ফাইনালে প্রথম গেমে ১৬-২০ পিছিয়ে থেকে ২১-১৮-তে বাজিমাত। দ্বিতীয় গেমেও সেই নাটকীয়তা বজায় রেখে ২২-২০-তে জয়। কানাডা ওপেন সুপার সিরিজের ফাইনালে অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন চিনের লি শি ফেইয়ের বিরুদ্ধে দুরন্ত লড়াই শেষে যখন ‘লক্ষ্যভেদ’ করলেন লক্ষ্য সেন, তখন ভারতে সবে ভোর হয় হয়। কেরিয়ারে দ্বিতীয়বার বিডব্লুএফ সুপার ৫০০ প্রতিযোগিতা জিতলেন। সাফল্যমাখা সেই ভোরেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’-তে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন কানাডা ওপেন (Canada Open) জয়ী লক্ষ্য সেন (Lakshya Sen)। শুনলেন বোরিয়া মজুমদার।
প্রশ্ন: ১৬-২০-তে পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকে ২১-১৮ কিংবা ২২-২০-তে দ্বিতীয় গেম জয়। নিজের উপর অগাধ আস্থা না থাকলে এমন অবিশ্বাস্য কামব্যাক কখনও সম্ভব নয়। কীভাবে সম্ভব হল, একটু বলবেন?
লক্ষ্য: (হাসি) ঠিকই বলেছেন। নিজের উপর দৃঢ়বিশ্বাস ছিল যে, আমি জিতব। আসলে শুরুতে ছন্দটা পেয়ে গিয়েছিলাম। পিছিয়ে পড়া অবস্থাতে নিজেকে বোঝাচ্ছিলাম, এই পরিস্থিতি থেকেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। এমনকী দ্বিতীয় গেমে ১৫-১৭-এ পিছিয়ে থাকা পরিস্থিতিতে একবারও মনে হয়নি হেরে যাব। ২০-২০-র পর প্রথম পয়েন্ট পেতেই মনে হয়েছিল, চ্যাম্পিয়ন হব। ভাল লাগছে, সেটা করতে পেরে।
প্রশ্ন: চলতি বছরে প্রথম খেতাব জিতলেন। র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম পনেরো কিংবা বারোর মধ্যে চলে আসার সুযোগ রয়েছে। যেটা অলিম্পিক কোয়ালিফিকেশনে দারুণ কাজে দেবে। কানাডা ওপেন জয় কি তাই একটু বেশি স্পেশাল?
লক্ষ্য: একদম। গত কয়েকটি প্রতিযোগিতায় তেমন ছন্দে ছিলাম না। এখানে (কানাডা ওপেন) সেই ছন্দটা শুরু থেকেই খুঁজে পেয়েছিলাম। আসলে ধারাবাহিকতার অভাবে জিততে পারছিলাম না। মনঃসংযোগ করতে ব্রেক নিয়েছিলাম। সেটা দারুণ কাজে দিয়েছে। এখন ছন্দ খুঁজে পেয়েছি। আশা করছি, সামনের টুর্নামেন্টগুলোয় আরও ভাল পারফরম্যান্স দেখতে পাবেন।
প্রশ্ন: ফাইনালের শুরুতে লি-র বড় স্ম্যাশের সামনে আপনাকে বেশ অসহায় দেখাচ্ছিল। কীভাবে সেই চ্যালেঞ্জ জিতলেন?
লক্ষ্য: হ্যাঁ। শুরুতে ওর বিগ স্ম্যাশগুলো সামলাতে সমস্যা হচ্ছিল। এমনকী বেশ কিছু পয়েন্ট নষ্ট করেছি। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন, বেশি সুযোগ কিন্তু আমি দিইনি। এই ধরনের ম্যাচে নেট-প্লে ভাল হওয়া দরকার। ঠিক সেটাই করেছি। আরও একটা ব্যাপার বলার। সেটা হল অনুপ ভাইয়ার (অনুপ শ্রীধর, লক্ষ্যর কোচ) উপস্থিতি। ওঁর পরামর্শ আমাকে আরও নিখুঁত হতে সাহায্য করেছে।
প্রশ্ন: কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল আর ফাইনাল। তিনটি ম্যাচেই কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেললেন। তারপরেও আপনাকে ক্লান্ত মনে হয়নি। এই ফিটনেসের পিছনে রহস্যটা কী?
লক্ষ্য: (হেসে) পুরো কৃতিত্ব প্রাপ্য আমার নতুন ট্রেনারের। গত আড়াই মাসে ও আমাকে নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। বছর তিনেক আগে কোভিডের সময় আমরা একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। উপকৃতও হয়েছিলাম। শেষ কয়েকমাসে নিজেকে সবচেয়ে ফিট প্লেয়ার বলে মনে হয়েছে।
প্রশ্ন: কানাডা-পর্ব তো হল। এবার? পরের লক্ষ্য কী?
লক্ষ্য: একটা ছোট্ট ব্রেক দরকার। স্টামপেড যাওয়ার প্ল্যান আছে, ওখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রোডিয়ো ফেস্টিভ্যাল হয়। সেটা ক্যালগারির কাছেই। আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিলাম, যদি কানাডা ওপেন জিতি তাহলে ওখানে যাব। সেখানেই যাবতীয় সেলিব্রেশন হবে। তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার থেকে ইউএস ওপেনে খেলতে নামছি। তবে এই মুহূর্তে মাথায় শুধু স্টামপেড ফেস্টিভ্যাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.