সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রূপকথায় সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করে রানির কাছে পৌঁছে যায় রাজা। রূপকথাই বটে। কারণ বাস্তবের মাটিতে সাত সমুদ্র পার হওয়া এক প্রকার অসম্ভব। আর যাই হোক, অন্তত সাঁতরে তো নয়ই। সেই মিথকেই এবার ভুল প্রমাণ করে দিলেন পুণের সাঁতারু রোহন মোরে। চলতি মাসে বিশ্বের সাতটি অত্যন্ত দুর্গম চ্যানেল পেরিয়ে বিশ্বের একমাত্র ভারতীয় তথা এশিয়ান সাঁতারু হিসেবে ইতিহাস গড়লেন তিনি।
Rohan More, a Pune based swimmer becomes the youngest in the world and the first Asian to complete the Ocean Seven Challenge. He also is the 9th person in the world to complete it pic.twitter.com/EuCPjK1SeR
— ANI (@ANI) February 11, 2018
পুণের সেনাপতি বাপত রোডের বাসিন্দা সাগর-মহাসাগরকে মজ্জায় মজ্জায় চেনেন। তাদের স্বভাব, গতি-প্রকৃতি, মেজাজ সবই রোহনের নখদর্পণে। জলেই জীবনের বেশিটা সময় কাটাতে ভালবাসেন। আর যখনই সুইম স্যুট গায়ে জলে নামেন, তখনই কিছু না কিছু নজির গড়েন। যার জন্য চলতি বছর মার্চে তাঁকে লন্ডনের তরফে আন্তর্জাতিক ম্যারাথন সুইমিং হল অফ ফেম পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে। এই বিখ্যাত ভারতীয় সাঁতারু গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের উত্তর ও দক্ষিণ দ্বীপপুঞ্জের কুক স্ট্রেট চ্যানেলটি পার হন ৮ ঘণ্টা ৩৭ মিনিটে। রোহন বলছিলেন, “২০১৫ সাল থেকে এই পথে সাঁতার কাটার চেষ্টা চালাচ্ছি। অবশেষে সুযোগ পেলাম।” প্রথম ভারতীয় সাঁতারু হিসেবে নিউজিল্যান্ডে বিজয় ঝাণ্ডা উড়িয়ে উচ্ছ্বসিত ওশান সেভেন চ্যালেঞ্জ জয়ী রোহন।
কী এই ওশান সেভেন অথবা সমুদ্র সাত চ্যালেঞ্জ? এটি আসলে বিশ্বের দুর্গম সাতটি চ্যানেলে সাঁতার কাটার চ্যালেঞ্জ। যাকে সেভেন সামিট পর্বতারোহণের সঙ্গেই তুলনা করা হয়। যে চ্যালেঞ্জে সাতটি মহাদেশের সর্বোচ্চ সাত শৃঙ্গ ছুঁতে হয় পর্বতারোহীকে। ঠিক একইভাবে বিশ্বের নবম সাঁতারু হিসেবে জলে এই চ্যালেঞ্জে নেমে লেটারমার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ হলেন রোহন। তিনি বললেন, “২০১২ সালে সাত সমুদ্র চ্যালেঞ্জ শুরু করেছিলাম। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য কুক স্ট্রেটে সাঁতারের সুযোগ পাইনি। আর এখানে প্রতি বছর মাত্র ১২ জন সাঁতারুকেই সাঁতারের ছাড়পত্র দেয় কুক স্ট্রেট সুইমিং সংস্থা। তাই অবশেষে সুযোগ পাওয়ায় নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।”
শুক্রবার সকাল ৯ টায় উত্তর থেকে যাত্রা শুরু করেন রোহন। ২৬ কিলোমিটারের ভয়ংকর জলরাশি পেরিয়ে ৬টায় পৌঁছন গন্তব্যে। দক্ষিণের দিকে জলের তাপমাত্র ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল। ঠান্ডায় রীতিমতো শরীরে কাঁপুনি ধরে গিয়েছিল তাঁর। তবে চ্যালেঞ্জের শেষ প্রান্তে উড়তে থাকা তেরঙ্গাই তাঁকে জয়ের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। নজির গড়ে এমনটাই জানালেন রোহন মোরে। আপাতত ২০২০ টোকিও অলিম্পিককেই পাখির চোখ করছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.