কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব: ২০ ওভারে ন’উইকেটে ১৭০ (মিলার ২৮, উমেশ যাদব ৩৩/৪)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৬.৩ ওভারে ১৭১/২ (গম্ভীর ৭২ অপরাজিত, পাণ্ডে ২৫ অপরাজিত, অ্যারন ২৩/১ )
কলকাতা নাইট রাইডার্স আট উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: সুনীল নারিন
অভিষেক রক্ষিত: এমনটাই তো চেয়েছিলেন ইডেনে ভিড় জমানো দর্শকরা। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে নাইটদের জয়ের আলোয় রঙিন হবে ক্রিকেটের নন্দনকানন, এমনটাই তো প্রত্যাশা ছিল। সেটা পূরণও হল কানায় কানায়। নাইটদের চোয়াল চাপা লড়াইয়ে ছিঁড়ল ম্যাক্সওয়েল-মিলারদের প্রতিরোধের বর্ম। ঘরের ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিয়ে হাসিমুখেই ফিরলেন গম্ভীররা। প্রীতি জিন্টার দলকে হারালেন আট উইকেটে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর। অপরাজিত ৭২ রান করলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে অপরাজিত রইলেন মণীশ পাণ্ডে।
দু’বারের চ্যাম্পিয়ন। প্রথম ম্যাচে দশ উইকেটে সহজ জয়। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে মুম্বইয়ের কাছে হারটাই যেন হঠাৎ করে দলের মনোবল কিছুটা ভেঙে দিয়েছিল। খারাপ ফিল্ডিংয়ের জন্য জেতা ম্যাচ মাঠেই ফেলে এসেছিলেন নাইটরা। তার মধ্যে চোটের কারণে বৃহস্পতিবার ছিলেন না অজি ক্রিকেটার ক্রিস লিনও। পাশাপাশি ছিল ১৭১ রানের পাহাড় প্রমাণ লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ফাটকা খেললেন কেকেআর অধিনায়ক। ওপেনিংয়ে নিয়ে এলেন সুনীল নারিনকে। যে নারিনকে বল হাতে ম্যাজিক দেখাতে দেখা যায়, এদিন সেটা দেখালেন ব্যাট হাতে। তাঁর এবং অধিনায়কের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ ওভারেই ৬০ রান তুলে নেয় কেকেআর। বরুণ অ্যারনের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম তিন বলে দু’টি ছয়, একটি চারও মারেন নারিন। তবে চতুর্থ বলেই আউট হয়ে যান। কিন্তু ক্যারিবিয়ান স্পিনারের ১৮ বলে ৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস নাইটদের কাজ অনেকটাই সহজ করে দেয়। উল্টোদিকে, নারিন আউট হলেও অধিনায়ক গম্ভীর ও রবিন উত্থাপা দলের রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। তবে পরে ভাল শুরু করেও অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হন উত্থাপা(২৬)। শেষ পর্যন্ত গম্ভীর-পাণ্ডে জুটিই দলকে জয় এনে দেয়। পাঞ্জাব বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট পান বরুণ অ্যারন ও অক্ষর প্যাটেল।
এর আগে দিনের শুরুতে ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কেকেআর অধিনায়ক। কিন্তু গৌতম গম্ভীরের সেই সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে পাঞ্জাবের হয়ে শুরুটা ভাল করেন দুই ওপেনার। মাত্র ৫ ওভারে দলের রান পঞ্চাশের গণ্ডি পার করে দেন তাঁরা। এরপরেই পীযূষ চাওলার বলে ব্যক্তিগত ২৮ রানে আউট হন মনন ভোরা। এরপর ক্রিজে আসা মার্কোস স্টোইনিসকে (৯) ফেরান সুনীল নারিন। কিন্তু আমলা এবং ম্যাক্সওয়েল জুটি দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। আমলা(২৫) ও ম্যাক্সওয়েল (২৫) আউট হয়ে যাওয়ার পর পাঞ্জাবের হয়ে হাল ধরেন বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলার। এক সময় যখন মনে হচ্ছিল প্রীতির দলের রান ২০০ ছাড়িয়ে যাবে, তখনই কেকেআর-কে ম্যাচে ফেরান উমেশ যাদব। এক ওভারেই ফেরান মিলার(২৮), ঋদ্ধিমান(২৫) এবং অক্ষর প্যাটেলকে(০)। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের রান দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৭০।
প্রথম দু’ম্যাচে না থাকলেও কেকেআরের হয়ে প্রত্যাবর্তনে দুর্দান্ত সফল উমেশ যাদব। তথাকথিত পিচের বদলে এদিন ইডেনের পিচ ছিল গতিময়। বল পড়ে ব্যাটে আসছিল দুর্দান্তভাবে। আর সেই সুযোগেই এক ওভারে মিলার, ঋদ্ধি এবং অক্ষর প্যাটেলকে তুলে নেন ডানহাতি এই পেসার। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন বাকি বোলাররা। ট্রেন্ট বোল্ট কোনও উইকেট না পেলেও ক্রিস ওকস দু’টি এবং নারিন, চাওলা ও কলিন গ্রান্ডহোম একটি করে উইকেট পান। তবে এই ম্যাচেও কলকাতার ফিল্ডিং আশানুরূপ ছিল না। এমনকী পাঞ্জাব ইনিংসের শেষ দিকে একটি ক্যাচ চারবারের চেষ্টায় ধরেন নাইট অধিনায়ক গম্ভীর।
এই ম্যাচ জেতায় তিন ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পয়েন্ট দাঁড়াল ৪। এর ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এলেন নাইটরা। আগামী ১৫ এপ্রিল বাঙালির নতুন বছর অর্থাৎ পয়লা বৈশাখে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মুখোমুখি হবেন নাইটরা। এখন দেখার ওই ম্যাচেও জয়ের ছন্দ বজায় রাখতে পারেন কিনা গৌতম গম্ভীর-মণীশ পাণ্ডেরা।
ছবি সৌজন্যে: বিসিসিআই
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.