সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টেনিসপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ। ভারতের কিংবদন্তি টেনিস মহাতারকা লিয়েন্ডার পেজ অবসরের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিলেন। বলে দিলেন, আগামী বছরই শেষ। তারপর তিনি আর খেলবেন না।
বুধবার রাতের দিকে নিজের টুইটার হ্যান্ডলে পেজ লিখে দেন, ‘আগামী বছরই পেশাদার টেনিস ছেড়ে দিচ্ছি আমি। সামনের বছর বেছে বেছে কয়েকটা টুর্নামেন্ট খেলব। টিমের সঙ্গে নানা জায়গায় ঘুরব। বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করব। পৃথিবীজোড়া সমর্থকদের সঙ্গে হইহই করব। যে জায়গায় আজ আমি, তা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে আপনাদের জন্য। আপনারাই আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন খেলার। তাই হৃদয় থেকে আপনাদের বড়সড় একটা ধন্যবাদ দিতে চাই।’
এসব শুনে আপামর টেনিসপ্রেমীদের শোকার্ত হয়ে পড়াই স্বাভাবিক। লিয়েন্ডার পেজ শুধুমাত্র তো টেনিস তারকা ছিলেন না। ছিলেন আবেগ-জাতীয়তবাদ-অনুপ্রেরণার চলমান এক প্রতিমূর্তি। শতাধিক ট্রফি জিতেছেন, ক্যাবিনেটে আছে আঠারোটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ডাবলস খেতাব। তবে গত কয়েক বছর ধরে সময়টা বিশেষ ভাল যাচ্ছিল না ছেচল্লিশ বছর বয়সী টেনিস মহাতারকার। শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন ২০১৬
সালের ফরাসি ওপেনের মিক্সড ডাবলসে। মার্টিনা হিঙ্গিসকে নিয়ে। ডেভিস কাপের ইতিহাসে সর্বাধিক জয়ের (৪৪) ইতিহাস সৃষ্টি করা লিয়েন্ডার পেজ, সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম একশো টেনিস তারকা র্যাংকিং তালিকা থেকে ছিটকে যান।
কিন্তু তাতে তাঁর গরিমা এতটুকু কমে না। তিন দশকের কেরিয়ারে তাঁর যা যা মণিমুক্তো, তার পাশে ছুটকোছাটকা এই র্যাংকিং কি কোনও স্থান পেতে পারে? র্যাংকিং নিয়ে কবেই বা লিয়েন্ডারের মতো প্রজন্মের পর প্রজন্মের উপর মোহিনী ছায়া তৈরি করা ক্রীড়াবিদের মূল্যায়ণ হয়েছে? লিয়েন্ডারই দেশের একমাত্র টেনিস খেলোয়াড়, যিনি অলিম্পিকে পদক জিতেছিলেন। ’৯৬-এর আটলান্টা অলিম্পিকের সেই ব্রোঞ্জ জয়
আজও তো ভুলতে পারেনি দেশ। আর শুধু তাই নয়। মহেশ ভূপতিকে সঙ্গে নিয়ে নয়ের দশকে তিনি যে বিশ্বজোড়া দাপট দেখিয়ে গিয়েছেন, তিন-তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব যে ভাবে জিতেছেন দু’জনে, যে ভাবে এক নম্বর র্যাংকে উঠে এসেছিলেন দু’জনে – সেসবও ভোলা অসম্ভব। মতবিরোধে জুটি ভেঙে যাওয়ার আগে রেকর্ড চব্বিশ ম্যাচ টানা অপরাজিত ছিল লি-হেশ জুটি।
সেই লি আর নামবেন না। বিদায় ঘোষণা করে নিজের পরিবারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন লিয়েন্ডার। লিখেছেন, ‘আমার পরিবার যেভাবে আমাকে গাইড করেছে, পাশে থেকেছে, নিঃশর্ত ভালবাসা দিয়েছে, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তোমরা পাশে না থাকলে, তোমরা ভাল না বাসলে, আমি এই জায়গায় আসতেই পারতাম না।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের লিয়েন্ডার জিজ্ঞাসাও করেন যে, তাঁকে নিয়ে সেরা স্মৃতি কী? লেখেন, ‘২০২০ আমার জন্য খুবই আবেগঘন বছর হবে। আমি চাই, আপনারা আমার সঙ্গে শেষ বারের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ুন।’ তবে একেবারে শেষে দুঃখ নয়, আবেগ নয়, নতুন শপথ নিয়ে ইতি টানলেন লিয়েন্ডার। শেষ সিংহগর্জনের শপথ – ২০২০ তে শেষবারের মতো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.