ফাইল ছবি।
বোরিয়া মজুমদার: ভিনেশ ফোগাট যদি বিপর্যয় হন, তা হলে অন্তিম পাঙ্ঘালের পারফরম্যান্স খচখচানি তো নিশ্চিত। ড্র ঘোষণার পর দেশের ক্রীড়ামহলের অনেকেই ভেবেছিল যে, পদক আসবে অন্তিমের হাত ধরে। সে সব কিছুই হল না। তিনি দাঁড়াতেই পারলেন না। হারলেন ০-১০। যাঁর কাছে হারলেন, তিনি আবার হেরে গেলেন পরের রাউন্ডে। এটা প্রমাণ করে যে, অন্তিম নিজের ফর্মের ধারেকাছে ছিলেন না।
খোঁজ নিয়ে জানলাম, প্রচুর কাঠখড় পুড়িয়ে নিজের ওজন নির্ধারিত সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে পেরেছিলেন অন্তিম। ভিনেশের মতো ওজন-বিভ্রাটে তাঁকে পড়তে হয়নি। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে টানা দু’দিন না খেয়ে ছিলেন অন্তিম! যার ফলে লড়ার সময় এনার্জি অবশিষ্ট ছিল না তাঁর মধ্যে। আটচল্লিশ ঘণ্টা ধরে অভুক্ত (জলও খাননি) থাকলে কারও এনার্জিই আর অবশিষ্ট থাকবে না। অথচ কুস্তি ওজন সামলানোর খেলা। নির্ধারিত সীমার মধ্যে ওজনকে রাখার খেলা।
ভিনেশ ও অন্তিম–দু’জনের ক্ষেত্রেই যার দু’ভাবে ভরাডুবি ঘটেছে। অথচ দু’জনেই সম্ভাব্য পদক-প্রার্থী ছিলেন। না, চক্রান্তের গন্ধ খুঁজে এর মধ্যে লাভ নেই। কারণ, চক্রান্ত নেই। যেটা আছে তা হল, অক্ষমতা। মিসম্যানেজমেন্ট। কী করে ‘রিকভারি মিল’ নেওয়ার পর বিনেশ ফোগাটের ওজন দু’কেজি সাতশো গ্রাম বেড়ে যায়? যেটা কি না বারোশো গ্রামের মধ্যে থাকার কথা ছিল। কী করে জোর করে অন্তিমকে দু’দিন ধরে না খাইয়ে রাখা হয়? যার পর নেমে তার আর লড়ার শক্তি থাকে না? কেন স্পোর্টস সায়েন্টিস্টদের সাপোর্ট স্টাফ টিম, নিউট্রিশনিস্টরা কুস্তিগীরদের ওজন আয়ত্তে রাখতে পারছেন না? কেন, অলিম্পিকের মতো মহামঞ্চে আমাদের দেশের মুখ পুড়বে? অ্যাথলিটকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
ভিনেশ বা অন্তিম ঠিক করেন না, তাঁরা কী খাবেন। কতটা খাবেন। স্পোর্টস সায়েন্টিস্ট টিমকেই তো ঠিক করতে হবে, ইভেন্টের দু’সপ্তাহ আগে থেকে অ্যাথলিটের খাওয়াদাওয়া কেমন হবে। কখন সে কতটা খাবে। তাঁদের এমন ডায়েট রুটিন ভেবে বের করতে হবে, যেখানে অ্যাথলিটকে আটচল্লিশ ঘণ্টা উপোস না করে থাকতে হয়! ভারতের ক্ষেত্রে যা কিছুই হয়নি। প্রশ্ন হল, ভিনেশের ‘রিকভারি মিল’ ঠিক করলেন কে? কারা? কারাই বা ঠিক করে দিলেন অন্তিমকে দু’দিন না খেয়ে থাকতে হবে? অ্যাথলিটদের দোষ না দিয়ে সাপোর্ট স্টাফদের ধরতে হবে। যত নষ্টের গোড়া তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.