Advertisement
Advertisement

Breaking News

ধোনি

আজ ধোনির সঙ্গে মগজাস্ত্রের লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা রাসেলের

চিপকের ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়েছে।

KKR to face CSK in a high voltage match at Chipak
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:April 9, 2019 10:21 am
  • Updated:April 9, 2019 10:24 am  

লক্ষ্মীরতন শুক্লা: আইপিএলে প্রত্যেকটা টিমেরই কোনও না কোনও একটা ম্যাচ থাকে, যা টুর্নামেন্টে তাদের ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেয়। বলতে চাইছি, সেই টিমটা টুর্নামেন্টে কেমন করবে, কত দূর যাবে, চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে কি না- অনেকটাই ঠিক করে দেয় ওই নির্দিষ্ট ম্যাচ। একটা নয়, কেকেআরের কাছে চিরকাল এরকম দু’টো ম্যাচ টুর্নামেন্টে তাদের গতিপথ ঠিক করে এসেছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আর চেন্নাই সুপার কিংস।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স নিয়ে কেকেআরের আবেগের জায়গা বরাবরই বেশি। টিমের মালিক শাহরুখ খানের শহর মুম্বই। আইপিএলে শুরুর দিকে ক্রমাগত হারতে থাকা কেকেআরের কাছে শাহরুখ একবার মেসেজও পাঠিয়েছিল যে, “আমি তোমাদের থেকে কখনও কিছু চাইনি। শুধু আমাকে তোমরা মুম্বই ম্যাচটা জিতে দাও।” ঘটনাটা জানি আমি, নিজে তখন কেকেআরে খেলতাম। কিন্তু আমাদের, কেকেআরের ক্রিকেটারদের কাছে টুর্নামেন্টের ‘দ্য ম্যাচ’ সব সময় একটাই ছিল। মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস! সিএসকের কাছে আমরা বহু বার হেরেছি। আবার সিএসকেকে হারিয়ে আমাদের প্রথম আইপিএল জয়। আসলে চেন্নাই ম্যাচ জিতলে যে আত্মবিশ্বাসটা আমরা কেকেআর ক্রিকেটাররা পেতাম, সেটা পরের কয়েকটা ম্যাচে আমাদের আপনাআপনি ছোটাত। আবার হেরে গেলে ধাক্কাটা সামলাতে লাগত কয়েকটা দিন। কী জানেন, সিএসকের বিরুদ্ধে ম্যাচ মানে আপনাকে একসঙ্গে দু’টো ম্যাচ খেলতে হবে। প্রথমটা সিএসকের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়টা ধোনির বিরুদ্ধে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কবে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা? জানিয়ে দিল বিসিসিআই]

আমার মতে, মঙ্গলবার তাই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে কেকেআর। যেখানে দীনেশ কার্তিকের অধিনায়কত্ব থেকে আন্দ্রে রাসেলের মাসল- সব কিছুর নাগাড়ে পরীক্ষা নিয়ে যাবে একজন। সরি, একটা মস্তিষ্ক। ধোনির মস্তিষ্ক। উইকেটের পিছনে ধোনি থাকলে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের মনের উপর যে কী চাপ সৃষ্টি হয়, সেটা আমরা যারা ওর বিরুদ্ধে আইপিএল খেলেছি তারা জানি। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে মাঝে মাঝে দু’একটা যা সেনটেন্স বলবে, সেটাই ব্যাটসম্যানের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বোলারকে বলতে থাকবে, ইসকো ইধার ডাল। উধার ডাল। আর ব্যাটসম্যানের আপনাআপনি নিজের উপর সন্দেহ তৈরি হতে থাকবে। ধোনি কিপিং করা মানে ব্যাটসম্যানকে দু’ভাবে চাপে ফেলা। স্কিলে। প্ল্যানিংয়ে। তার উপর চিপকে খেলবে কেকেআর। সিএসকে সমর্থকদের অদ্ভুত ব্যাপার হল, বিরামহীনভাবে ওরা সিএসকে সিএসকে চেঁচিয়ে যাবে। গ্যালারির যে দিকে তাকাবেন, শুধু হলুদ। সব মিলিয়ে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের কাছে যা দুঃসহ ব্যাপার।

তাছাড়া সিএসকে এবার খেলছেও দারুণ। তবে ডোয়েন ব্র্যাভো চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় ওদের ডেথ বোলিং যথেষ্ট দুর্বল। কিন্তু ধোনি তারপরেও ঠিক ম্যাচের পর ম্যাচ বার করে দিচ্ছে। দু’জনকে দারুণ ব্যবহার করে খেলা পুরো পালটে দিচ্ছে। হরভজন সিং আর ইমরান তাহির। এদিকে কেকেআরের সেরা শক্তি যে আন্দ্রে রাসেল, সেটা এখন যে কেউ বুঝতে পারছে। আর আমার মনে হয়, হরভজন নয়। রাসেল বধে ইমরান তাহিরকে কাজে লাগাবে ধোনি।

[আরও পড়ুন: স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগের খোলাখুলি উত্তর দিলেন সৌরভ]

কেকেআর টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত সত্যি ভাল খেলছে। চিপকের স্লো টার্নারে ওদের সুবিধেও হবে তিনটে আর্ন্তজাতিক মানের স্পিনার টিমে থাকায়। সব মানছি। কিন্তু প্রথম চারটে ম্যাচের তিনটেয় কেকেআরকে জিতিয়েছে রাসেল। তবে রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে কোনও কম্পিটিশনই হয়নি কেকেআরের। কিন্তু সিএসকে ম্যাচে সেটা হবে না। বরং মনে হচ্ছে, মঙ্গলবারই প্রথম চাপে পড়বে রাসেল। ও নামলে তাহিরকে দিয়ে অফস্টাম্পের কিছুটা বাইরে বল করাতে পারে ধোনি। বলের গতি কমিয়ে। সেই চ্যালেঞ্জটা রাসেল কীভাবে সামলায়, দেখতে চাই। যদিও রাসেল এই মুহূর্তে অতিমানবিক ফর্মে আছে। আইপিএলে চাপমুক্তভাবে খেলতে পারে ও। এখানে রাসেল জানে যে, আমি মারব। লোকে চিৎকার করবে। টাকা নিয়ে চলে যাব। ধোনি-বিরাটের ক্ষেত্রে কিন্তু সেই সুবিধেটা নেই । অর্থ নয়, ওদের ভাবতে হয় সম্মান নিয়ে। বলছি না, সেটাই রাসেলের বিধ্বংসী খেলার কারণ। কিন্তু চাপ না থাকাটাও বড় ফ্যাক্টর।

সবশেষে বলি, এটা কিন্তু স্কিলের ম্যাচ নয়। মানসিক যুদ্ধের ম্যাচ। মানসিক ভাবে যে নিজেকে বেশি শান্ত রাখতে পারবে, ম্যাচ তার। আর নিজেকে, নিজের টিমকে যে কোনও পরিস্থিতিতে অদ্ভুত শান্ত রাখার আশ্চর্য ক্ষমতাটা সাইঁত্রিশ বছরের লোকটার আছে বলেই, আসন্ন যুদ্ধে অ্যাডভান্টেজে মহেন্দ্র সিং ধোনি লিখতেই হচ্ছে!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement