সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি কাঁদছেন। তোয়ালেতে মুখ ঢেকে চেয়ারে বসে আছেন। দুঃখ বা লজ্জায় নয়, আনন্দে-আবেগে। ইনি-ফ্রান্সিস তিয়াফো। কিছুক্ষণ আগে যিনি হারিয়ে দিয়েছেন কিংবদন্তি রাফায়েল নাদালকে (Rafael Nadal)। যে ইন্দ্রপতনের কাহিনি লেখার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি চব্বিশ বছরের মার্কিনি যুবক ফ্রান্সিস।
ফ্রান্সিস তিয়াফো যে এই প্রথম ইউএস ওপেনের (US Open) কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন, তা নয়। তিন বছর আগেও শেষ আটে উঠেছিলেন। তাহলে এবার কাঁদলেন বা তোয়ালেতে মুখ ঢেকে বসে থাকলেন কেন? আসলে নাদালকে হারিয়েছেন যে! টেনিস কিংবদন্তিকে ৬-৪, ৪-৬, ৬-৪ ও ৬-৩ সেটে হারানোর পর ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলেন ফ্রান্সিস। পুরো খেলায় ১৮টা এস ও ৪৯টা উইনার্স মেরেছেন যিনি। এবং যে ফ্রান্সিস টেনিস জীবনে একটা সেটও নাদালের বিপক্ষে কখনও জেতেননি, সেই তিনি স্প্যানিশ তারকাকে হারিয়ে দেওয়ায় রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায় চতুর্দিকে।
খেলা শেষেও আবেগে বারবার আক্রান্ত হয়েছেন ফ্রান্সিস। ম্যাচ শেষে বলে ফেলেছেন, ‘‘কী বলব, কী বলা উচিত, সত্যি আমার জানা নেই। নিজেকে অসম্ভব সুখী লাগছে। দারুণ আনন্দ হচ্ছে ভেতরে ভেতরে। আমি তো আবেগ চেপে না রাখতে পেরে কেঁদেই ফেলেছিলাম। আসলে নাদালকে হারিয়েছি, আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। নাদাল সর্বকালের সেরাদের অন্যতম। চ্যাম্পিয়ন প্লেয়ার। আর সেই নাদালকে কি না আমি হারিয়েছি! এটা ঘটনা যে, দারুণ খেলেছি আমি। কারণ সেটা না হলে নাদালকে হারানো যেত না। কিন্তু তার পরেও কিছু বিশ্বাস হচ্ছে না আমার।’’
নাদাল এই মরশুমে চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে দু’টোয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে এবং ফরাসি ওপেনে। উইম্বলডনে সেমিফাইনালে উঠলেও শেষে চোট পেয়ে সরে দাঁড়াতে হয়। অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, নোভাক জকোভিচ না থাকায় নাদালের ইউএস ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না রাফা। কেন? নাদালের মনে হচ্ছে, ফ্রান্সিসের সঙ্গে তাঁর বয়সের তফাত কোথাও গিয়ে একটা ফ্যাক্টর হয়ে গেল। বলেছেন, “টেনিসে আপনাকে জিততে হলে খুব দ্রুত নড়াচড়া করতে হবে। প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি জায়গা দেওয়া চলবে না। তরুণ বয়সে সেটা সম্ভব। কিন্তু আমার আর এখন সেই বয়স নেই। তাই ফ্রান্সিসের সঙ্গে লড়ে পেরে উঠিনি। মানতেই হবে, ফ্রান্সিস আমার চেয়ে ভাল খেলেছে।’’
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে জেতার পর মাটিতে র্যাকেট ছুঁড়ে মারেন ফ্রান্সিস। অঘটন ঘটানোর অভিব্যক্তি তখন তাঁর চোখেমুখে। অন্যদিকে নাদাল ছিলেন ভাবলেশহীন। এবার ইউএস ওপেনের শুরু থেকেই কেমন ছন্দহীন দেখাচ্ছিল নাদালকে। সেটা বোধগম্যও। স্ত্রী দেশে অসুস্থ। তার উপর চোট তো রয়েইছে। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিলেন স্প্যানিশ তারকা। হারার পর নাদাল স্পষ্ট করে বলতে পারেননি, কবে কোর্টে ফিরতে পারবেন। “জানি না কবে ফিরব (কোর্টে)। কিছু কিছু বিষয় ঠিক করতে হবে। মানসিকভাবে নিজেকে আগে প্রস্তুত করার প্রয়োজন আছে। যখন মন বলবে প্রতিযোগিতায় নামার মতো জায়গায় চলে এসেছি তখন ফেরা যাবে,” বলেন নাদাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.