দুলাল দে: চলতি আইএসএল শেষ হলেই পরের মরশুমের টুর্নামেন্টে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানকে খেলাতে নতুন ‘বিড’ আহ্বান করা হবে। এর মধ্যে কলকাতার দুই প্রধানকে বিড পেপার ঠিকঠাক জমা দেওয়ার জন্য তৈরি হতে হবে। ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে তেমন চিন্তা নেই। অনেক আগেই দলের সঙ্গে ইনভেস্টর যুক্ত হয়েছে। আশঙ্কার কারণ নেই মোহন সমর্থকদেরও। বাগান কর্তারাও ‘এফএসডিএল’ এবং ফেডারেশনের শীর্ষকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদেরও ইনভেস্টর তৈরি। যে মুহূর্তে আইএসএলে নতুন দল নেওয়ার দরপত্র আহ্বান করে হবে, নতুন ইনভেস্টরের নাম মোহনবাগান জানিয়ে দেবে। ১৫ কোটি টাকা জমা দিতে সবুজ-মেরুনেরও অসুবিধা নেই।
কলকাতায় এসে মিনার্ভা কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজ যতই ক্ষোভ দেখান, মোদ্দা কথা সামনের মরশুম থেকে আই লিগ নাম আর থাকছে না। শীর্ষ লিগের নাম আইএসএল। আর বর্তমান আই লিগ হবে লিগ ওয়ান। সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বাণিজ্যজগতে আই লিগের ব্র্যান্ড ভ্যালু এখন অনেক কম। ২০১০-এ আইএমজি-রিলায়েন্স নতুন কোম্পানি এফএসডিএলের নামে ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়, তখন থেকেই আই লিগ দেখানোর জন্য টিভি চ্যানেল পেতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে। প্রথমে কলকাতার স্থানীয় দুই চ্যানেল আই লিগ দেখায়। এফএসডিএল অনেক চেষ্টায় নিয়ে আসে টেন স্পোর্টসকে। এরপর ‘সোনি’ যখন টেন স্পোর্টস অধিগ্রহণ করে, ফেডারেশনকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, আই লিগ সম্প্রচার করে আর্থিক লাভ দেখতে পাচ্ছে না তারা। তখন এফএসডিএল নিয়ে আসে স্টার স্পোর্টসকে। ফেডারেশন স্টার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে, আইএসএলের পাশাপাশি আই লিগের ম্যাচও সম্প্রচার করতে। বলা হয়েছিল, এক মরশুম আই লিগ দেখিয়ে যদি চ্যানেলের বাণিজ্যিক ভাবে লাভ না হয়, তখন দ্বিতীয় মরশুমে চুক্তি পুনর্নবিকরণ নিয়ে ভেবে দেখতে। সেই মতো আইএসএলের পাশাপাশি আই লিগের ৯০ ম্যাচের মধ্যে ৮৮টা গত বছর দেখায় স্টার। যদিও তাতে আর্থিক লাভ হয়নি চ্যানেলের। তা সত্ত্বেও চলতি মরশুমে ফের ফেডারেশন থেকে অনুরোধ যায়। ঠিক হয়, আই লিগের ৮০টা ম্যাচ দেখাবে স্টার চ্যানেল। স্বভাবতই মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ বেশি গুরুত্ব পায়। কারণ তাদের সমর্থক সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
মিনার্ভা কর্ণধার তাদের দলের ম্যাচ দেখানো হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ করেছেন, তা নিয়ে ফেডারেশনের ব্যাখ্যা মিনার্ভা ম্যাচে ৪০০-৫০০ দর্শক মাঠে আসে। স্টার তাদের ব্যবসা দেখবে। সেক্ষেত্রে তাদের মিনার্ভা ম্যাচ দেখিয়ে লাভ নেই, তাই দেখানো হচ্ছে না। তবে অভিযোগের সরকারি ভাবে উত্তর দেবে না ফেডারেশন। প্রতি বছর এফএসডিএল ৫০ কোটি টাকা দেয় ফেডারেশনকে। সেই টাকায় বিভিন্ন বয়সের জাতীয় দলের খরচ-সহ আই লিগ চলছে ভারতীয় ফুটবলে। আর লক্ষ্য হল, দেশের দুই প্রধান শক্তি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানকে আইএসএলে ঢুকিয়ে নিতে পারলে, আই লিগের আর দরকার থাকবে না। আইএসএল এবং আই লিগ দু’টোই থাকলে বিজ্ঞাপনদাতাদের মধ্যেও ভ্রম তৈরি হতে পারে, কোন লিগ দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগ? তাই ঠিক হয়েছে, শীর্ষ লিগ হবে আইএসএল। তবে অন্য লিগের ক্লাব কর্ণধাররা যদি নিজেরা তাঁদের ম্যাচের টিভি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেন, তাতে ফেডারেশনের সমস্যা নেই বলে সূত্রের খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.