ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ। তারপর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে জোর করে গর্ভপাত। এমনই মারাত্মক অভিযোগ উঠল টেবিল টেনিসে জাতীয় সেরা বাংলার সৌম্যজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে। বুধবার বারাসতের মহিলা থানায় সৌম্যজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বছর কুড়ির ওই তরুণী। বলা হয়েছে, মুখ বন্ধ রাখতে রাজ্যের বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিও হুমকি দিয়েছিলেন সৌম্যজিতের হয়ে। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে দেশের কনিষ্ঠতম সদস্য ছিলেন সৌম্যজিৎ ঘোষ। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই জাতীয় সেরার খেতাব পেয়েছিলেন তিনি। ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ মেডেলও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সৌম্যজিতের বিরুদ্ধে ওঠা এহেন অভিযোগে হতবাক পাড়া প্রতিবেশীরাও। শিলিগুড়িতে তাঁদের আদি বাড়ি। দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনে ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতেন সৌম্যজিৎ।
নির্যাতিতা তরুণী জানিয়েছেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেই তাঁর আলাপ হয় সৌম্যজিতের সঙ্গে। সেখান থেকে বাড়ে ঘনিষ্ঠতা। স্কুল পর্যায়ে টেবিল টেনিস খেলতেন ওই তরুণীও। খেলাধুলায় সৌম্যজিতের ‘প্রশিক্ষণ’ চান তিনি। অভিযোগ, প্রশিক্ষণ দেওয়ার অছিলায় সৌম্যজিৎ তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় ডেকে পাঠাতেন। তরুণীর কথায়, “২০১৪ সালের ঘটনা। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আড্ডা দেওয়া থেকেই ঘনিষ্ঠতার শুরু। একাধিকবার ওঁর বাঘাযতীনের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানেই শারীরিক সম্পর্ক হয়।”
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ তরুণী জানতে পারেন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন তিনি। সৌম্যজিৎ একদিন তাঁদের বারাসতের বাড়িতে আসেন। তরুণীর অভিযোগ, “বাড়িতে এসে ও বলে দিন দুয়েক আমায় নিয়ে বাঘাযতীনে থাকবে। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে দেখি পুরো কথাটাই মিথ্যে।” অভিযোগ, সেখানেই সৌম্যজিতের পরিবারের লোকজন জোর করে তাঁর গর্ভপাত করায়। অভিযোগ উঠেছে সৌম্যজিতের পিসেমশাইয়ের বিরুদ্ধেও। তরুণী জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী পিসেমশাই। আপাতত সৌম্যজিৎ লন্ডনে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা মেনে নিয়েছেন সৌম্যজিৎ। তবে ধর্ষণের অভিযোগকে মানতে নারাজ তিনি। তাঁকে ফাঁসানোর ছক করা হয়েছে। পালটা অভিযোগ এনেছেন ওই অলিম্পিয়ান। তাছাড়া তাঁদের সম্পর্কের কথা দুই বাড়ির তরফেই জানে। তারপরেও কেন ওই তরুণী এমন ঘটনা ঘটালেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না সৌম্যজিৎ। যদিও নির্যাতিতার দাবি, মিথ্যে বলছেন সৌম্যজিৎ। তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফের অন্য একজনের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন সৌম্যজিৎ। সেই মহিলার ছবি তাঁর কাছে আছে। প্রয়োজন পড়লে যাবতীয় তথ্য তিনি প্রকাশ করতে প্রস্তুত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.