Advertisement
Advertisement

‘ক্যাপ্টেনদের ক্যাপ্টেন ধোনি স্যর, ওঁর হাতেই উঠবে ট্রফি’, স্বপ্নে বিভোর মাহির সুপারফ্যান রাম বাবু

ধোনির আশীর্বাদ নেবেন, তাঁর সঙ্গে ছবি তুলবেন মোহালিবাসী ক্রিকেটভক্ত।

MS Dhoni's super fan Rambabu opens up । Sangbad Pratidin
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:May 27, 2023 4:16 pm
  • Updated:May 28, 2023 8:46 am  

কৃশানু মজুমদার: শচীন তেণ্ডুলকরের (Sachin Tendulkar) ‘সুপারফ্যান’ সুধীর গৌতম। তেমনই মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) বড় ভক্ত রাম বাবু (Ram Babu)।
রবিবার আইপিএলের (IPL) মেগাফাইনাল। মোহালিবাসী রাম বাবু ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন আহমেদাবাদে। উঠেছেন এক বন্ধুর বাড়িতে। শনিবার ‘ভক্তের ভগবান’ ধোনির কাছ থেকে ফাইনালের টিকিট সংগ্রহ করবেন তিনি। রবিবাসরীয় ফাইনালে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ধোনির জন্য গলা ফাটাবেন, চিয়ার করবেন চেন্নাই সুপার কিংসকে। রবিরাতে আইপিএল ট্রফি উঠবে তাঁর প্রিয় ধোনি-স্যরের হাতে। এই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন রাম বাবু। 

[আরও পড়ুন: ‘চুল ঠিক করে এসে জানলাম কমলা টুপি পরতে হবে’, বিধ্বংসী ইনিংসের পর বললেন গিল]

 

দু’ মাস ধরে ভারতভ্রমণে বেরিয়েছেন ধোনির সুপারফ্যান। ৩১ মার্চ সিএসকে-র সঙ্গে খেলা ছিল গুজরাট টাইটান্সের। সেই ম্যাচের আগেই ধোনির আশীর্বাদ নিয়েছেন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-কে রামবাবু বলছেন, ”টুর্নামেন্ট চলাকালীন আমি মাহি স্যরকে বিরক্ত করি না। গ্যালারি থেকে গোটা দলকে উৎসাহ দিই। চোখে চোখে ইশারায় কথা হয় ধোনি-স্যরের সঙ্গে। হৃদয় বলছে, ধোনি-স্যরের হাতেই এবার ট্রফি উঠবে।” 

