সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময় যত গড়াচ্ছে, ততই সামনে আসছে অলিম্পিক (Olympic) পদক জয়ী কুস্তিগির সুশীল কুমারের (Sushil Kumar) নানান কীর্তি। ইতিমধ্যে খুনের মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ছ’দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এই কুস্তিগিরকে। আর এবার সেই সঙ্গেই সামনে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাকি কুস্তিগিরদের ভয় দেখাতে এবং এই সার্কিটে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে সাগর রানাকে মারধর করার ভিডিও করে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন সুনীল। আদালতে এমনটাই জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
এই প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্য, ঘটনার সময় বন্ধু প্রিন্সকে মারধরের ভিডিও করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুশীল। ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার পরিকল্পনা ছিল অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগিরের। সুশীল এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা সাগরের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। আসলে সুনীল এই ঘটনার ভিডিও করে বাকি কুস্তিগিরদের ভয় দেখাতে চেয়েছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য কুস্তিগিরদের কমিউনিটিতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা। এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি সুশীলের কাছে অর্থও প্রায় ছিল না বলেই চলে।
শুধু তাই নয়, অসামাজিক কাজকর্মে যুক্ত থাকার প্রমাণও পেয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে সুশীল কুমারের স্ত্রী-র নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যেখানে এসে আশ্রয় নিত দুষ্কৃতীরা। দিল্লি পুলিশের নজরে থাকা সন্দীপ কালাও নাকি ওই ফ্ল্যাটে এসে থেকে গিয়েছে। এদিকে, এই ঘটনায় মৃত সাগরের মা-বাবার দাবি, সুশীলই তাঁর ছেলের খুনের জন্য দায়ী। তাঁর সমস্ত পদক কেড়ে নেওয়া হোক। শুধু তাই নয়, সুশীলের ফাঁসিরও দাবি জানান তাঁরা। তবে এর পাশাপাশি তদন্তে যাতে সুশীল কোনওভাবেই প্রভাব খাটাতে না পারেন, সেই আরজিও জানানো হয় তাঁদের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, ঘটনাটি গত ৪ মে’র। দিল্লির ছত্রশাল স্টেডিয়ামের পার্কিং লটে সুশীল কুমার এবং তাঁর কয়েক জন সঙ্গীর সঙ্গে ঝামেলা হয় সাগর রানার। ঝামেলায় মারপিটের জেরে মৃত্যু হয় বছর তেইশের ওই কুস্তিগিরের। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় দু’বারের অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগির সুশীলের। প্রথমে তিনি এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু দেখা যায়, ঘটনার পর থেকেই সুশীলের আর কোনও খোঁজ নেই। তাঁর ফোনও বন্ধ। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করে। সেখানে প্রত্যেকেই সুশীল কুমারের দিকে আঙুল তোলেন। এরপরই ফোন লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোটা ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ক্রীড়াজগতের। অনেকেই মনে করছেন, এতে ভারতীয় কুস্তির নাম কলঙ্কিত হল। অনেকের আবার দাবি, অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই কাঠগড়ায় তোলা উচিত নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.