথায় কী শব্দ হচ্ছে সেসব আমার উপর প্রভাব ফেলে না। ওখানে তখন শুধু আমি আর আমার লক্ষ্য। তবে অলিম্পিকের পর সবাই শুধু আমার ভঙ্গি নিয়েই কথা বলছে। সেটা বেশ একঘেয়ে বিষয়।”
অলিম্পিকের মঞ্চে পদক জেতার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বাড়তি পাওনা বিশ্বজোড়া জনপ্রিয়তা। তবে তাতে একটুও বদল হয়নি ডিকেচের জীবনে। বলছিলেন, “মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমার জীবন বদলে গিয়েছে। তবে আমি সেই মানুষটাই আছি। আমার খাদ্যাভ্যাস, পোশাকের কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমার জীবন সেভাবেই চলছে।” যার সঙ্গে তারহান জুড়লেন, “ওঁর উপর এই জনপ্রিয়তা বিশেষ প্রভাব ফেলে না। কিন্তু ওঁর মেয়ে গর্ব করে। ওঁর মেয়ে এখন সবাইকে বলে যে, ইউসুফ ডিকেচ আমার বাবা।” ফের ভারতে এসে খুশি ডিকেচ, এদেশের মানুষের আতিথেয়তা বেশ পছন্দ তাঁর। এবার সেই দেশ থেকে পদক জিতে ফেরাই লক্ষ্য ‘ভাইরাল’ শুটারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.