সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খেলার দুনিয়ায় স্পোর্টস ম্যান স্পিরিটের নানা দৃষ্টান্ত রয়েছে। মাঠের লড়াইয়ে হার মানলেও খেলোয়াড়দের আচরণই দিনের শেষে মন জিতে নেয়। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন ভারতের খুদে গ্র্যান্ডমাস্টার আর প্রজ্ঞনা নান্ধা। যে তারকা ফাইনালের মহাযুদ্ধে পরাস্ত হয়েও ঘণ্টাখানেক পরই ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষার হলে গিয়ে বসেছে। অধ্যাবসায় কাকে বলে এই বয়সে যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ১৬ বছরের দাবাড়ু।
শুক্রবার ছিল চেসবল মাস্টার্সের ফাইনাল। প্রথম ভারতীয় হিসেবে মেল্টওয়াটার চ্যাম্পিয়ন্স চেস ট্যুর চেসবল মাস্টার্স টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছায় প্রজ্ঞনা নান্ধা (Praggnanandhaa)। এই টুর্নামেন্টেই বিশ্বের এক নম্বর কার্লসেনকে হারানোর নজির গড়েছিল সে। কিন্তু অনলাইনে ফাইনালের লড়াইয়ে জয় অধরাই থেকে যায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বিশ্বের দু’নম্বর ডিং লিরেনের কাছে টাই ব্রেকারে পরাস্ত হয় ১৬ বছরের বিস্ময় কিশোর। আর এই কঠিন লড়াইয়ের কয়েক ঘণ্টা পরই একাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় বসে পড়ে প্রজ্ঞনা নান্ধা।
শুক্রবার রাত ২টো ২০ মিনিট নাগাদ ফাইনাল ম্যাচ শেষ হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টা ঘুমোতে না ঘুমোতেই সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে স্কুলে পৌঁছে যায় চেন্নাইয়ের গ্র্যান্ডমাস্টার। তার কথায়, “গত কয়েকটা দিন বড্ড ধকল গিয়েছে। প্রথমবার এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়লাম। যেখানে টুর্নামেন্ট শেষ করার কয়েক ঘণ্টা পরই আবার পরীক্ষায় বসতে হল।” সে জানায়, সকালে ঘুম যদি না ভাঙে, এই ভয়ে রাতে ভালভাবে ঘুমও হয়নি তার। শিষ্যের এমন একাগ্রতা আর আত্মত্যাগের প্রশংসা না করে পারেননি প্রজ্ঞনা নান্ধার কোচ আর বি রমেশ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মাত্র ১০ বছর ১০ মাস ১৯ দিন বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার হয়েছিল চেন্নাইয়ের এই কিশোর। মাত্র ১২ বছর বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে চমকে দিয়েছিল সে। চার বছর বাদে ফের চমক দেয়। তৃতীয় ভারতীয় হিসাবে কার্লসেনকে হারানোর কৃতিত্ব অর্জন করে। সেই লড়াইয়ের চারমাস পর ফের কার্লসেন পরাস্ত হয় খুদের চালে। এবার টুর্নামেন্ট শেষ করেই পড়াশোনায় মন দিল ‘জায়ান্ট কিলার’ প্রজ্ঞনা নান্ধা। তার যত প্রশংসা করা যায়, যেন কমই হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.