সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দারিদ্রের তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করেও আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলার অচিন্ত্য শিউলি। রবিবার মধ্যরাতে সবাই যখন নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে, তখন সুদূর বার্মিংহ্যামে দেশের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন পাঁচলার ছেলেটি। আর বছর কুড়ির এই দাপুটে জয় দেখে মোহিত দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শচীন তেণ্ডুলকরের। মোদি আগেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অচিন্ত্যকে, সেই তালিকায় যোগ হল কিংবদন্তি শ্চীনের নাম। অচিন্ত্যর (Achinta Sheuli) যাত্রাপথের কথা তুলে ধরে ‘লিটল মাস্টার’ বলেছেন, সকলকে অনুপ্রেরণা জোগাবে এই কাহিনী।
টুইট করে শচীন (Sachin Tendualkar) লিখেছেন, “পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হাওড়ায় দরজির কাজ করত। সেখানে থেকে বার্মিংহ্যামে ভারতের তেরঙ্গা উড়িয়েছে। অচিন্ত্য, অসাধারণ যাত্রাপথ তোমার। সেই সঙ্গে সকলকে অনুপ্রেরণা জোগাবে তোমার এই কাহিনি। সোনার পদক জেতার জন্য অভিনন্দন তোমাকে।” প্রসঙ্গত, ভারতীয় সেনার তত্ত্বাবধানে ট্রেনিং করতেন অচিন্ত্য শিউলি। সেই কথা তুলে ধরে শচীন বলেছেন, ”এমন অসাধারণ প্রতিভাকে সাহায্য করার জন্য কুর্নিশ জানাই ভারতীয় সেনাকে।”
From starting as a tailor in Howrah to support your family, to making the tricolour 🇮🇳 fly high at Birmingham.
Such a wonderful journey & an inspirational story, Achinta!
Congratulations on the 🥇 & kudos to the Indian Army for supporting sporting talent.#CommonwealthGames2022 pic.twitter.com/sLfJZCZ7H4
— Sachin Tendulkar (@sachin_rt) August 1, 2022
মাত্র ১১ বছর বয়সে পিতৃহারা হয়েছিলেন অচিন্ত্য। তারপরে সংসারের জোয়াল নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। হাওড়ার পাঁচলায় মা এবং দাদার সঙ্গে জরির কাজে লেগে পড়েন। কিন্তু তীব্র অভাবও খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে দিতে পারেনি। ২০১৪ সালে ন্যাশনাল গেমসে তৃতীয় হন। তারপরেই সেনার স্পোর্টস ইন্সটিটিউটে ট্রেনিং শুরু করেন তিনি। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক টুর্নামেন্টে লাগাতার পদক জিততে থাকেন তিনি। ২০১৫ সালে ভারতে যুব কমনওয়েলথ গেমসে রুপো জেতেন। ২০১৭ সালে তাসখন্দে যুব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো, ২০১৯ সালে জুনিয়র বিভাগে সোনা জেতার পরে ২০২১ সালে তাসখন্দে ওয়ার্ল্ড জুনিয়র প্রতিযোগিতায় রুপো এবং জুনিয়র ও সিনিয়র বিভাগে জোড়া সোনা জেতেন অচিন্ত্য।
কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জেতার লড়াইটা খুব সহজ ছিল না, সেই কথা জানিয়েছেন অচিন্ত্যর মা। ছেলের এমন খুশির দিনে তাঁর মনে পড়েছে সেই দিনগুলোর কথা, যখন ছেঁড়া জামা পরে ট্রেনিংয়ে যেতে হত। সকলের কটু কথা শুনেও ছেলে দমে যায়নি, এমনটাই জানিয়েছেন গরবিনী মা। অচিন্ত্যের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সকলেই। আরও বহুদূর এগিয়ে যাবেন অচিন্ত্য, আরও অনেককে অনুপ্রেরণা দেবে তাঁর এই অদম্য লড়াইয়ের কাহিনি, সেই আশাতেই বুক বেঁধেছে ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.