ভারত- ৫০ ওভারে ২৫২ অলআউট (কোহলি ৯২, কুলটার নাইল ৫১/৩)
অস্ট্রেলিয়া- ৪৩.১ ওভারে ২০২ অলআউট (স্মিথ ৫৯, কুলদীপ ৫৪/৩)
ভারত জয়ী ৫০ রানে।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে বৃষ্টির পূর্বাভাস, অপরদিকে পুজোর আগে ইডেন ভরবে না। এই দুই ভবিষ্যদ্বাণীই ভুল প্রমাণিত হল বৃহস্পতিবারের ভারত-অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে। স্কোরবোর্ড বলছিল রান অনেকটাই কম। টার্গেট মাত্র ২৫৩ রান। উলটোদিকে আবার স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নার- গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ব্যাটসম্যান। কিন্তু কোনও এক ‘চায়নাম্যান’ বোলার কুলদীপ যাদবের দাপটে মাত্র ২০২ রানে গুটিয়ে গেল পরাক্রমী অজি ব্যাটিং লাইন আপ। প্রথম ওয়ানডের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও হাসতে হাসতে জিতে গেল বিরাটের ভারত। জিতল ৫০ রানে।
বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিলই। তাই টস জিতে প্রথম ম্যাচের মতোই ব্যাটিং নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ফের ব্যর্থ ওপেনিং জুটি। অল্প রানেই আউট হয়ে ফিরে যান রোহিত শর্মা। তবে গত ম্যাচে শূন্য করলেও এদিন স্বমহিমায় ধরা দেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আরেক ওপেনার অজিঙ্ক রাহানেকে সঙ্গী করে এগিয়ে নিয়ে যান দলের রান। এদিকে আগের ম্যাচে তাড়াতাড়ি আউট হয়েছিলেন রাহানেও। কিন্তু এদিন দুরন্ত অর্ধশতরান করেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্যবশত ব্যক্তিগত ৫৫ রান করে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় এই মুম্বইকরকে। মাত্র ৩ রান করে আউট হন মনীশ পাণ্ডেও।
তবে উলটোদিকে দুর্ভেদ্য প্রাচীর হিসেবেই এদিন অবতীর্ণ হন বিরাট। একার কাঁধেই দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। আগেই রিকি পন্টিংয়ের ওয়ানডেতে ৩০টি শতরানের রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন। এদিন সুযোগ ছিল সেটি ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯২ রানের (১০৭ বলে) মাথায় ফিরে যান বিরাট। মাত্র আট রানের জন্য হাতছাড়া হয় শতরান। সেই সঙ্গে প্রাক্তন অজি অধিনায়কের রেকর্ডও ভাঙা হল না বিরাটের। এদিকে ভালও শুরু করেও বেশি রান করতে পারেননি কেদার যাদব। ব্যর্থ হন ধোনিও (৫)। এর মধ্যেই একবার বৃষ্টির জন্য খেলাও বন্ধ হয়। ওই সময় পাণ্ডিয়ার আউট নিয়েও একটু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। পরে আম্পায়ারদের মধ্যস্থতায় তা মিটে যায়। এরপর বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলেও আর বেশিক্ষণ ক্রিজে ছিলেন না হার্দিক (২০)। তাড়াতাড়ি ফিরে যান ভুবনেশ্বর কুমারও (২০)। শেষপর্যন্ত ৫০ ওভারে ২৫২ রানে থামে ভারতের ইনিংস। অজি বোলারদের মধ্যে কুলটার নাইল ও রিচার্ডসন তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন।
এদিকে, ২৫৩ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তাড়াতাড়ি ফিরে যান দুই ওপেনার ওয়ার্নার (১) ও কার্টরাইট (১)। দু’জনেই শিকার হন ভুবনেশ্বরের। এরপর নিজের ১০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা স্টিভ স্মিথ (৫৯) এবং ট্রাভিস হেড (৩৯) দলের ইনিংস সামলান। কিন্তু আজ যে দিন ছিল কুলদীপেরই। ম্যাচের আগের দিনই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে জানিয়েছিলেন, কেকেআর-এ থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। আর এই ইডেন যেন তাঁর ঘরের মাঠ। সেই মাঠেই জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক হ্যাটট্রিক সম্পন্ন করলেন এই চায়নাম্যান বোলার। আউট করলেন ম্যাথু ওয়েড, অ্যাগর এবং প্যাট কামিন্সকে। কপিলদেব, চেতন শর্মা-র পর তৃতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ১০-১-৫৪-৩। অন্যান্য ভারতীয় বোলাররাও এদিন দুরন্ত বোলিং করেন। আর ভারতীয় বোলারদের দাপটেই ২০২ রানে শেষ হয় অজিদের ইনিংস।
সিরিজের এখনও ফয়সালা হয়নি। বাকি আরও তিনটি ম্যাচ। কিন্তু কুলদীপের এই অসাধারণ বোলিংয়ের পর বলাই যায়, অজি শিবিরে আরও জাঁকিয়ে বসল ‘চায়নাম্যান’ আতঙ্ক।
ছবি সৌজন্যে: বিসিসিআই
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.