দীপ দাশগুপ্ত: ওভাল টেস্ট নিয়ে চারদিকে একটা কথা খুব শুনছি। যে, বিরাট কোহলির ভারতের কাছে একমাত্র সম্মানযুদ্ধ ছাড়া আর কিছু এটা নয়। টিম সিরিজ হেরে গিয়েছে। ১-৪ আটকানো ছাড়া আর কী মোটিভেশন পড়ে থাকতে পারে টিমের?
আমি মানি না। আমার মতে, সম্মান বাঁচানো নয়। আরও কয়েকটা কারণে ভারতের কাছে ওভাল টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ইংল্যান্ড সিরিজের পরে টেস্ট সিরিজ বলতে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে চেনা পরিবেশে, দুর্বল টিমের বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যানদের বড় রান করার সম্ভাবনা অনেক, অনেক বেশি। কিন্তু তার জন্য ওভাল টেস্টে রান পেতে হবে ব্যাটসম্যানদের। কেএল রাহুলের মতো কেউ কেউ যদি ওভালেও রান না পায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুম করে বাদ পড়ে যেতে পারে। সেটা কি সুখকর হবে? তা ছাড়া টিমের দিক থেকে যদি দেখি, ১-৪ হওয়ার চেয়ে ২-৩ সিরিজ হারা অনেক বেশি ভাল। তাতে অন্তত চারদিকের সমালোচনা একটু কমবে। লোকে বলতে পারবে না, ভারত টেস্ট সিরিজে উড়ে গিয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল, সিরিজ হারের পর ভারত কী ভাবে শেষ টেস্টটা জিততে পারে? সহজে, কী কী করতে হবে কোহলিদের? একে একে বলি।
১) মইন আলিকে সুইপ মারা, স্টেপ আউট করা: সাউদাম্পটন টেস্ট আমরা হেরে গিয়েছি মইন আলির কাছে। ওভাল পিচেও মইন ভাল বল করলে অবাক হওয়ার থাকবে না। আমার মতে, দু’টো কাজ করা যেতে পারে। যারা স্বভাবসিদ্ধ ভাবে সুইপ মারে, তারা মইনকে সুইপ মারুক। আর যারা সাধারণত স্টেপ আউট করে অফস্পিনারকে, তারা সেটা করুক। সাউদাম্পটনে মইন প্রচুর উইকেট পেয়েছে, আমরা পেতে দিয়েছি বলে। ওকে আমরা সুইপ বা স্টেপ আউট কিছুই করিনি।
২) রবীন্দ্র জাদেজাকে ভাবা যেতে পারে: আসলে ইংল্যান্ড টিমে প্রচুর বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানের সামনে যে রাফটা তৈরি হয় পিচে, জাদেজাকে খেলালে তা থেকে ফায়দা তোলা যেতে পারে। তা ছাড়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন পুরো ফিট নয়। সাউদাম্পটনে ভাল বলও করেনি। জাদেজা সেখানে দু’মাস ধরে বসে আছে। টিমের সঙ্গে ঘুরছে। টেস্ট ছাড়া ওকে আর কোনও ফর্ম্যাটে এখন খেলানোও হয় না। একটা টেস্টে খেলাতে তো কোনও অসুবিধে নেই।
৩) ব্যাটসম্যানদের রান করা: খুব সহজ অঙ্ক এটা। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা যদি যথেষ্ট রান না করে, কুড়ি উইকেট তুলেও লাভ নেই। যে ঠিকঠাক স্টার্ট পেয়ে যাবে, সে লম্বা খেলার চেষ্টা করুক। ওভাল পিচ ব্যাটসম্যানদের পক্ষে যাবে বলেই মনে হয়। সেখানে চেতেশ্বর পুজারা, অজিঙ্ক রাহানে, যারা সদ্য সদ্য রান পেয়েছে তারা ক্রিজে আরও সময় কাটাক। কোহলিকে এখানে ধরছি না। সব ম্যাচেই ও রান করছে। একটা জিনিস বুঝতে হবে। গোটা সিরিজে ট্রেন্টব্রিজে আমরা দু’বার ইনিংসে তিনশো তুলেছি আর জিতেছি। অন্য কোথাও তুলিনি। জিতিওনি।
৪) টস জিতলে ব্যাটিং: কোহলি টস জিতলে ব্যাট করার কথা ভেবে দেখতে পারে। বললামই ওভাল পিচ ব্যাটসম্যানদের পক্ষে যাবে। সেখানে আগে ব্যাট করে বড় রান তুললে সুবিধে ভারতের।
৫) পৃথ্বী শ’কে ভাবা: ওপেনিংয়ে পৃথ্বীকে খেলিয়ে দেখতে পারে টিম। এতে সুবিধে হল, ও সত্যি সত্যি এই পর্যায়ের জন্য তৈরি কি না সেটা বুঝে নেওয়া যাবে। বেশি আর কী হবে, রান পাবে না। সে তো অনেকেই পাচ্ছে না।
৬) অ্যালিস্টার কুক নিয়ে আলাদা প্ল্যান: ওভাল টেস্টের পর অবসরে চলে যাচ্ছে কুক। অর্থাৎ, এটাই ওর শেষ টেস্ট। কুক অনেক হালকা ভাবে নামবে। ব্যর্থতার লাগেজ নিয়ে নামবে না। খোলা মনে শেষ টেস্ট খেলবে। আর সেটাই ভোগাতে পারে ভারতকে। যদি একবার কুক সেট হয়ে যায়, কী দুঃখ কপালে অপেক্ষা করতে পারে সবাই জানে। তাই শুরুতে ইশান্ত শর্মাকে দিয়ে রাউন্ড দ্য উইকেট বল করানো যেতে পারে কুককে। রাউন্ড দ্য উইকেটে এসে চলতি সিরিজে বেশ কয়েকবার কুককে আউট করেছে ইশান্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.