স্টাফ রিপোর্টার: চেন্নাই ম্যাচে মিনার্ভার ফুটবলারদের আচরণ নিয়ে এতদিন ইস্টবেঙ্গল যে অভিযোগ করে এসেছে, এবার তাকে মান্যতা দিলেন ম্যাচ কমিশনার বালাসুব্রমনিয়াম এবং রেফারি অ্যাসেসর বিক্রমজিৎ। তাঁরা দু’জনে সরকারি রিপোর্টে অভিযোগ করেননি। পরে আই লিগ সিইও সুনন্দ ধরকে ইমেল করে মিনার্ভার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। যার মধ্যে চক্রান্ত দেখছে ফেডারেশন। ফলে মিনার্ভার ফুটবলারদের মতো ম্যাচ কমিশনার এবং রেফারি অ্যাসেসরও তদন্তের মুখে পড়ছেন। এর কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। অ্যাসেসর বিক্রমজিতের কাজ রেফারিকে পর্যবেক্ষণ করা। তিনি মাঠে বসে কী দেখলেন! তিনি কি ইচ্ছে করে রিপোর্টে এ সব উল্লেখ করেননি? তাই যদি হয়, তাহলে সেটা তো অপরাধ। এবং প্রমাণ হলে বড় শাস্তি পাওয়া উচিত।
সরকারি রিপোর্টে না লিখলেও পরে গোপন ইমেলে সুনন্দ ধরকে ম্যাচ কমিশনার এবং রেফারি অ্যাসেসর জানিয়েছেন, সেদিন জেতার জন্য চেন্নাইয়ের ফুটবলারদের স্পিরিটে অভাব না থাকলেও, মিনার্ভার খেলায় কিছুই ছিল না।” এই ইমেলে আলোড়ন পড়েছে ভারতীয় ফুটবলে। এ খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত লাল-হলুদ কর্তারা। মনে করছেন তাঁদের অভিযোগকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “ফেডারেশন কী করবে জানি না। কিন্তু মিনার্ভা সেদিন ফুটবলটা খেলেনি, এই অভিযোগ আমরা করেছিলাম। ফেডারেশনের লোক হিসেবে ম্যাচ কমিশনার এবং রেফারি অ্যাসেসর আমাদের অভিযোগের মান্যতা দিলেন। ম্যাচ কমিশনার নিজে ম্যাচটা ঘিরে যখন সন্দেহ প্রকাশ করছেন, তখন অনেক প্রশ্ন উঠে আসে। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।”
ফেডারেশন কর্তারা বুঝতে পারছেন না, ম্যাচ কমিশনার এবং রেফারি অ্যাসেসর কেন এমন করলেন? ম্যাচ শেষে দু’জনকেই অনলাইনে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে রিপোর্ট পাঠাতে হয়। সেখানে ম্যাচ নিয়ে রিপোর্ট পাঠান ম্যাচ কমিশনার। রেফারিং নিয়ে রিপোর্ট দেন রেফারি অ্যাসেসর। সেখানে তাঁরা ম্যাচ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তুললেন না কেন? কেন পরে ব্যক্তিগত ইমেল করলেন? ম্যাচ নিয়ে বলার এক্তিয়ার ম্যাচ কমিশনারের। তাহলে এরকম ইমেল করলেন বিক্রমজিৎ? ফেডারেশন সচিব কুশল দাস বিরক্তির সঙ্গে বললেন, “সরকারি রিপোর্টে সেদিনের ম্যাচ নিয়ে ওরা অভিযোগ করেননি। অথচ পরে ইমেল পাঠিয়ে বসলেন। ওদের তদন্তের সামনে দাঁড়াতে হবে। দেখা যাক, এর মধ্যে অন্যরকম চক্রান্ত আছে কিনা।’’
সরকারি রিপোর্টে না থাকলেও দু’জনেই ইমেলে মিনার্ভা ফুটবলারদের নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাই ফেডারেশন জাভদে সিরাজকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করল। কুশলবাবু বললেন, “ম্যাচে নজর রাখতে আগেই জাভেদ সিরাজকে পাঠানো হয়েছিল। আমরা এএফসিকেও জানিয়েছিলাম। এএফসির ম্যাচ র্যাডার সিস্টেম কাজ করেছে। তারপর জাভেদ সিরাজের রিপোর্ট এবং এএফসি রিপোর্টে কোথাও সন্দেহর কথা লেখা নেই। তবু তদন্ত হবে। মিনার্ভা ফুটবলারদের জেরা করা হবে। পার পাবেন না ম্যাচ কমিশনার, রেফারি অ্যাসেসরও।”
মুশকিল হচ্ছে, ম্যাচ কমিশনার এরকম রিপোর্ট জমা দিলেও তার ভিত্তিতে ম্যাচের রেজাল্টের বদল হবে না। ম্যাচ কমিশনার লিখেছেন, চেন্নাইয়ের খেলায় স্পিরিটের অভাব ছিল না। তাই ওরা জেতার পর তা বদলানো হবে কীভাবে? ফেডারেশন সচিব বললেন, “কোনও কোচ যদি তিনজন বিদেশিকে এক সঙ্গে তুলে নেন, তা হলে ফেডারেশন কী ভাবে কোচকে নির্দেশ দেবেন কোন ফুটবলারকে খেলাতে হবে। কাকে তুলে নেওয়া যাবে। কোচ কাকে খেলাবে এটা সম্পূর্ন তাঁর ক্লাবের এবং তাঁর সিদ্ধান্ত।”
এদিকে, কোয়েস ম্যাচের ভিডিও ক্লিপিংস তাদের লিগাল সেলের কাছে পাঠিয়েছে। তাঁরা এখন উত্তরের অপেক্ষায়। দু’এক দিনের মধ্যে রিপোর্ট এলে ম্যাচ কমিশনার এবং রেফারির অ্যাসেসরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে ইমেল পাঠানো হবে। তার আগে অবশ্য বিতর্কিত ম্যাচ নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে ফেডারেশন। তাই এই রিপোর্টের দিকে এখন আর তাকিয়ে থাকার দরকার নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.