সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মস্তিষ্ক যদি বলে আইজল চ্যাম্পিয়ন, তাহলে কোটি কোটি মোহনবাগানি সমর্থকদের হৃদয় কিন্তু বলছে ফের একবার দেশের সেরা টুর্নামেন্ট বাংলায় আসবে। দ্বিতীয় আই লিগটি গঙ্গাপারের ক্লাব তাঁবুতেই ঢুকবে। ৯০ শতাংশ মানুষই মনে করছেন চেন্নাইকে ঘরের মাঠে হারালেও, আইজল ‘নর্থ-ইস্ট’ ডার্বিতে লাজং এফসিকে ঠিক হারিয়ে দেবে। কিন্তু ১০ শতাংশ মানুষ এখনও আশাবাদী লাজং যদি কোনও অঘটন ঘটিয়ে ফেলে আর এদিকে জয় পায় মোহনবাগান, তাহলে কিন্তু চ্যাম্পিয়ন সোনিরাই। ওই দশ শতাংশ মানুষের মধ্যে রয়েছেন বাগান কোচ সঞ্জয় সেন এবং মোহনবাগানের খেলোয়াড়রাও। তবে মুখে তাঁরা ম্যাচের আগের দিন কিছুই বলতে চাননি। শনিবার মোহনবাগান অনুশীলনে তা বোঝারও উপায় ছিল না৷ অন্যান্য দিনেও যেমন সোনি-ডাফিদের সঙ্গে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের সেলফি তোলার আবদার থাকে, এদিনও ঠিক সেরকম দেখা গেল৷ তবে সেই আবদারে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নের মঞ্চে সোনিদের দেখার উদগ্র বাসনা নেই৷ তাহলে কি আশা একদমই নেই? অবশ্যই আছে৷ কিন্তু তা অত্যন্ত চাপা৷ সকলের অগোচরে৷ কত তো অঘটন ঘটে!
নিজেদের খেতাবের দৌড় থেকে সরিয়ে দিয়ে ইচ্ছে করেই যেন আইজলের উপর পুরো চাপটা তুলে দিয়েছেন সোনি নর্ডিরা৷ এর আরও একটি কারণ রয়েছে। লাখ লাখ সমর্থক, এমনকী স্থানীয় মিডিয়াও চ্যাম্পিয়ন হিসাবে দেখার জন্য বাগানের উপর অতিরিক্ত চাপ দেবে না৷ কিন্তু সোনিদের ড্রেসিংরুমের খবর অন্য৷ ‘যে যাই বলুক৷ যাকে খুশি চ্যাম্পিয়ন ভাবুক৷ আমরা কিন্ত আশা ছাড়ব না৷ কখন কী হয়, কে বলতে পারে? মাথায় রাখতে হবে, চেন্নাইকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন৷ এরকম মনোভাব নিয়ে মাঠে নামতে হবে৷ বাকিটা ম্যাচের পর দেখা যাবে৷” এদিন টিমের ক্লাসে এভাবেই সোনি-ডাফিদের তাতালেন কোচ সঞ্জয় সেন৷ আর বাইরে এসে মোহনবাগান কোচ বললেন, ‘আমার ফুটবলাদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা প্রকাশ্যে বলার জন্য নয়৷’ তবে তিনি মুখে যাই বলুন বাগান সমতলে খেললেও সঞ্জয়ের মন পড়ে থাকবে পাহাড়েই। শুধু কোচ সঞ্জয় নন, দলের ফুটবলার থেকে কর্মকর্তারা, আট থেকে আশি সমর্থকদের মন থাকবে আইজল বনাম লাজং ম্যাচের দিকেই।
এদিকে, ‘সবুজ তোতা’ হোসে ব়্যামিরেজ ব্যারেটোও যেন কিছুটা দোটানায়। তাঁর মতে, আইজলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ বেশি। কারণ পয়েন্ট টেবিলে ওরা অনেকটাই এগিয়ে। আর ম্যাচও একটি পাহাড়ের দলের বিরুদ্ধেই। তাই বাগান হাসতে হাসতে চেন্নাই ম্যাচ জিতে গেলেও সুযোগ বেশি খালিদ জামিলের ছেলেদেরই। ব্যারেটো জানান, ‘ফুটবল-বুদ্ধি বলছে, মোহনবাগান জিতলেও ট্রফি পাওয়ার সম্ভাবনা কম৷ কেন না অঙ্কে আইজলের পাল্লা অনেক ভারী৷ আবার হৃদয় বলছে, মোহনবাগান পারবে৷ লাজং আইজলকে হারাতে পারবে কি না, সেটা ভবিষ্যত্ বলবে৷তবে কঠোর পরিশ্রম এবং সততার একটা দাম আছে৷ আর মোহনবাগান এ বছর যে ফুটবল খেলেছে তাতে আই লিগটা ওরা ডিজার্ভ করে৷’
এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘যদিও কয়েকটা ব্যাপার মাথায় রেখে নামা উচিত মোহনবাগানের৷ শুরুতেই মানসিকভাবে এটা ভেবে নামতে হবে, ট্রফি এখনও হাতছাড়া হয়নি৷ আগে চেন্নাইকে হারাতে হবে৷ তার পরে দেখা যাবে, অন্য টিম কী করছে৷ কিছুতেই ট্রফি হারার বোঝা মাথায় নিয়ে নামা চলবে না৷ আমার ধারণা সঞ্জয় সেন যেমন কোচ, তিনি এই নেগেটিভ মনোভাব টিমে তৈরি হতেও দেবেন না৷ তা ছাড়া সামনে ফেডারেশন কাপ৷ এই ম্যাচটা জিতে থাকলে সোনিদের আত্মবিশ্বাস এমনিতেই বেড়ে থাকবে।’ তবে ব্যারেটো মনে করছেন, লাজংয়ের পক্ষেও লড়াইটা সহজ হবে না। কারণ তাঁদের ওপর প্রত্যাশার পারদ আরও বেশি। সেই সঙ্গে লাজংও ছেড়ে কথা বলবে। উল্টোদিকে কার্ড সমস্যায় নেই বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তবে যদি আইজল শেষপর্যন্ত ম্যাচটি বের করে নিতে সক্ষম হয়, তাহলে তার কৃতিত্ব পাবেন একমাত্র কোচ খালিদ জামিলই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.