ভারতীয় দলের এই ঐতিহাসিক জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন পুল্লেলা গোপীচাঁদ।
বোরিয়া মজুমদার: বিদেশে ফের একবার ‘ভারত উদয়’। দাপটের সঙ্গে পারফরম্যান্স করে ইতিহাস গড়লেন ভারতের মহিলা ব্যাডমিন্টন (Badminton) খেলোয়াড়রা। এশিয়া টিম চ্যাম্পিয়নশিপে (Badminton Asia Team Championships)। দাপট দেখিয়ে ইতিহাস রচনা করলেন পিভি সিন্ধু (PV Sindhu) ও তাঁর সতীর্থরা। ব্যাডমিন্টন এশিয়া টিম চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে থাইল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারাল ভারতীয় দল। আর সেই ঐতিহাসিক জয়ের পরেই সংবাদ প্রতিদিন.ইন-এর সঙ্গে কথা বললেন দলের কোচ পুল্লেলা গোপীচাঁদ (Pullela Gopichand)।
ব্যাডমিন্টনে এই জয় কি থমাস কাপের মতোই উন্মাদনা তৈরি করবে? প্রশ্ন শুনেই গোপীচাঁদ বললেন, “(একটু থেমে) এটা শুধু ব্যাডমিন্টনের নয়। দেশের খেলাধুলার জন্য অনেক বড় মুহূর্ত। সিন্ধুর জয় থেকে ফাইনালে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এবং মোক্ষম সময় গায়ত্রী-তৃষা জুটি জয়ের মুখ দেখে। একজন কোচ হিসেবে এমন মুহূর্ত দেখা সত্যি খুব ভাগ্যের ব্যাপার। এই মুহূর্তগুলো দেখার জন্যই তো বেঁচে থাকা। সত্যি বলতে এটা আমার পুরো দলের স্পেশাল এফর্ট ছিল। প্রতিটা পয়েন্টের পর যেভাবে আমাদের খেলোয়াড়রা চিৎকার করছিল, সেটা দেখার মতো।”
ভারতীয় দলের এই ঐতিহাসিক জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন গায়ত্রী গোপীচাঁদ। যিনি আবার প্রবাদপ্রতিম পুল্লেলা গোপীচাঁদের কন্যা। যদিও পুল্লেলা গোপীচাঁদ কিন্তু গর্বিত বাবা হিসেবে নন, বরং কোচ হিসেবেই গায়ত্রীর সাফল্যকে দেখছেন। তিনি ফের বলেন, “হ্যাঁ ওর পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি। চোট সারিয়ে ফিরে এসে দাপুটে পারফরম্যান্স করা মোটেও মুখের কথা নয়। এরমধ্যে আবার আমাদের দলের মেয়েদের পরপর ম্যাচ খেলতে হয়েছে। সেই দিক থেকে ফাইনালে গায়ত্রী-তৃষার এমন পারফরম্যান্স যথেষ্ট তারিফ করার মতো। এই প্রতিযোগিতার পর ওদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে।”
ইতিহাস গড়লেও ভারতের জয় একেবারেই সহজ ছিল না। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে ভারত ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেও খেলায় ফিরে আসে থাইল্যান্ড। তবে প্রতিপক্ষ ফিরে এলেও সেটা নিয়ে বেশি ভাবতে রাজি নন গোপী। বরং তাঁর প্রতিক্রিয়া, “সব ম্যাচ জেতা কখনওই সম্ভব নয়। তবে আমাদের মেয়েরা দেখিয়ে দিয়েছে যে, পিছিয়ে থাকলেও ফিরে আসা সম্ভব।”
একটা সময় পিভি সিন্ধুর ব্যক্তিগত কোচ ছিলেন গোপীচাঁদ। এর পর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। তবে সিন্ধুর প্রতি তাঁর বিশ্বাস এতটুকু কমেনি। সেটা ম্যাচের পর ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। গর্বিত কোচ বলছিলেন, “একটা কথা মনে রাখা উচিত, ফাইনালের মতো ম্যাচে প্রতিপক্ষ আমাদের হেলায় জিততে দেবে না। আমরা জানতাম তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচ কঠিন হবে। সেটা মাথায় রেখেই সিন্ধু কোর্টে নেমেছিল। সবাই পুরুষদের ব্যাডমিন্টন নিয়ে কথা বলে। লেখালেখি হয়। কিন্তু আমাদের দেশে মহিলা ব্যাডমিন্টনকে একেবারেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ভাগ্যিস সিন্ধু আমাদের দলে ছিল। তাই সবার কাছে আমাদের দলের গুরুত্ব ছিল অন্য রকম। সিন্ধু জেতার পর স্বভাবতই আমাদের মনোবল বেড়ে যায়। তাই তো পরিবর্তী ম্যাচগুলোতে আমরা দাপট দেখাতে পেরেছিলাম।”
থমাস কাপ জয়ের পর থেকে ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের রুপ বদলে গিয়েছে। তবে গোপীচাঁদ মনে করেন সার্বিকভাবে দেশের ব্যাডমিন্টনের উন্নতি করতে হলে সিন্ধুর মতো আইকনকে সামনে রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। সামনেই প্যারিস অলিম্পিক। এর আগে মহিলাদের এশিয়া টিম চ্যাম্পিয়নশিপে ইতিহাস গড়া যে অন্য মাত্রা যোগ করবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.