পদকজয়ী দীপা কর্মকার। ফাইল চিত্র।
শিলাজিৎ সরকার: একদিন আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে, প্যারিস অলিম্পিকে (Paris Olympics) অংশ নিতে পারবেন না ভারতের কোনও জিমন্যাস্ট। তবে সেই অমানিশার মধ্যেই আলো হয়ে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় এল আরও একটা খবর। এশিয়ান জিমন্যাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যক্তিগত ভল্ট ইভেন্টে সোনা জিতেছেন দীপা কর্মকার (Dipa Karmakar), যা এই প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রথম স্বর্ণপদক। ইতিহাস গড়ার পর উজবেকিস্তানের তাসখন্দ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দীপা মুখ খুললেন নিজের লড়াই থেকে ভবিষ্যৎ ভাবনা, সব বিষয় নিয়েই।
প্রশ্ন: প্রথমেই অভিনন্দন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতার জন্য। এই সাফল্যের পর কেমন লাগছে?
দীপা: খুবই ভালো লাগছে। আসলে আমি অনেকদিন জিমন্যাস্টিক্স থেকে দূরে ছিলাম। মূলত চোটের জন্য। আবার একটা লম্বা সময় বাইরে থাকতে হয়েছে এমন একটা কাজের শাস্তির জন্য, যে কাজটা আমি করিনি। ফলে এই পদকটা আমার খুব দরকার ছিল। এতদিন ধরে যে সমালোচনা শুনেছি, তার জবাব দেওয়ার জন্য।
প্রশ্ন: শাস্তি বলতে কি আপনি সেই ডোপ-পর্বের দিকে ইঙ্গিত করলেন?
দীপা: একেবারেই। ওই পর্বটা আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল। সেটা আমি কাটিয়ে এসেছি ঠিকই। তবে আমার একটা জেদ ছিল নিজেকে প্রমাণ করার। আজকের সোনাটা সেই জেদেরই ফল। আমি পেরেছি এশিয়ান চ্যম্পিয়নশিপে আমার দেশ এবং কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর মাথা উঁচু করতে। সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তির, সবচেয়ে বেশি আনন্দের।
প্রশ্ন: আজ কোন কোন ভল্ট দিলেন?
দীপা: আজকে আমি প্রথমে সুকুরা ৭২০ ডিগ্রি ভল্টটা দিয়েছি। ওটা ব্যাকের পার্টে ছিল। আর ফ্রন্টের জন্য বেছে নিয়েছিলাম হ্যান্ডস্প্রিং স্ট্রেটবডি সামারসল্ট ৩৬০ ডিগ্রি। আসলে পায়ে দু’বার এসিএলের অস্ত্রোপচারের পর আমাকে ভল্ট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে খুব সাবধানে পদক্ষেপ করতে হয়।
প্রশ্ন: একটুর জন্য অলিম্পিকের ছাড়পত্র পাননি এবার। প্যারিসে ভারতের কোনও জিমন্যাস্ট নামতে পারবেন না। সেখানে এই সোনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আপনার কাছে?
দীপা: আমি নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম অলিম্পিকের ছাড়পত্রটা পাওয়ার। সেজন্য ৫০ স্কোর করতে হত, আমি ৪৬ মতো করেছি। ফলে সেটা যথেষ্ট ছিল না। এই আক্ষেপ আমার কোনওদিন যাবে না। (একটু থেমে) আসলে এবার কোনও কোটার সুবিধা ছিল না। আর আমরা যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে একটু সমস্যার মধ্যেও পড়েছি। এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যেতে পারিনি আমি। ওখান থেকে অলিম্পিকের ছাড়পত্র পাওয়ার লড়াইটা তুলনায় সহজ। সবক’টা বিশ্বকাপেও নামতে পারিনি। না হলে হয়তো প্যারিস নিয়ে আমাদের আক্ষেপ করতে হত না।
প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ নিয়ে কী পরিকল্পনা?
দীপা: কোনও পরিকল্পনা নেই। ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কিছু ভাবিনি। সবে সোনা জিতলাম। এখন কয়েকটা দিন আনন্দে কাটাতে চাই। তারপর না হয় ভবিষ্যতের কথা ভাবব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.