সৌরাশিস লাহিড়ী: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বহু নতুন নায়কের জন্ম দিয়েছে। আর এশিয়া কাপে বুধবারের ম্যাচটা বোলার কেদার যাদবের প্রতিষ্ঠা দিয়ে গেল। বুধবার কেদার পাকিস্তানের কাছে সারপ্রাইজ প্যাকেজ হয়ে দাঁড়াল। ভুবনেশ্বর কুমার, জসপ্রীত বুমরাদের নিয়ে হয়তো প্ল্যানিং করেছিল পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু কেদার যে এভাবে চমকে দিয়ে যাবে, সেটা বোধহয় ওরা ভাবতে পারেনি। বেশকিছু দিন পর আবার আন্তজার্তিক ক্রিকেটে ফিরেছে। আর ফিরেই মনে রাখার মতো একটা স্পেল। মঙ্গলবার হংকংয়ের বিরুদ্ধেও ভাল বল করেছিল। কিন্তু বুধবারের বোলিংটা এ স্পেশ্যাল।
কেদারের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল ও নিজের লিমিটেশনটা খুব ভাল বোঝে। বাড়তি কিছু করতে যায় না। নিজের যা শক্তি, সেই অনুযায়ী বল করে। বুধবার টিভিতে দেখছিলাম কোনও ডেলিভারি একটু সাইড থেকে করছিল। যাতে বিভিন্ন অ্যাঙ্গল তৈরি করা যায়। ওর বোলিং স্টাইলটা অন্যরকম। রাউন্ড আর্ম বোলিং করে। যার জন্য বল পিচে পড়ার পর খুব বেশি বাউন্স করে না। একটু লো থাকে। ব্যাটসম্যানরা সবসময় এই ধরনের বল খেলতে সমস্যায় পড়ে। প্রত্যেক ব্যাটসম্যানই চায় বল ভাল ব্যাট আসুক। তাতে শট খেলতে সুবিধা হবে। কেদারের বোলিং স্পিডও কম। যার জন্য ব্যাটসম্যানরা ইচ্ছেমতো বড় শট খেলতে পারে না। আর দুবাইয়ের এই মাঠ বেশ বড়। কেদারও খুব বুদ্ধি করে বল করছিল। যার জন্য বারবার সমস্যায় পড়েছে পাকিস্তান ব্যাটসম্যানরা।
কেদারের তিনটে উইকেট অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেটা মাথায় রেখেও বলব, শুরুতে ভুবির ওই স্পেল আর কুলদীপের বাবর আজমের উইকেটটা সবচেয়ে ভাইটাল ছিল। বাবর এই পাকিস্তান টিমের সেরা ব্যাটসম্যান। আর শোয়েব মালিকের সঙ্গে একটা পার্টনারিশপও হচ্ছিল। ঠিক তখনই কুলদীপ গুগলিতে আউট করল আজমকে। একজন স্পিনারের কাছে স্বপ্নের ডেলিভারি বলতে যা বোঝায়, ওটা ঠিক তাই ছিল। ব্যাটসম্যানকে ফ্লাইটে বিট করছে। আর একটু হলে পিচের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ত। আমি নিজে একজন স্পিনার। জানি ওইরকম ডেলিভারিতে ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করতে পারলে ঠিক কতটা আনন্দ হয়। ভাগ্য খারাপ কুলদীপের। না হলে আরও একটা উইকেট হয়ে যায়। মিড উইকেটে শোয়েব মালিকের সহজ ক্যাচ ফেলল ভুবনেশ্বর। বলটা ঠিক মতো জাজ করতেই পারেনি। দেখলাম ক্যাচ মিসের পর কুলদীপ একটু চিৎকার করছে, খুব স্বাভাবিক। ম্যাচটা ভারত-পাকিস্তান। আর পাঁচটা ম্যাচের থেকে অনেক আলাদা। প্রত্যেক ক্রিকেটার একটু বেশিই চার্জড আপ থাকে। তাই ওরকম সহজ ক্যাচ পড়লে হতাশ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। সবশেষে চাহালের কথা বলব। উইকেট না পেলেও খারাপ বল করল না। হংকংয়ের বিরুদ্ধেও টাইট বোলিং করেছিল। আর প্রত্যেক দিন যদি সবাই দুর্দান্ত বল করে, তাহলে প্রতিপক্ষ তো একশোও করতে পারবে না। এটাই হল একটা ইউনিট হিসাবে বোলিং করার সুবিধা। একজন উইকেট না পেলেও অন্যজন পুষিয়ে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে ভারতীয় টিমের এই বোলিং ইউনিট যে সেরা, তাতে কারও কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.