স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি নথিভুক্ত হয়ে গেল মোহনবাগান ক্লাব। যা এত দিন ছিল না। এর সঙ্গে সঙ্গে তিনটে ‘ট্রেডমার্ক’ হয়ে গেল শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের। এক, সবুজ-মেরুন রং। দুই) পালতোলা নৌকার লোগো। তিন) মোহনবাগান নাম। আসলে মোহনবাগান ক্লাবের এতদিন ফুটবল দল চলেছে মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের নামে। সেই কোম্পানির শেয়ার ছিল চারজনের হাতে। এবার পুরো কোম্পানির শেয়ার ভোগ করবেন ক্লাবের সদস্যরা। অর্থাৎ ভোটে জিতে আসার তিন মাসের মধ্যেই প্রতিশ্রুতি পালন করল শাসকগোষ্ঠী।
আট বছর আগে ইস্টবেঙ্গল সরকারি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে। মহামেডানও নাকি ক্লাব রেজিস্ট্রেশন করেছে। তা হলে কেন এত দেরি হল মোহনবাগানের? প্রশ্নের উত্তর দিতে কেউ প্রথমে চাইছিলেন না। পরে ক্লাব সচিব টুটু বোস বলেন, “কেন হয়নি বলব না। শুধু এটুকু বলব, টুম্পাই (সহকারী সচিবের ডাকনাম) বা দেবাশিস (দত্ত) কেন নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করেছিল নিশ্চয় তা আর বলে দিতে হবে না।” দেবাশিস বলছিলেন, “টুটুবাবু বিদেশি চিমাকে খেলানো সহ মোহনবাগানের বহু ইতিহাস গড়ার সাক্ষী। এবার সদস্যদের হাতে শেয়ার তুলে দিয়ে আরও একটা ঐতিহাসিক ঘটনার নায়ক হয়ে রইলেন। এতদিন আমরা স্পনসরের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলাম না। এখন কথা বলতে বাধা নেই। তা ছাড়া ক্লাব রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে আমাদের টেন্টের ঠিকানায়। যা ময়দানের অন্য কোনও ক্লাব করেনি। নিশ্চয়ই এরপর আর কেউ টুটুবাবুকে ক্লাব কুক্ষিগত করে রাখার কথা বলবেন না।”
[থিম মোহনবাগান, সবুজ-মেরুন পোশাকেই বিয়ে সারলেন শান্তিপুরের সুমন]
পরের আইএসএলের বিড শুরু হওয়ার আগেই নতুন স্পনসরের নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দিল মোহনবাগান। বৃহস্পতিবার ছিল সবুজ-মেরুনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা। সভার পর ক্লাবের সভাপতি গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে সচিব টুটুবাবু ঘোষণা করলেন, আইএসএল বিড শুরু হওয়ার আগেই তাঁরা নতুন স্পনসরের নাম জানিয়ে দেবেন। “তিনটে স্পনসরের সঙ্গে কথা চলছে। আশা করি আইএসএল খেলার আগে আমরা স্পনসরের নাম ঘোষণা করে দিতে পারব।” বললেন সচিব। পাশে বসা অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত যোগ করলেন, “যাদের আমরা আনতে চলেছি তাদের নাম আপনারা সকলেই জানেন। ঘরে-ঘরে তাদের একটা পরিচিতি আছে। তাই তারা এলে সমস্যা হবে না।”
পড়শি ক্লাব ইস্টবেঙ্গল চালাচ্ছে কোয়েস। তারাই যাবতীয় অর্থ খরচ করছে। ফলে ক্লাবকর্তারা হয়ে গিয়েছেন ঠুঁটো জগন্নাথ। মোহনবাগানের দশাও কি তেমন হবে? প্রশ্নের জবাবে দেবাশিস বললেন, “যারা অর্থ দিচ্ছে তাদের নজরদারি থাকতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, টেকনিক্যাল কমিটির কোনও কাজ থাকবে না। অথবা আমরা ক্লাবের দৈনন্দিন কাজ থেকে উধাও হয়ে যাব। এটুকু বলতে পারি, যা করতে চলেছি তা মোহনবাগানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। ক্লাবের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কিছু করব না।” ততক্ষণে বাগানজুড়ে হাততালি পড়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.