সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত হলেন প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ অমল দত্ত৷ তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। দীর্ঘ রোগভোগের পর রবিবার এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান দেশের প্রথম পেশাদার ফুটবল কোচ। দীর্ঘদিন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল দলকে কোচিং করিয়েছেন তিনি| তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলার তামাম ফুটবলপ্রেমী৷
ফুটবল জীবনে অমল দত্ত খেলতেন ইস্টবেঙ্গলে৷ মাঝমাঠে৷ খেলা ছাড়ার পর, অমল দত্ত স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ইংল্যান্ড পাড়ি দেন কোচিং কোর্স করার জন্য৷ ওয়াল্টার উইন্টারবটমের কাছ থেকে কোচিংয়ের পাঠ নেন৷ এফএ কোর্স শেষ করে দেশে ফিরে নিজেকে পুরোপুরি নিয়োজিত করেন ফুটবলে৷ অমল দত্তই দেশের প্রথম ‘পেশাদার কোচ’৷ জীবনে প্রচুর ঘাত-প্রতিঘাত, আর্থিক অনটনেও এই পেশা থেকে বেরোননি৷ একই সঙ্গে ফুটবলের ফেরিওয়ালাও তিনি৷ সেই সময় এ-দেশের মানুষের আন্তর্জাতিক ফুটবলের কোনও ধারণাই ছিল না৷ অমল দত্ত বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছিলেন বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের ফিল্ম৷ পাড়ায়-পাড়ায় প্রজেক্টর দিয়ে সেই ফুটবল দেখিয়ে বেড়াতেন৷
কোচ অমল দত্তর প্রথম বড় ক্লাব ইস্টবেঙ্গল৷ সেখান থেকে ওড়িশা৷ একেবারে আনকোরা একটা রাজ্যকে ফুটবল শিখিয়ে ছেড়েছিলেন তরুণ কোচ৷ ’৬৯ সালে তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনে মোহনবাগান৷ তখন পাঁচ ফরোয়ার্ডে খেলা হত৷ মোহনবাগানে অমল দত্ত নতুন সিস্টেম চালু করলেন৷ ৪-২-৪৷ অমল দত্ত তাঁর দুই উইং ব্যাক–ভবানী রায় ও লেফ্ট ব্যাক-কে দু’-প্রান্ত ধরে আক্রমণে তুলে দিলেন৷ কলকাতা শুধু নতুন ফুটবলই দেখল না, অন্য দলগুলি ধরার আগেই মরশুম শেষ৷ মোহনবাগান সেবার ডাবল পেল–লিগ, শিল্ড৷ শিল্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ গোলে হারায়৷
এমনিতেই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বাংলা কয়েকশো মাইল পিছনে৷ এই দূরত্বটা আলোকবর্ষও হয়ে যেতে পারত, যদি অমল দত্ত নামক একগুঁয়ে, নিজের বিশ্বাসে অবিচল মানুষটি না-থাকতেন! তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ভারতীয় ফুটবলকে হাতে ধরে আধুনিকতার রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করেছেন৷ অবশ্য এজন্য তাঁকে কম খেসারত দিতে হয়নি৷ কিন্তু সমঝোতা করেননি কখনও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.