Advertisement
Advertisement

Breaking News

Neeraj Chopra

প্যারিসে ফিরল না টোকিওর সোনালী অতীত, অলিম্পিকে রুপো জিতেও নয়া ইতিহাস নীরজের

৮৯.৪৫ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে রুপো জিতলেন নীরজ।

Paris Olympics 2024: Neeraj Chopra creates history winning medal back to back Olympics

ফাইল ছবি।

Published by: Arpan Das
  • Posted:August 9, 2024 1:17 am
  • Updated:August 9, 2024 2:12 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্যারিস অলিম্পিকে অন্তত ১০টি পদক আসবে। আশায় ছিল ভারতবাসী। টোকিওয় সাতটি পদক এসেছিল ভারতের ঝুলিতে। এবার তো বেশি পাওয়ার স্বপ্ন দেখাই যায়। কিন্তু স্বপ্ন থেকে বাস্তবের মাটিতে ছিটকে পড়তে হয়েছে। যাঁদের থেকে পদকের প্রত্যাশা ছিল, তাঁরা অনেকেই হতাশ করেছেন। অলিম্পিকের শেষ ল্যাপে ভরসার নাম ছিল সেই নীরজ চোপড়া। তিনি খালি হাতে ফিরবেন না সেকথা জানাই ছিল। কিন্তু এবার সোনা হল না ‘সোনার ছেলে’র। এবার রুপো নিয়েই ঘরে ফিরছেন নীরজ। তাতেও ইতিহাস গড়লেন তিনি।

কীভাবে এতটা নিশ্চিত হওয়া যায় একজন মানুষকে নিয়ে? ভারতীয় ক্রিকেট টিম প্রতি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হবে, এই স্বপ্নটা সবাই দেখেন। কিন্তু নীরজ চোপড়া যেন ‘গ্যারান্টি’র আরেক নাম। এতটা নিশ্চয়তা সাম্প্রতিক অতীতে কোনও খেলা নিয়েই ছিল না। কোনও ব্যক্তিগত খেলার ক্ষেত্রে তো নয়ই। স্বাধীন দেশে প্রথম ভারতীয় পুরুষ হিসেবে অ্যাথলেটিকসে নীরজ পর পর দুটি অলিম্পিকে পদক জিতে ইতিহাস গড়লেন। সেই সঙ্গে দেশের খেলাধুলোর জগতকে নতুন পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। 

Advertisement

পাকিস্তানের নাদিম দ্বিতীয় সুযোগে ৯২.৯৭ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে অলিম্পিকের মঞ্চে রেকর্ড গড়লেন। সেটা টপকানো যে মুশকিল, সেটা তখনই বোঝা যাচ্ছিল। তবু কোথাও একটা আশা ছিল। কারণ একটাই। তাঁর নাম নীরজ চোপড়া। হল না, আফসোস থাকলেও বুকচাপা বেদনা নেই। বরং ভারতের তরফ থেকে একরাশ কুর্নিশ ছুড়ে দেওয়া যায় প্যারিসের উদ্দেশ্যে। শেষ পর্যন্ত ৮৯.৪৫ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে রুপো জিতলেন নীরজ। 

আভাস পাওয়া গিয়েছিল চলতি অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্বেই। গ্রুপ বি-র যোগ্যতা অর্জন পর্ব শুরু হতেই এসেছিলেন নীরজ। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নিজের প্রথম থ্রোয়েই সেরাটা উজাড় করে দিয়েছিলেন। ৮৯.৩৪ মিটার দূরে গিয়ে পড়ল নীরজের জ্যাভলিন। যোগ্যতা অর্জন পর্বে সকলের চেয়ে এগিয়ে থেকে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন ‘সোনার ছেলে’।

[আরও পড়ুন: ডার্বির আগে এয়ারফোর্সকে গোলের বন্যা, কামিন্সের জোড়া গোলে মোহনবাগানের হাফ ডজন]

