স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন রঞ্জি ট্রফির প্রাথমিক দল নির্বাচনের আর দিন দুয়েক বাকি। কিন্তু তার আগেই বঙ্গ ক্রিকেটের আকাশ ঢেকে গেল আশঙ্কার বজ্রগর্ভ মেঘে। অতীব দুঃখে, তীব্র অভিমানে বাংলা টিমের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে চাইছেন মনোজ তিওয়ারি!
প্রথমত, দলীপ ট্রফিতে বাংলা থেকে ডাক পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে না থাকা। তার উপর সিএবি-র বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচনে ‘উপেক্ষিত’ থেকে যাওয়া। দুইয়ে মিলে মনোজ এতটাই আশাহত আর যন্ত্রণাক্লিষ্ট যে, বাংলার অধিনায়ক আর তিনি থাকতে চাইছেন না। যে খবর বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসন তো বটেই, স্থানীয় ক্রিকেটমহলেও তোলপাড় ফেলে দিয়েছে।
দিন তিনেক আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন সিএবি যাঁকে বর্ষসেরা ক্রিকেটার বেছে নেয়, তিনি অধিনায়ক মনোজ নন। বাংলার ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরণ। ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিমন্যু আগামী প্রজন্মের অন্যতম সেরা নিঃসন্দেহে। কিন্তু বাংলা অধিনায়ক মনোজ কম কোথায়? রঞ্জিতে ৮ ম্যাচে ৪৬১ রান করেছিলেন। গড় ৩৫.৪৬। বিজয় হাজারে ট্রফিতে ৬ ম্যাচে ৩২৮ রান। গড় ১০৯.৩৩। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে ৮ ম্যাচে ১৩৩ রান। গড় ২৬.৬০। অভিমন্যু ঈশ্বরণ সেখানে রঞ্জিতে ৭ ম্যাচে ৫৬৪ রান। গড় ৪৭। বিজয় হাজারে ট্রফিতে ৫ ম্যাচে ২৮১ রান। গড় ৫৬.২০। টি-টোয়েন্টি তিনি গত মরশুম খেলেনইনি। আর যতই অভিমন্যু-সুদীপ চট্টোপাধ্যায়রা উঠে আসুন, ভাল খেলুন। চাপের মধ্যে বাংলার শ্রেষ্ঠ বাজি আজও তার অধিনায়কই। অথচ সেই মনোজকেই বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে ভাবা হয়নি। সেই মনোজকেই বাইরে রেখে দলীপ ট্রফিতে বাংলা থেকে পাঁচ জন ক্রিকেটারকে ডেকে নেওয়া হয়েছে। যার পরিণাম এদিন আচমকা সিএবিতে উপস্থিত হয়ে বাংলা অধিনায়কত্ব থেকে ইস্তফা দিতে চাওয়া!
শোনা গেল, একটা ব্যাপার বাংলা অধিনায়ককে প্রবল আঘাত করেছে। তা হল, তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন ওঠা। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, প্রশ্নগুলো তুলেছেন একজনই। বাংলার নির্বাচক মদন ঘোষ। অভিযোগ, মদন নাকি নিত্য গিয়ে সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগনামা পেশ করতেন মনোজ নিয়ে! তিনি নাকি বলতেন যে, অধিনায়ক মনোজ আর কোচ সাইরাজ বাহুতুলে কারও কথা শুনতে চান না। এসব কথায় ক্ষতি হয়েছে মনোজের ভাবমূর্তির। বলাবলি চলছে, বঙ্গ নির্বাচক মদন সাকুল্যে চোদ্দেটা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন! রান করেছেন ৬৭ আর উইকেট নিয়েছেন ৩৩। তিনি কি না নিয়মিত বলে যাচ্ছেন মনোজ নিয়ে! প্রশ্ন উঠছে, সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও বা এসবকে পাত্তা দিতে গেলেন কেন? বিচার তো তিনিই দেবেন।
মনোজ নিজে ক্যাপ্টেন্সি ছাড়া নিয়ে একটা কথাও বলেননি। তবে দুঃখী ভাবে দলীপের টিমে উপেক্ষিত থাকা নিয়ে এ দিন সিএবিতে বলে ফেলেছেন, “আমি আর কী বলব? সবই তো দেখছেন। গত মরশুমে আমি কী পারফর্ম করেছি, সেটাই সবাই জানে। বুঝতে পারছি না দলীপের টিমে সুযোগ পাওয়ার মানদণ্ডটা ঠিক কী? বিজয় হাজারেতে একশোর উপর গড় ছিল আমার। কে জানে, আমাকে হয়তো ১৪০-১৫০ রাখতে হবে। সুনীল গাভাসকর একটা কথা সবসময় বলেন, কড়া নাড়িয়ে দরজা না খুললে, তাহলে সেটাকে ভেঙে ফেলতে হবে। আপাতত সেটাই করতে চাই। সামনের মরশুমে আরও ভাল পারফর্ম করতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.