সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য বিশেষ আইপিএল কলম লিখছেন গৌতম গম্ভীর৷ কেকেআর অধিনায়ক-এর মতে, ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাচেলরের বাগদান হয়ে গেল৷ এদিকে, রবিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে খেলতে নামছেন নাইটরা। নিজামের শহরেই প্লে-অফের দরজা খুলতে চাইছে তাঁরা।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সঙ্গে আমাদের শেষ ম্যাচে ওদের টিমে কী বদল-টদল হয়েছে দেখার আগে অন্য একটা পরিবর্তনের দিকে আমার চোখ চলে গিয়েছিল৷ জাহির খানের অফিশিয়াল স্ট্যাটাস-এর বদল! ক্রিকেটদুনিয়ার অন্যতম ভদ্র প্লেয়ার বর্তমানে ‘বুকড্’৷ সুখী অবিবাহিতদের ভাষায় বলতে গেলে ‘এনগেজড্’৷ জাকের সঙ্গে প্রচুর খেলেছি৷ বহু ঘোরাঘুরি করেছি৷ ভারতীয় ক্রিকেট দলে যতজনের সঙ্গে খেলেছি, তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে জাক ছিল সবচেয়ে ‘ডিজায়রেবল ব্যাচেলর৷ সঙ্গে যুবরাজ সিংহকে ফেলে দিন৷ মেয়েরা কাকে ছেড়ে কাকে দেখবে ভেবে পেত না৷ একদিকে জাহিরের ওই চোখ, ফুরফুরে হাসি আর উপস্থিতি৷ আরেক দিকে যুবির অ্যাটিটিউড, কথা বলার কায়দা এবং শিভালরি৷
এবার শুক্রবারের ম্যাচের আলোচনায় আসা যাক। ওদিন ইডেনে সঞ্জু বেশ সাবলীল ব্যাটিংই করল৷ আমারাও ভাল বল করিনি৷ পরের দিকে অবশ্য ওদের রানরেটে আমরা লাগাম দিতে পেরেছিলাম৷ বোলিংটাও অনেক ভাল লাইনে করেছি৷ দিল্লির চার টপ ব্যাটসম্যানের এলবিডব্লুউ আউট হওয়াটা যার প্রমাণ৷ আমাদের থেকে সেরাটা এসেছিল দিল্লি ইনিংসের শেষের দিকে৷ যেখানে আমরা বোলিং প্ল্যানটাই পাল্টে ফেলেছিলাম৷ উইকেট তোলার চেষ্টা ছেড়ে ডট বল বেশি করতে চাইছিলাম৷ তারপর আবার বিপক্ষ ব্যাটিংকে শেষ করতে ঝাঁপ দিই৷ ঋষভ পন্থ এবং ক্রিস মরিসের উইকেট দু’টো তোলাটা আমাদের ওই নতুন স্ট্র্যাটেজির ফসল৷ ১৫ ওভারে দিল্লি ছিল দু’উইকেটে ১৩০ রানের আশপাশে৷ ১৮০ বা তার বেশি স্কোরের দিকে এগোচ্ছিল৷ কিন্তু ওদের ইনিংসকে আমাদের বোলাররা যেভাবে আটকে দিল তার জন্য আমি গর্বিত৷
এদিকে, ম্যাচে ব্যাটসম্যান সুনীল নারিনের দিনটা খারাপ গেল৷ তার জন্য আশা করি রবিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কিছু দেখাতে ও আরও ছটফট করবে৷ দিল্লি বোলিংকে আমি ভাল পিটিয়েছি৷ রবিনও তাই৷ সবচেয়ে বড় কথা হল, আমাদের টিমটা এখন মানসিকভাবে খুব ভাল জায়গায় আছে৷ ম্যাচের পর আমাদের সেলিব্রেশনের মাত্রা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে৷ শুক্রবারের উৎসবে ইউসুফ পাঠান সেরা ফর্মে ছিল৷ একেক সময় তো আমার গুলিয়ে যায়, কে বেশি মজাদার– ইউসুফ, না ওর ছেলে আয়ান!
কেকেআরের একটা অভ্যাস হল, আমরা আমাদের ‘গেম চেঞ্জার’ নিজেরাই বেছে নিই৷ এটা অনেকটা মাঠের পুরস্কার অনুষ্ঠানে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’-এর আরেকটা রূপ৷ ব্যাপারটা দলের একাত্মতা ধরে রাখার জন্য আমার একটা পন্থা৷ যেহেতু ম্যাচের সবচেয়ে বড় অবদানটা ম্যান অব দ্য ম্যাচের মাধ্যমে মাঠেই স্বীকৃতি পেয়ে যায়, সে জন্য আমাদের নিজেদের দেওয়া গেম চেঞ্জার পুরস্কারটা হল, ম্যাচের সেই ছোট কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া৷ ছোট অবদান হলেও যেটা কেকেআরের জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ৷ পুরস্কারের মধ্যে থাকে কিছু নগদ টাকা আর সেই টিমমেটের মুখে প্রচুর পরিমাণে কেক মাখানো৷ যদ্দিন জিতে চলেছি, কেক কেনার খরচা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই৷
সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে জেতা কিন্তু কঠিন হবে৷ ওদের শিখর ধবন ফর্মে ফেরায় এবং কেন উইলিয়ামসন টিম কম্বিনেশনে ফিট করে যাওয়ায় সানরাইজার্সের ব্যাটিং এই মুহূর্তে শক্তিশালী৷ পাশাপাশি ভুবনেশ্বর কুমার আর রশিদ খানের উপস্থিতি বেশ একটা চ্যালেঞ্জিং বোলিং লাইন আপ তৈরি করেছে৷ আজ মনে হচ্ছে, আমাদের আরও বেশি ‘গেম চেঞ্জার’-এর দরকার৷
(দীনেশ চোপড়া মিডিয়া)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.