সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিযোগ ছিল খুনের। কিন্তু সেই অভিযোগের স্বপক্ষে পোক্ত প্রমাণ তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তবু, গোটা বিশ্বের আপত্তি উপেক্ষো করে আন্তর্জাতিক স্তরের কুস্তিগির নাভিদ আফকারির (Navid Afkari) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান। শনিবার গোপনে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইরানের জাতীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হতেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দুনিয়া। ইরান সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বৈরাচারের নিকৃষ্ট উদাহরণ বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।
আসলে বছর দুই আগে ইরানের সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্তরের কুস্তিগির নাভিদ আফকারি ও তাঁর দুই ভাই। সেসময় ইরানে প্রবল সরকার বিরোধী হাওয়া। বেহাল আর্থিক অবস্থা, বেকারত্ব, দুর্নীতির প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তাদেরই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন নাভিদ। সম্ভবত সেটাই কাল হল। ২০১৮ সালের ২ আগস্ট এক সরকারি কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে খুন করার অভিযোগ ওঠে নাভিদের বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন নাভিদের দুই ভাইও। তাঁদের একজনের ৫৪ বছর এবং একজনের ২৭ বছর জেল হয়েছে। ইরান সরকার ২৭ বছর বয়সি নাভিদকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায়।
কিন্তু নাভিদের সেই সাজার প্রতিবাদ করেছিল গোটা বিশ্বের ক্রীড়ামহল। খোদ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (International Olympic Committee) সভাপতি থমাস বাখ ইরান সরকারের কাছে ওই কুস্তিগিরের প্রাণভিক্ষা করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্পও (Donald Trump) ওই রেসলারকে মৃত্যুদণ্ড না দিতে অনুরোধ করেন। নাভিদের মৃত্যুদণ্ড হলে বয়কট করা হবে ইরানকে। ৮৫ হাজার অ্যাথলিট একযোগে খোলা চিঠি লেখেন। কিন্তু কোনও কথাই শোনেনি ইরান সরকর। গতকাল তাঁকে রাষ্ট্রের নির্দেশে ‘খুন’ করা হয়েছে। কুস্তিগিরের আইনজীবীর দাবি, নাভিদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগের কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি সরকার। জেলে নির্যাতন করে নাভিদকে খুনের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকী, ফাঁসির আগে তাঁর পরিবারের সঙ্গে পর্যন্ত দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। একে স্বৈরাচার ছাড়া আর কীই বা বলা যাবে। নাভিদের মৃত্যুতে ফুঁসছে গোটা বিশ্বের ক্রীড়ামহল। থমাস বাখ (Thomas Bach) বলছিলেন, আইওসি, ইরানের অলিম্পিক কমিটি, বিশ্ব রেসলিং এবং ইরানিয়ান রেসলিং ফেডারেশনের অনুরোধও গ্রাহ্য করা হল না। এটা খুবই হতাশার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.