ভিনেশ ফোগাট।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অলিম্পিকে (Paris Olympics 2024) পদক জিততে পারেননি তিনি। কিন্তু জিতে নিয়েছেন কোটি-কোটি ভারতবাসীর হৃদয়। পদক না জিতেও ‘চ্যাম্পিয়ন’ ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat)। কিন্তু জার্নিটা তো সহজ ছিল না। কত লড়াই, কত উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। অলিম্পিকের পর কুস্তি থেকে অবসরও নিয়েছেন ভিনেশ। এবার সোশাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিলেন নিজের লড়াকু জীবনের গল্প।
যে গল্পের শুরু তাঁর ছোটবেলায়। যখন কুস্তির রিং কী তিনি জানতেন না। অলিম্পিক কী বুঝতেন না। তখন তাঁর চুল বড়ো। হাতে মোবাইল ফোন। আর পাঁচজন মেয়ের সঙ্গে কোনও তফাৎ নেই। তাঁর বাবা ছিল বাসচালক। তিনি বিশ্বাস করতেন, তাঁর মেয়ে একদিন আকাশপথে পাড়ি দেবেন। সেই গল্প বলতে বলতেই ভিনেশ লিখছেন, “আমি তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে পারব, এই বিশ্বাস বাবার ছিল। আমার মনে হয়, তিন সন্তানের মধ্যে আমি ছিলাম তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। কারণ আমি ছিলাম সবচেয়ে ছোট। যখন উনি আমাকে এই গল্পগুলো বলতেন, তখন আমি হাসতাম। সেগুলোর কিছুই বুঝতাম না।”
তার পরই এসেছে ভিনেশের মায়ের আত্মত্যাগের গল্প। ভারতীয় কুস্তিগির লিখেছেন, “আমার মা চাইলে তাঁর জীবনের কষ্ট নিয়ে গল্প লিখতে পারতেন। তাঁর একমাত্র স্বপ্ন ছিল, মেয়েরা যাতে তাঁর থেকে ভালো জীবন পায়। মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াক। কিন্তু যখন বাবা চলে গেল, তখন আমার কাছে বাবার ওই স্বপ্নগুলো ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আমি হয়তো কিছুই বুঝতাম না। কিন্তু স্বপ্নগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছিলাম। তার পর মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে লম্বা চুল, মোবাইল ফোনের স্বপ্ন দূরে চলে গেল। কঠোর বাস্তবের মুখোমুখি হয়ে জীবনযুদ্ধ শুরু হল।”
সেটাই শক্তি দিয়েছে তাঁকে। ভিনেশের মা চিরকাল মনে করতেন ঈশ্বর সব সময় তাঁদের সঙ্গে আছেন। যেরকম তাঁর স্বামী সোমবীরও মনে করেন, ভালো মানুষদের সঙ্গে কখনও খারাপ কিছু হতে পারে না। ভিনেশ লিখছেন, “জীবনযুদ্ধে অনেক কিছু শিখেছি। মায়ের পরিশ্রম, লড়াকু মনোভাব আমাকে আজকের ভিনেশ গড়েছে। তিনি শিখিয়েছেন, কীভাবে নিজেরটা ছিনিয়ে নিতে হয়।, যখনই সাহসের কথা ওঠে, তখনই আমার তাঁর কথা মনে পড়ে। সেটাই প্রতিটা লড়াইয়ে আমাকে সাহায্য করে।”
— Vinesh Phogat (@Phogat_Vinesh) August 16, 2024
সেই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে গত দেড়-দুবছরের লড়াইয়ের কথা। যেটা শুধুমাত্র ম্যাটে ছিল না, ছিল দিল্লির রাজপথেও। কিন্তু সেই সময়ও বহু কুস্তিগিরকে আন্দোলনে পাশে পেয়েছিলেন। তাঁরাই শক্তি জুগিয়েছেন লড়াইয়ে। এর সঙ্গে তিনি ধন্যবাদ জানান অলিম্পিকে তাঁর সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার দীনশ পাডিওয়ালা, অশ্বিনী জীবন পাটিলদের। তবে চমক রয়েছে এই পোস্টে। অবসর ভেঙে ফিরে আসার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন তিনি। তাহলে কি ফের ভিনেশকে কুস্তির ম্যাটে দেখা যাবে? ‘চ্যাম্পিয়ন’কে নিয়ে আশায় দেশবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.