সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবারের আইপিএলের নতুন সেনসেশন তামিলনাড়ুর মিস্ট্রি স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। নিলামে তাঁকে ৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে প্রীতি জিন্টার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। পঁচিশ বছর বয়সে ক্রিকেটজীবন শুরু করা তামিলনাড়ুর ছেলেটা ভাবতেই পারেননি যে, তাঁর জীবন জয়পুরের এক সন্ধে এভাবে বদলে দিতে পারে! ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর সঙ্গে ফোনে যখন চেন্নাই থেকে কথা বলছিলেন, তামিলনাড়ুর বিস্ময় স্পিনারের গলা কেমন যেন বিহ্বল শোনায়। “আমি ভাবতেই পারিনি এত দাম উঠবে। সাড়ে আট কোটি! ভেবেছিলাম, কুড়ি লক্ষ টাকা বেস প্রাইস দিয়েছি। হয়তো সেটা। নয়তো আর একটু বেশি পাব। কিন্তু সাড়ে আট কোটি দাম উঠবে ভাবিনি,” ফোনে বলছিলেন বরুণ। “জানেন, নিলামে আমাকে নিয়ে চার ফ্র্যাঞ্চাইজির টানাটানি দেখে ভেতরে ভেতরে মারাত্মক উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলাম। ঈশ্বরকে ডাকছিলাম মনে মনে। সত্যি, এখনও কেমন একটা ঘোর ঘোর লাগছে।”
তামিলনাড়ু বিস্ময় স্পিনারের জীবনকাহিনী শুনলে পাঠকেরও ঘোর লাগতে পারে। অন্য পেশা থেকে সরে এসে ক্রিকেটকে নেশা বানিয়ে ফেলা, উদাহরণ অপ্রতুল নয়। কিন্তু ক্রিকেট ছেড়ে প্রথমে অন্য পেশায় চলে যাওয়া। তার পর সেটা ছেড়ে ফের ক্রিকেটে ফিরে এসে অবিশ্বাস্য দর প্রাপ্তি। এ রকম রূপকথার প্রত্যাবর্তনের কাহিনি কেউ কখনও শুনেছে? মনে পড়ে না।
কিন্তু বরুণের জীবনকাহিনি এ রকমই। ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকা। সেখানে সুবিধে না করতে পেরে স্থাপত্যবিদ্যায় চলে যাওয়া। তার পর ভাল না লাগায় সেটা ছেড়ে ফের ক্রিকেটে ফিরে আসা। “পঁচিশ বছর বয়স হয়ে গিয়েছিল তখন আমার। গালভর্তি দাড়ি। কেউ চিনত না। আমিও কাউকে চিনতাম না। ক্রিকেটটা নতুন করতে শুরু গিয়ে দেখলাম, বয়স এতই বেড়ে গিয়েছে যে কেউ নিতেই চাইছে না ক্যাম্পে,” বলছিলেন বরুণ। সঙ্গে যোগ করলেন, “কিন্তু তাই বলে লড়াই ছাড়িনি আমি। খেলা আবার শুরু করলাম। তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ খেললাম। বিজয় হাজারে ট্রফি খেললাম। মাঝে কেকেআরে গেলাম নেট বোলার হিসেবে। সেখানে খুঁটিয়ে দেখলাম, সুনীল নারিন কী ভাবে বল করে? প্রচুর টিপসও পেয়েছিলাম নারিনের থেকে।” তার পরই বিস্ময় স্পিনারে রূপান্তর? শুনে এবার হাসতে শুরু করেন বরুণ। “আমি বিস্ময় স্পিনার কি না, জানি না। তবে হ্যাঁ, আমাকে খেলতে ব্যাটসম্যানের অসুবিধে হয়। আমি আসলে চেষ্টা করি, লাইন-লেন্থে রেখে বলটা করে যেতে। এমনিতে অনিল কুম্বলের ভক্ত আমি। ওঁর ধারাবাহিকতাটা নিতে চাই,” একটানা বলে যান আইপিএল নিলামের বিস্ময়-তরুণ। প্রথম নিলামেই সাড়ে আট কোটি তো অভাবনীয়। “জানি, অনেক টাকা। কিন্তু আমি সাড়ে আট কোটি টাকা কোনও দিন পাব ভেবে খেলাটা আবার শুরু করিনি। টাকার অঙ্ক আমার দায়িত্বই শুধু বাড়াবে। আর কিছু নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.