স্টাফ রিপোর্টার: ছবিটা শনিবারের। মোহনবাগান টেন্ট থেকে বেরনোর মুখে হাওড়া থেকে আসা অনীক দত্ত অস্ফুট স্বরে বলে ফেললেন, “সবই আছে। কিন্তু সেই আনন্দ বা উচ্ছ্বাসটা নেই। কোথাও যেন অনুষ্ঠানে তাল কেটে গিয়েছে।” শুধু অনীক নন, মোহনবাগানিদের মনের এটাই আসল কথা। ঝলমলে আলো, সানাইয়ের সুর, লোকজনের আনাগোনা, উৎসব মুখর
পরিবেশ-সবই আছে। শুধু নেই আবেগ। যা মানুষকে অনায়াসে কাছে টেনে নিতে পারে।
প্রতিবারের মতো এবারও মোহনবাগান দিবস অনুষ্ঠান হবে। আজ, রবিবারের এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সাজসাজ রব ক্লাব জুড়ে। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেন একে অপরকে ঠেলে দিয়েছে অনেক দূরে। এতদিন কি বিরোধী শিবির ছিল না? ছিল। কিন্তু ঘরের মধ্যে ভাঙনটা ছিল না। তথাকথিত বিরোধীরা এলেও কখনও সম্মানহানি ঘটেনি। এবার যে ঘটবে তার কোনও মানে নেই। সভাপতি টুটু বোস, সহ-সচিব সৃঞ্জয় বোস ও অর্থসচিব দেবাশিস দত্তকে বিশেষ আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। স্বয়ং সচিব অঞ্জন মিত্র ফোন করে এই তিনজনকে অনুষ্ঠানে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এমন ঘটনা মোহনবাগানের ইতিহাসে ঘটেছে কি না সন্দেহ। তাহলে কি সৃঞ্জয়, দেবাশিসরা আসবেন? যা জবাব পাওয়া গেল তাতে জোর দিয়ে কোনও কিছুই বলা যাচ্ছে না। আসতেও পারেন, নাও পারেন। এঁরা আসুন কিংবা না আসুন, মোহনবাগানের প্রথম শ্রেণির বহু প্রাক্তন কর্তাকে দেখা যাবে বলে মনে হয় না। অভিমানে দূরে সরে থাকাকেই শ্রেয় বলে তাঁরা মনে করছেন।
প্রতিবারের মতো এবারও মোহনবাগান রত্ন থেকে শুরু করে করুণাশঙ্কর ভট্টাচার্য পুরস্কার, তরুণ ফুটবলারদের স্বীকৃতি প্রদান, সবই থাকবে। এবার মোহনবাগান রত্ন পাচ্ছেন প্রদীপ চৌধুরি। যদিও বহু প্রাক্তন খোলামনে এই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেননি। ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্য তো বলেই ফেললেন, “চৌধুরির (এই নামেই প্রদীপকে ডাকেন) জায়গায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবার মোহনবাগান রত্ন দেওয়া উচিত ছিল। তাই বলে চৌধুরি এই পুরস্কার পেয়েছে বলে আমি অখুশি বলব না। কিন্তু প্রসূনের অবদান অনেক বেশি। দশ বছর খেলেছে। সেখানে চৌধুরি খেলেছে ছ’বছর। তাহলে কেন প্রসূনকে দেওয়া হবে না? আসলে ক্লাব রাজনীতির শিকার হয়ে গেল প্রসূন। তবু বলব, এই পুরস্কারের ক্ষেত্রে অন্তত রাজনীতি করা উচিত হয়নি।” সুব্রতর দাবি, মোহনবাগান রত্ন বাছাইয়ের জন্য একটা কমিটি করা প্রয়োজন।
এবার ঠিক হয়েছে গোষ্ঠ পালের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শুরু হবে ক্লাবের অনুষ্ঠান। প্রথমেই রাখা হয়েছে দুপুর আড়াইটায় প্রাক্তনদের ফুটবল ম্যাচ। তারপরে সন্ধ্যা ছ’টায় শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। যেখানে প্রাক্তন অধিনায়কদের হাতে তুলে দেওয়া হবে গোল্ডেন কার্ড। বর্তমানে ৩৯ জন জীবিত অধিনায়ক রয়েছেন। চুনী গোস্বামী থেকে শিল্টন পাল প্রত্যেকে এই গোল্ডেন কার্ড দেখিয়ে মোহনবাগানের যাবতীয় খেলা দেখতে পারবেন। বসতে পারবেন ভিআইপি বক্সে। রত্ন প্রাপক প্রদীপ চৌধুরির হাতে তুলে দেওয়া হবে এক লাখ টাকা। ক্রিকেটার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া হবে স্মারক-সহ ২০ হাজার টাকা। তরুণ দুই ফুটবলার রহিম আলি, সৌরভ দাসকে সম্মান জানানো হবে। মন্ত্রিসভার বহু সদস্য উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.