সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে জার্সি গায়ে বিদেশের মাটিতে বক্সিংয়ের রিংয়ে আগুন ঝড়িয়ে ছিনিয়ে এনেছিলেন সোনার পদক৷ দেশের মাটিতেও দেখিয়েছেন বক্সিংয়ের শক্তি৷ দারিদ্রের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে রিংয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন হরিয়ানার ভিওয়ানির সোনার ছেলে দীনেশ কুমার৷ ছোট বক্সিংয়ের কেরিয়ারে দেশকে এনে দিয়েছেন সোনা৷ রুপো-ব্রোঞ্জ ছিনিয়ে আনাটা দীনেশের কাছে বাঁ হাতের খেল৷
কিন্তু, দেশের হয়ে পদক আনাটা সহজ হলেও সংসার চালানো দিনে দিনে আরও কঠিন হয়ে উঠছিল দীনেশের কাছে৷ বিপক্ষ বক্সারের বাউন্সারের কাছে হার শিকার না করলেও দারিদ্র্যতার কাছে নতজানু হতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত দীনেশ কুমার৷ আর এই দারিদ্রতাই কারণেই যে তাঁকে একদিন রাস্তার মোড়ে মোড়ে কুলফি বিক্রি করতে হবে, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি দীনেশ৷ আশা ছিল, খেলার দুনিয়ায় নাম করে পরিবারকে নিয়ে কোনওমতে চালিয়ে দেবেন পাঁচ সদস্যের পরিবার৷ কিন্তু, মেলেনি সরকারি সাহায্য৷ আর তার জেরেই ঠেলা গাড়ির উপর কুলফি সাজিয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ১৭টি সোনা, ১টি রুপো ও ৫টি ব্রোঞ্জ জয়ী অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত দীনেশ কুমার৷
[রাহুল গান্ধীর ‘জাত’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত]
কিন্তু, শুধুই কি অভাব? হঠাৎ রিং ছেড়ে কেন কুলফি বিক্রির পেশা বেছে নিতে বাধ্য হলেন দীনেশ? সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগের কথা৷ একটি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি৷ দীনেশকে বাঁচাতে বাড়ি বন্ধক দেন বৃদ্ধ বাবা৷ দীর্ঘ চিকিৎসার পর মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা হয় এই বক্সারকে৷ কিন্তু, সেই বন্ধকি ঋণ আর শোধ করতে পারেননি বৃদ্ধ বাবা৷ চোটের কারণে পারফরম্যান্সে খামতি দেখা দিতে থাকে৷ সেই শুরু৷
[হৃদরোগের আক্রান্ত বিমান যাত্রীর প্রাণ বাঁচিয়ে ‘নায়ক’ জওয়ান, ভাইরাল ভিডিও]
উলটো পথে চলতে থাকে দীনেশের জীবন৷ মাথার উপর ঋণের বোঝা ও খেলার মান পড়তে থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন দীনেশ৷ পরিবার চালাতে বাবার সঙ্গে কুলফি বিক্রিতে হাত মেলান বক্সার৷ সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দীনেশ বলেন, ‘‘আমি যখন অসুস্থ ছিলাম, তখন কেউ সাহায্য করেননি৷ ফলে, সংসার চালাতে বাধ্য হয়েই কুলফি বিক্রি করছি৷’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘যদি সরকার একটু সাহায্য করত, তাহলে আমাকে এভাবে কুলফি বিক্রি করতে হত না৷’’ গ্রামের ছেলে-মেয়ের জন্য খেলার সুযোগ গড়ে দিতে বক্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে চান তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.