স্টাফ রিপোর্টার: ভারত অধিনায়ক হিসেবে বিরাট কোহলি কি ৩৯ নম্বর টেস্টে প্রথমবার টিম অপরিবর্তিত রাখতে চলেছেন? নাকি এবারও চিরাচরিত প্রথা মেনে চলবেন তিনি? ভেঙে ফেলবেন ট্রেন্টব্রিজ জয়ের টিম কম্বিনেশন? সাউদাম্পটন টেস্ট শুরু হওয়ার ঘণ্টা ২ আগেও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এটা ঠিক যে ভারত অধিনায়কের সাংবাদিক সম্মেলনের কথাবার্তা শুনলে মনে হবে যে, টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এই প্রথম নিজের পছন্দের প্রথা ভাঙতে চলেছেন তিনি। বুধবার কোহলিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, শেষ আটত্রিশ টেস্টে ক্রমাগত টিম পালটানো নিয়ে। কোহলির নেতৃ্ত্বে ৩৮ টেস্ট খেলেছে ভারত। এবং একবারও এক টিম নামেনি। এমনকী জয়ী টিমও তিনি ভেঙে ফেলেছেন। কেন? উত্তরে কোহলি বলে দেন, “সব সময় যে আমরা টিম পালটাতে চাই, এমন নয়। অনেক সময় প্লেয়ারের চোট-আঘাতও লেগেছে। যা ধরা হচ্ছে না। আমি বলব, চোট-আঘাত প্লাস কম্বিনেশন। সেই কারণে টিম পাল্টেছে। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে না কোনও পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে।” পাশাপাশি নটিংহ্যামে চোট পাওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিয়েও সংশয়ের মেঘ পুরোপুরি উড়িয়ে দেন ভারত অধিনায়ক। পরিষ্কার বলে দেন, “আমার টিমের প্রত্যেকে এখন ফিট। অশ্বিন খুব ভাল রিকভার করেছে। গতকাল ভাল একটা প্র্যাকটিস সেশন পেয়েছে। নামতে ও প্রস্তুত।”
কিন্তু এ দিনের সাউদাম্পটন প্র্যাকটিস? টিমের নেট সেশন যদি কোনও সূচক হয়, তা হলে আটত্রিশ টেস্টের পর প্রথমবার অপরিবর্তিত টিম নামছে- এ হেন বিবৃতির উপর শিলমোহর বসাতে গেলে দু’বার ভাবতে হবে। এ দিন ভারতীয় পেসারদের বিশ্রামে রাখা হয়েছিল। কোহলি নিজেও নেটে ব্যাটিং করেননি। লোকেশ রাহুলের সঙ্গে বাউন্ডারি লাইনের ধারে একটু হালকা নকিং-ব্যস। বরং ভারত অধিনায়ক মন দিয়ে ফুটবল খেললেন। দারুণ গোলকিপিং করলেন। হাসি-ঠাট্টা-ইয়ার্কিতে ডুবিয়ে রাখলেন নিজেকে। কিন্তু তার পরেও তিনি নন, আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
জাদেজা এ দিন দীর্ঘ সময় ধরে নেটে বল করে গেলেন। আবার অশ্বিন- তিনি বোলিং-ব্যাটিং দু’টোই পর্যাপ্ত করে রাখলেন। প্রশ্ন হল, কোহলির কথা ধরলে পরিবর্তন হওয়ার কথা নয়। তা হলে জাদেজার এত খাটাখাটনি কেন? এর মানে কি ইংল্যান্ডের মতো দুই স্পিনার (ইংল্যান্ড মইন আলি আর আদিল রশিদ দু’জনকেই খেলানোর কথা ঘোষণা করে দিল) খেলাবে ভারত? নাকি এক স্পিনারেই যাবে? অশ্বিন নিয়ে সামান্যতম ঝুঁকি না নিয়ে জাদেজাকে খেলানো হবে? কোহলিকে এ দিন সাউদাম্পটনে অল পেস অ্যাটাক নামানো নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। কারণ- উইকেটের সবুজ আভা। কিন্তু ভারত অধিনায়ক পত্রপাঠ যেটাকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দেন। বলে দেন, “অল পেস অ্যাটাক এই পিচে কতটা কাজ দেবে, আমার সন্দেহ আছে। দেখতে গেলে, অর্থহীন। কারণ আমরা শেষবার যখন এখানে খেলেছিলাম, স্পিনাররা সুবিধে পেয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসের সময় বড় বড় ফুটমার্কস তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এখানকার পিচ বেশ শক্ত। পরের দিকে বড় বড় ফুটমার্কস তৈরি হয়, স্পিনাররা টার্ন পায়। এবারও আমার উইকেট দেখে তেমনই মনে হয়েছে।” কোহলির যে মন্তব্যের পর বলাবলি শুরু হয়, ভারত অধিনায়ক পরিষ্কার স্পিনে জোর দিচ্ছেন। এটাও মাথায় রাখতে হবে।
ট্রেন্টব্রিজ টেস্ট জিতে ভারত কিছুটা কামব্যাক করলেও সিরিজে এখনও ২-১ এগিয়ে ইংল্যান্ড। সাউদাম্পটনে সিরিজ ২-২ করার জন্য টিমের কাছে কঠিন পরিশ্রম আর ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ডাক দিয়েছেন কোহলি। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৪ সফরের কথা। যে বার লর্ডস টেস্ট জিতে সিরিজে লিড নিয়েও শেষ পর্যন্ত হেরে দেশে ফেরে ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.