সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা দেশে এই মুহূর্তে একটাই নাম ধ্বনিত হয়ে চলেছে। নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra)। রাতারাতি সকলের হার্টথ্রব হয়ে উঠেছেন ‘সোনার ছেলে’ তরুণ নীরজ। পাশাপাশি কৌতূহল তৈরি হয়েছে তাঁর প্রবীণ কোচকে নিয়েও। Uwe Hohn নামের স্বল্পকেশ ৫৯ বছরের মানুষটি তাঁর শিষ্যের চেয়ে কোনও অংশে কম যান না। জ্যাভলিন থ্রোয়ার হিসেবে তাঁর কেরিয়ারে রয়েছে এমন এক কীর্তি যা সম্ভবত কেউ কখনও ভাঙতে পারবে না।
ঠিক কী করেছিলেন তিনি? ১৯৮৪ সালে তৎকালীন জার্মানির হয়ে খেলতে নেমে মানব সভ্যতার একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে জ্যাভলিনে ১০০ মিটারের গণ্ডি পেরিয়েছিলেন নীরজের কোচ! ছুঁড়েছিলেন ১০৪.৮ মিটার। সেই বিশ্বরেকর্ড (World Record) আজও কেউ ভাঙতে পারেননি। পারবেনও না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
কিন্তু কেন? জানা যায়, তাঁর সেই থ্রোয়ের পর বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের কর্তারা আশঙ্কায় ভুগতে থাকেন যে ভবিষ্যতে কোনও খেলোয়াড় এর চেয়েও দূরে জ্যাভলিন ছুঁড়লে অন্য ইভেন্টের অংশগ্রহণকারীরা আহত হতে পারেন। ফলে নড়েচড়ে বসেন তাঁরা। জ্যাভলিনের অভিকর্ষ কেন্দ্র বদলে চার সেন্টিমিটার এগিয়ে আনা হয়। যার ফলে জ্যাভলিন আর কোনওদিনই অত দূরে যেতেই পারবে না।
তবে এই ধারণা আসলে মিথ। জ্যাভলিনের পরিবর্তন একমাত্র সেই কারণেই করা হয়েছিল তা নয়। আসলে খুব বেশি দূরে জ্যাভলিন গেলে সেটির বৈধতা বিচার করার ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সমস্যা হয়। এটা নিয়ে অনেকদিন ধরেই চিন্তাভাবনা চলছিল। সেই কারণেই ১৯৮৬ সাল থেকে বদলে যায় জ্যাভলিন। কিন্তু একথাও অনস্বীকার্য, নীরজের কোচের বিশ্বরেকর্ডই সেই পদক্ষেপকে ত্বরান্বিত করেছিল।
তবে এমন এক অবিশ্বাস্য বিশ্বরেকর্ড গড়ার পরেও অলিম্পিকে নামা হয়নি তাঁর। কেননা ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক বয়কট করেছিল পূর্ব জার্মানি। ফলে অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতাটা স্বপ্নই থেকে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নীরজই পূর্ণ করলেন তাঁর কোচের অধরা স্বপ্নকে। শিষ্যের মধ্যে দিয়েই এতদিনের কাঙ্ক্ষিত পদক জিতলেন তাঁর গুরুও। যেন পূর্ণ হল এক বৃত্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.