এ কাহিনি দুদিন আগের। কিন্তু তার পিছনে যে জড়িয়ে আছে বিগত তিন বছরের গল্প। রয়েছে চোট-আঘাতের সমস্যা, সেখান থেকে ফিরে আসার গল্পও। অলিম্পিকের পরেও একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে সোনার পদক জিতেছেন নীরজ। বেশ কয়েকটি ডায়মন্ড লিগের প্রথম স্থান পেয়েছেন ভারতের সোনার ছেলে। চোটের জন্য কমনওয়েলথ গেমসে নামতে পারেননি। কিন্তু তার পরে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ আর এশিয়ান গেমসে নেমেও সোনা ফলিয়েছেন। যেসমস্ত ডায়মন্ড লিগগুলোতে সোনা পাননি, সেখানেও রুপো জিতে দেশে ফিরেছেন। বিশ্বর‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরেও উঠেছেন নীরজ।

এমনকী ছিলেন না উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও। গেমস ভিলেজে পৌঁছেছেন অনেক পরে। প্যারিস থেকে বহু দূরে তুরস্কে নিজেকে প্রস্তুতিতে ডুবিয়ে রেখেছিলেন। শুধু কি মাঠের মধ্যে? মাঠের বাইরেও তো কতবার মন জিতেছেন নীরজ। এই তো গত বছরের এশিয়ান গেমসের কথা। সোনা জয়ের পর জাতীয় পতাকা নিয়ে উচ্ছ্বাস করতে চেয়েছিলেন। গ্যালারি থেকে এক দর্শকের কাছে চেয়েছিলেন তেরঙ্গা পতাকা। গ্যালারি থেকে উড়ে আসা সেই পতাকা মাটিতে প্রায় পড়ে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময় ঝাঁপিয়ে পতাকাটি লুফে নেন নীরজ।

[আরও পড়ুন: প্রেমের শহরে শুরু নতুন সফর, অলিম্পিকে রেকর্ড গড়েই প্রেমিককে প্রোপোজ ফরাসি অ্যাথলিটের]

অথচ তার পরও এক অদ্ভুত সারল্য জড়িয়ে থাকে নীরজকে ঘিরে। ভক্তদের কাছে তিনি ‘সোনার ছেলে’ হতে পারেন, আসলে যেন বিনয়ী যুবক। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়েও অনায়াসে জানিয়ে দেন ভারতে ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের কথা। বলেন, “আমি কখনই নিজেকে বিরাট কোহলি বা এম এস ধোনির সঙ্গে তুলনা করতে চাইনি। ভারতের বাস্তব পরিস্থিতি আমি ভালোমতই জানি। অলিম্পিকের পর আমাকে বহু লোক চিনেছেন। কিন্তু ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমার জনপ্রিয়তার বিরাট তফাৎ রয়েছে।”

এবার রুপো জেতার পর কি সেই ছবিটা বদলাবে? ক্রিকেট সর্বস্ব দেশে কি পরের প্রজন্ম চাইবে নীরজ চোপড়া হয়ে উঠতে? উত্তরটা এখনই দেওয়া অসম্ভব। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে যে প্রতিযোগিতা চলুক, মাঠের বাইরে এই ধরনের প্রতিযোগিতা নীরজ সম্ভবত নিজেও চাইবেন না। তবু কোথাও যেন একটা আশার আলো জাগিয়ে রাখেন তিনি। অনেকটা পথ হাঁটতে হয় আলোর নিচ দিয়ে, ‘জনপ্রিয়তা’ শব্দটার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গোলকধাঁধার রাস্তাটা উর্বর তিনি জানেন। তার সঙ্গে এটাও জানেন, লক্ষ্য থেকে নজর সরানো যাবে না। হাতের বর্শাটাই একমাত্র সম্বল। সেটাকে ছুড়ে দিতে হবে বহু দূরে। ঠিক সেখানে গিয়ে পড়ুক তাঁর জ্যাভলিন, যেখান থেকে ভারতের খেলাধুলোর জগতে নতুন আশার আলো দেখা শুরু হোক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement