Advertisement
Advertisement
Asian Games 2023

Asian Games 2023: ‘ইতিহাসের মুহূর্তে নিশ্চল হয়ে গিয়েছিলাম’, ঘোড়া ছুটিয়ে এশিয়াডে সেরা বালিগঞ্জের অনুশ

মাত্র তিন বছর বয়সে রাইডিং শুরু করেছিলেন অনুশ।

Asian Games 2023: Anush Agarwalla of Ballygunge wins Asian Games gold, shares feeling after winning | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 27, 2023 10:26 am
  • Updated:September 27, 2023 2:26 pm  

শিলাজিৎ সরকার: তখনও কৈশোরের গণ্ডি পার হননি, বয়স মাত্র ১৭। পরিবার-পরিজন ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন জার্মানির এক ছোট্ট শহর বোর্চেনে। তিলোত্তমা কলকাতা থেকে যার দূরত্ব প্রায় সাড়ে আট হাজার কিলোমিটার। আবার মঙ্গলবার কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরের শহর হাংঝৌতে ইতিহাস তৈরি করলেন তিনি। তিনি অনুশ আগরওয়াল। ভারতীয় ইকুয়েস্ট্রিয়ানের নতুন নায়ক বালিগঞ্জের ২৩ বছরের এই যুবক।

মঙ্গলবার এশিয়ান গেমসে(Asian Games 2023) ইকুয়েস্ট্রিয়ানের টিম ড্রেসেজ ইভেন্টে অনুশ সোনা জিতেছেন তিন সতীর্থ সুদীপ্তি হাজেলা, দিব্যাকৃতি সিং ও হৃদয় ছেদাকে সঙ্গে নিয়ে। অথচ এবার এশিয়াডে সম্ভাব্য পদকজয়ীর কোনও আলোচনাতেই ছিলেন না অনুশ বা তাঁর সতীর্থরা। তাই সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে কী ভাবছিলেন লা মার্টসের এই প্রাক্তনী? হাংঝৌ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে অনুশের জবাব, “আমরা একটা দুর্দান্ত দল নিয়ে এশিয়াডে এসেছি। এই সোনা সেই দলগত চেষ্টারই ফল।” ফাইনালে ওঠার পর থেকেই লক্ষ্য স্থির করে রেখেছিলেন অনুশরা। নিজেদের মধ্যে আলোচনায় সোনা ছাড়া অন্য কোনও পদক নিয়ে আলোচনাই করেননি তাঁরা। “এই অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। এক মুহূর্তের জন্য পৃথিবী যেন স্থির হয়ে গেল। আসলে আমাদের লক্ষ্য ছিল ভারতের পতাকা সবার উপরে তুলে ধরা। আমার দেশের পতাকা সবার উপরে রয়েছে, জাতীয় সংগীত বাজছে, সবাই আমার দেশের সম্মানে দাঁড়িয়ে রয়েছে- এই অনুভূতিটাই অন্যরকম,” একরাশ গর্বের সঙ্গে বলছিলেন অনুশ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কুখ্যাত নাৎসিকে কানাডার পার্লামেন্টে সম্মান! চাপের মুখে ইস্তফা স্পিকারের]

মাত্র তিন বছর বয়সে রাইডিং শুরু করেন অনুশ। তবে ইকুয়েস্ট্রিয়ানের প্রথাগত শিক্ষা শুরু করেন আরও পাঁচ বছর পর। সে সময় শহরে তেমন কোনও ভালো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল না। এর পরই দিল্লির একটি ক্লাবে যোগ দেন অনুশ। পড়াশোনা সামলে সপ্তাহে একটা দিন দিল্লি গিয়ে অনুশীলন করে আবার কলকাতায় এসে স্কুলে ক্লাস করতেন তিনি। বলছিলেন, “প্রতি শনিবার সকালের ফ্লাইটে দিল্লি যেতাম। তারপর আবার রবিবার বিকেলে কলকাতা ফিরে পরদিন স্কুল যেতাম।” একটা সময় পর অনুশ বুঝতে পারেন, এভাবে দু’নৌকায় পা দিয়ে চললে হবে না। ইকুয়েস্ট্রিয়ানে ভাল কিছু করতে হলে আরও উন্নত কোথাও প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এর পরই ১৭ বছর বয়সে জার্মানি চলে যান, হিউবার্টস স্মিতের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে। জার্মানিতেই কেন গেলেন? অনুশের কথায়, “সে সময় আমরা আন্তর্জাতিক স্তরে ইকুয়েস্ট্রিয়ান নিয়ে বিশেষ কিছু জানতাম না। ইন্টারনেটে সার্চ করে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করি। হিউবার্টস আমার মেলের জবাব দিয়েছিলেন। এর পর এখানে এসে ভালো লেগে যায়।” সেই থেকে বোর্চেনের বাসিন্দা অনুশ। অবশ্য এশিয়ান গেমসের আগে থেকেই ভারতীয় ইকুয়েস্ট্রিয়ানে চেনা মুখ অনুশ।

গত বছর প্রথম ভারতীয় হিসাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ইন্ডিভিজুয়াল ড্রেসিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। যা নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নামার মুহূর্তটা আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত। কারণ দেশের প্রথম অ্যাথলিট হিসাবে আমি ডেনমার্কে নেমেছিলাম।” এবার এশিয়ান গেমসের ফাইনালে সোনা জয়ের পর অনুশের জীবনের সেরা মুহূর্তটা নিশ্চিত ভাবেই বদলে গিয়েছে। এদিও দলের সেরা পারফর্মার তিনিই। অবশ্য এখনও কাজ শেষ হয়নি অনুশের। বুধবার ফের নিজের ঘোড়া এট্রোকে নিয়ে লড়াইয়ে নামবে তিনি, এবার ইন্ডিভিজুয়াল ড্রেসিংয়ের যোগ্যতা অর্জন পর্বে। সেখানে সফল হলে বৃহস্পতিবার আরও একটা পদকের দৌড়ে দেখা যাবে অনুশকে। মঙ্গলবারের মতো সেদিনও সফল হবেন কলকাতার অনুশ, এটাই এখন প্রার্থনা ভারতের।

[আরও পড়ুন: ‘হিন্দু জঙ্গি’দের ভয়ে ভারতছাড়া, বেআইনিভাবে পাকিস্তানে পাড়ি পিতা-পুত্রের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement