অভিষেক চৌধুরী, কালনা: হাঁটু ও পায়ের ব্যথায় কাতরানো এখন প্রায় সব ঘরের সমস্যা। এই যন্ত্রণায় সবচেয়ে বেশি কাবু হচ্ছেন মধ্যবয়সিরা। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে ব্যথা-যন্ত্রণার প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে নয়া নজির গড়লেন কালনার (Kalna) আশি ছুঁইছুঁই অনিমা তালুকদার। আন্তর্জাতিক স্তরে দৌড় এবং হাঁটা প্রতিযোগিতায় জোড়া সোনা জিতলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, বয়স তো স্রেফ সংখ্যামাত্র।
৪ ও ৫ জুন সিঙ্গাপুরে ৪৫ তম আন্তর্জাতিক মাস্টার্স ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। সেই প্রতিযোগিতায় তিনটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন কালনার কৃষ্ণদেবপুর এলাকার বাসিন্দা তথা প্রাক্তন শিক্ষিকা অনিমাদেবী। আর বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিন বিভাগেই জিতে নিয়েছেন পদক। কোন কোন বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন তিনি? তিন কিলোমিটার হাঁটা, ২০০ মিটার দৌড় এবং শট পাটে অংশগ্রহণ করেছিলেন অনিমাদেবী। এর মধ্যে হাঁটা ও দৌড় প্রতিযোগিতায় জোড়া সোনার পদক জিতেছেন। আর শট পাটে তৃতীয় হয়ে ঘরে এনেছেন ব্রোঞ্জ পদক।
উল্লেখ্য,কিছুদিন আগেই চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয়স্তরের হাঁটা প্রতিযোগিতায় তিনি রুপোর পদক জিতেছিলেন। মেয়ে অসীমা তালুকদার জানাচ্ছেন, “কর্মজীবন থেকে মা অবসর নিলেও হাঁটাহাঁটি করা মায়ের নিত্যদিনের রুটিন। শরীরকে সুস্থ রাখতে যা যা করণীয়, ৭৯ বছর বয়সে মা এখনও তা সমানতালে করে চলেছেন।” এর পাশাপাশি অনিমাদেবী বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন বলে জানান তাঁর আরেক মেয়ে অঞ্জলি তালুকদার।
অনিমাদেবীর ছেলে ডা. অরুণাংশু তালুকদার বর্তমানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক। তিনিও মায়ের এই সাফল্যে খুশি। এই বয়সে মায়ের এই সাফল্য তাঁকেও অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে বলে জানান অনিমাদেবীর চিকিৎসক ছেলে। তাঁর কথায়, “মায়ের এই জয়টা শুধু জয় নয়। এই বয়সে দাঁড়িয়েও মায়ের এই সাফল্য আমাদের যেমন অনুপ্রেরণা দেয়, মনে জোর পাই। এই সাফল্য বয়স্কদের শরীর ফিট রাখতে নিঃসন্দেহে উৎসাহ জোগাবে। এই বয়সে এসেও হাঁটার পাশাপাশি দৌড়, শট পাট প্রতিযোগিতায় যে সাফল্য পাওয়া যায় মা তা করে দেখাল।” বয়স্কদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে মায়ের এই কৃতিত্ব নজির হিসেবে তাঁদের সামনে তুলে ধরতে পারবেন বলে জানাচ্ছেন ডা. অরুণাংশু তালুকদার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.