সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীর (Kashmir) থেকে কন্যাকুমারিকা (Kanya Kumari)। ১৩টি রাজ্য। ১৪ দিন। ৩ হাজার ৬৭৭ কিলোমিটার। কার্যতই এ যেন ‘অসাধ্যসাধন’। আর এমন অবিশ্বাস্য কীর্তির জেরে ‘ইন্ডিয়া অ্যান্ড এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসে’ নাম তুললেন চেন্নাইয়ের (Chennai) বি শ্রীনিবাসন। সাইকেলে পেরিয়ে এলেন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর পথ। একা। এত অল্প সময়ে অন্য কারও থেকে সাহায্য না নিয়ে ‘সোলো’ সাইক্লিস্ট হিসেবে এই নজির গড়লেন তিনি।
লড়াইটা সহজ ছিল না। আর সেকথা বলতে গিয়ে শ্রীনিবাসন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর কাজটা কতটা কঠিন ছিল। গত ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল তাঁর যাত্রা। শ্রীনগরের ঘণ্টা ঘর থেকে। চ্যাম্পিয়ন সাইক্লিস্ট বলছেন, ”তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আমি ভেবেছিলাম সাইকেল চালাতে চালাতে হাতের তালু গরম হয়ে যাবে। কিন্তু তা হচ্ছিল না। বরং ১৫ মিনিটের মধ্যে হাত যেন জমে গেল। আর কিছুক্ষণের মধ্যে আমার মনে হচ্ছিল আঙুলগুলোই বোধহয় আর নেই।” এরপর এক ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছলে জনৈক সেনা অফিসার তাঁকে একজোড়া গ্লাভস উপহার দেন।
পাহাড় থেকে উপত্যকা হয়ে জঙ্গল। নানা ধরনের ভৌগলিক পথ পেরিয়ে তবে চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব হয়েছিল। অবশেষে মিলল স্বীকৃতি। অথচ কাজটা ছিল প্রচণ্ড কঠিন। দিনে ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা সাইকেল চালাতে হচ্ছিল। তারপর কোনও একটা মাথাগোঁজার ঠাঁই পেলে সেখানেই রাত কাটানো। যা হোক কিছু খেয়ে পেট ভরানো। শ্রীনিবাসন স্বীকার করছেন, কখনও সখনও এমনও পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল, যখন কেঁদেও ফেলেছিলেন তিনি।
যেমন তেলেঙ্গানায় তীব্র দাবদাহের মধ্যে টানা সাইকেল চালানোর সময় তালুর চামড়া উঠে গিয়েছিল! এমনও হয়েছে, মধ্যপ্রদেশে দীর্ঘ পথ তাঁকে পেরতে হয়েছে জনশূন্য পথে। চারপাশ নির্জন। এই অবস্থায় জঙ্গলের দুর্গম পথ দিয়ে টানা সাইকেল চালিয়ে যেতে হচ্ছিল। যে কোনও সময় এসে পড়তে পারত বুনো জন্তু জানোয়ার।
যদিও শেষ পর্যন্ত তেমন কোনও অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়নি শ্রীনিবাসনকে। তিনি জানাচ্ছেন, বারবার তিনি নিজেকে বোঝাচ্ছিলেন হাল না ছাড়তে। তাঁর কথায়, ”আমি কেবল নিজেকে ধাক্কা দিয়ে বোঝাচ্ছিলাম হাল না ছাড়তে। এটাই বোধহয় আমার এই অভিযান থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় শিক্ষা। হাল না ছাড়া।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.