সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবার মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরেও দেশের দায়িত্বকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন শচীন তেণ্ডুলকর। বাইশ গজের লড়াই শেষ করেই বাড়ি ফিরেছিলেন। এবার সেই পথেই হাঁটলেন ভারতীয় হকি খেলোয়াড় লালরেমসিয়ামি। পিতৃহারার যন্ত্রণা বুকে চেপে রেখে দেশের প্রতিনিধিত্ব করলেন তিনি। তাঁর এই অদম্য মানসিকতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ।
হিরোশিমায় এফআইএইচ হকি সিরিজ ফাইনালসে ভারতীয় মহিলা হকি দল তখন সেমিফাইনালের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। চিলির বিরুদ্ধে ছিল ম্যাচ। ঠিক তার আগে মিজোরাম থেকে দুঃসংবাদটা এসে পৌঁছায়। প্রয়াত লালরেমসিয়ামির বাবা। নিজেকে সামলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন, খেলা শেষ করেই দেশে ফিরবেন। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়েও জাপানে থেকে যান তিনি। শেষ চারে চিলিকে হারিয়ে ভারত পৌঁছে যায় ফাইনালে। চূড়ান্ত লড়াইয়ে জাপানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারতীয় প্রমিলাবাহিনী। তারপর মঙ্গলবার বাড়ি ফেরেন ১৯ বছরের মহিলা হকি খেলোয়াড়। দেশের জার্সি গায়ে খেলার জন্য বাবার শেষকৃত্যেও উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। তাই বাড়ি ফিরতেই তাঁকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা। পিতৃবিয়োগের শোক তখন বাঁধ ভেঙেছে লালরেমসিয়ামির। মাকে সামলে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আত্মীয় ও স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানান তিনি।
ভারতের অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জন করার আশা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লালরেমসিয়ামি। তাঁর এমন সিদ্ধান্ত সর্বত্র প্রশংসিতই হচ্ছে। এলাকাবাসীর কাছে রীতিমতো আইকন হয়ে উঠেছেন তিনি। দলের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতার জন্য প্রশংসা পাওয়ায় সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। টুইটারে লালরেমের প্রশংসা করেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজুও। মিজোরাম হকি সংস্থার তরফেই এদিন গাড়ির ব্যবস্থা করে তাঁকে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। তরুণী তাঁর কোচকে বলেছিলেন, ‘‘বাবাকে গর্বিত করতে চাই। তাই দলের সঙ্গে থাকব। ম্যাচটায় খেলব এবং ভারতীয় দল যাতে যোগত্যা অর্জন করে, তা নিশ্চিত করব।’’ ভারতীয় মহিলা হকি দলের পারফরম্যান্সে খুশি কোচ সোর্দ মারিনও। তাঁর কথায়, ভারতের মেয়েরা যেভাবে খেলেছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট। তবে নভেম্বরে অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্বে এই পারফরম্যান্সই ধরে রাখতে অনুশীলনে জোর দিতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.