Advertisement


এই মুহূর্তে ধোনির জন্য মহাধ্বনি গোটা দেশে। উঠেছে আবেগের ঝড়। হৃদয়ের একূল, ওকূল, দু-কূল ভেসে যাচ্ছে ক্রিকেটভক্তদের। ধোনি যেন হ্যামলিনের সেই বাঁশিওয়ালা! তিনি যেখানে, লোকের ঢল সেখানে। দেশের স্টেডিয়ামগুলোতে তিলধারণের জায়গা থাকছে না। হলুদ রঙা জার্সির ঢেউ সেখানে। সিএসকে-র প্রতিপক্ষ যতই গুজরাট টাইটান্স হোক, রবিবারের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেও হলুদ জার্সিরই ভিড় থাকবে। স্টেডিয়ামে উঠবে ধোনি-ধোনি জয়ধ্বনি। রাম বাবু বলছেন, ”এবারের টুর্নামেন্টে ধোনি-স্যর ম্যাজিক দেখাচ্ছেন। যা ধরছেন, তাতেই সোনা ফলাচ্ছেন। উনি তো ক্যাপ্টেনদের ক্যাপ্টেন। ওঁর নেতৃত্ব দেখে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে।” 
সবুজ মাঠে একটা মানুষকে দেখে খুশিতে ফুটছে গোটা দেশ। রবিঠাকুরকে আশ্রয় করে কি ধোনি বলছেন, ‘তুমি খুশি থাক, আমার পানে চেয়ে চেয়ে খুশি থাক’? ভাললাগার মুহূর্ত যেন দ্রুত না ফুরোয়। রাম বাবু বলছেন, ”দেশ জুড়ে একটাই নাম-ধোনি-ধোনি। ভারতীয় দলকে রাজার মতো নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিশ্বের দরবারে ধোনি-স্যর নিজেই একটা ব্র্যান্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পরে চেন্নাই সুপার কিংসকেও দারুণ এক ব্র্যান্ডে পরিণত করে ফেলেছেন। এখনও ওঁর মধ্যে অনেক ক্রিকেট রয়েছে। এত ভাল যখন খেলছেন, এত দক্ষ হাতে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন অবসরের ভাবনা মনে না আনাই ভাল।”
একসময়ে নিজে ক্রিকেট খেলতেন। বড় বড় চুল রাখতেন রাম বাবু। মোহালিতে সবাই তাঁকে ‘ধোনি-ধোনি’ বলে ডাকতেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের জন্য ক্রিকেট নিয়ে বেশিদূর এগনো হয়নি। তাঁর শয়নে, স্বপনে এবং জাগরণে ক্রিকেট, ক্রিকেট আর ক্রিকেট। নিজের জীবন সমর্পণ করেছেন ক্রিকেটে। ১৬ বছর বয়স থেকে দেশের সমর্থনে বিদেশের মাঠে মাঠে ঘুরছেন। দেশের পতাকা উড়িয়েছেন বিদেশের গ্যালারিতে। কালক্রমে ধোনির সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে তাঁর নাম। রাম বাবু বলছেন, ”ধোনি স্যর একবার আমার জীবন বাঁচিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশে। আমি খেলা দেখতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। অজানা এক জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলাম। ১৫ দিন ধরে খেতে পারিনি কিছুই। অসুস্থ শরীরে খেলা দেখতে মাঠে যেতাম। দু’ দিন খেলা দেখতে গিয়ে পড়েও গিয়েছিলাম মাঠে। ধোনি স্যরের কানে গিয়েছিল আমি অসুস্থ। আমাকে ডেকে পাঠান তিনি। ভারতীয় দলের ফিজিও আমাকে ওষুধ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ওষুধও কাজ দেয়নি। বেশ কিছু পরীক্ষা করাতে হয়। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেন ধোনি-স্যর। রিপোর্ট দেখে বলেন, তোমার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। আমার সঙ্গে হোটেলে দেখা করো। হোটেলে দেখা হতেই আমার পাসপোর্ট কেড়ে নেন ধোনি স্যর। আমাকে বলেন চণ্ডীগড়ে ফিরে যেতে হবে তোমাকে। পরের দিন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ ছিল। ম্যাচের টিকিট হাতে এসেছিল। কিন্তু ধোনি স্যরের ম্যানেজার আমার বিমানের টিকিট কেটে দেন। চণ্ডীগড়ে পৌঁছনোর পরে চিকিৎসকও বলেছিলেন, ধোনিকে তোমার ধন্যবাদ জানানো উচিত। তোমার শরীরের অবস্থা খুব খারাপ হয়েছিল।”
ভরা সংসার রাম বাবুর। এক ছেলে ও এক মেয়ে তাঁর। ছেলের নাম দীপক, মেয়ের নাম শীতল। ধোনি ভক্ত বলছেন, ”পুরোহিত আমার ছেলে-মেয়ের নাম রেখেছেন। পরে উপলব্ধি করি দীপকের নামের আদ্যক্ষর ডি। ডি ফর ধোনি। আর শীতলের এস। এস ফর সাক্ষী। ঈশ্বর সবাইকে জুড়ে রেখেছেন।” 

[আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য ‘স্ল্যাপ শটে’ গিলের ছক্কা, স্তম্ভিত রোহিত]

সংসার ছেড়ে, ঝড়-বৃষ্টি-রোদ উপেক্ষা করে দেশের টানে, প্রিয় নায়কের জন্য স্টেডিয়ামে-স্টেডিয়ামে ছুটে যান রাম বাবু। তার বিনিময়ে তিনি যে কিছুই চান না। ধোনির সুপারফ্যান বলছেন, ”হাজার-হাজার মানুষ অর্থের পিছনে ছুটছে। আজকের দিনে অর্থ ছাড়া কিছু হয়ও না। দুঃখের কথা আমি আজ পর্যন্ত বিসিসিআই বা সিএসকে বা কোনও ক্রিকেটারের কাছে কিছু চাইনি। এখন আমি-সুধীর গৌতম বিদেশেও পরিচিত। আমাদের দেখে বিদেশের মাঠে দর্শকরা বলেন, ভারতের সুপারফ্যান এসেছে। ভাল লাগে।”
চাকরি করেন না। ব্যবসাও নেই। ছোটখাটো কাজ করে যা অর্থ পান, তাই সঞ্চয় করেন। সেই অর্থ দিয়ে দেশ-বিদেশে খেলা দেখতে যান, দেশকে সমর্থন করেন। রাম বাবু বলছেন, ”কেউ আমার টিকিট বুক করে দেন, কারওর বাড়িতে থেকে যাই, অল্প কিছু খেয়ে নিই। দেশের জন্য, ধোনি-স্যরের জন্য ভেন্যুতে পৌঁছে যাই। যা করি মন দিয়ে করি।” 


মনের ডাককে উপেক্ষা করতে পারেন না রাম বাবু। তাঁর হৃদয় এখন থেকেই বলতে শুরু করে দিয়েছে, ধোনিই আহমেদাবাদে ট্রফি হাতে তুলবেন। ফাইনালের পরের দিন ভুবনজয়ী অধিনায়কের আশীর্বাদ নেবেন। তাঁর সঙ্গে ছবি তুলবেন। সেই মুহূর্তের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই।  

[আরও পড়ুন: বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু মোহনবাগানের]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement