মোহনবাগান: ১ (ক্রোমা-পেনাল্টি)
চেন্নাই সিটি: ২ (জোয়াকিম, শুমেইকো)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লজ্জা আর কোথায় লুকোবেন মোহনবাগান কোচ? এবার কোন যুক্তি খাঁড়া করবেন তিনি? কীভাবে সমর্থকদের জবাব দেবেন? কেন তাঁর কথা ঠান্ডা মাথায় মেনেই বা নেবেন সমর্থকরা? চলতি আই লিগে ডার্বি জিতিয়েছেন বলে? কিন্তু তারপর কী হয়েছে, সেটাও যে ভোলা যাচ্ছে না। চার্চিল ম্যাচে পাঁচ গোলে জয়ের পর এ কী হাল দলের! শেষ দিন ম্যাচে ড্রয়ের পর এবার হেরেই গেল দল। চ্যাম্পিয়নশিপ থেকেই ছিটকে যাওয়ার জোগাড়। এবার ট্রফি জিততে তো প্রয়োজন মিরাকলের। কিন্তু এই দল যে কোনও অলৌকিক কাণ্ড ঘটাতে পারবে না, তা চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবে পাঁচ বছরের শিশুও।
ঘরের মাঠে আই লিগ এনে ফুটবলমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। কিন্তু তার পরের ছবিটা যে এমন হবে, কে ভেবেছিল। সদস্য-সমর্থকরা গ্যালারি ভরিয়ে শেষমেশ কী পেলেন? লজ্জা আর একরাশ হতাশা! যেখানে দশজনে খেলা দলের কাছেও বিশ্রীভাবে হারতে হয় দলকে। নিজেদের মাঠে যে এমন হার কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। হ্যাঁ, যদি দারুণ খেলেও অল্পের জন্য হাতছাড়া হত তিনটে পয়েন্ট, তাহলেও একটা কথা ছিল। কিন্তু তেমনটা তো হলই না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একটা দলই খেলে গেল। আক্রমণ থেকে রক্ষণ, সবেতেই তথাকথিত ময়দানের বড় ক্লাবকে টেক্কা দিল চেন্নাই সিটি। এবার কী ব্যাখ্যা দেবেন সঞ্জয় সেন?
গত ম্যাচে ঘরের মাঠে ইন্ডিয়ান অ্যারোজের কাছে আটকে যাওয়ার পরই গো ব্যাক সঞ্জয় স্লোগান তুলেছিলেন সমর্থকরা। এদিন সেই স্লোগান আরও জোড়াল হল। কলকাতা ময়দানের ফুটবলভক্তরা একটা নিয়মই মানেন। কোচের সাফল্য তখনই প্রমাণিত হয় যখন ক্লাবে ট্রফি আসে। নাহলেই ওঠে গো ব্যাক ধ্বনি। কিন্তু সঞ্জয় সেনের কিছু সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই হজম হচ্ছে না সমর্থকদের। প্রথমত, কাটসুমিকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। সেই জাপানি বোমা এদিনও অ্যারোজের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, ফিজিও গার্সিয়ার ক্লাব ছেড়ে দেওয়া। তিনি থাকাকালীন দলের ফুটবলাররা কতটা ফিট থাকতেন, তার প্রমাণ বর্তমান ইস্টবেঙ্গল দলই। আর উলটো দিকে মিনি হাসপাতালে পরিণত হয়েছে গঙ্গাপারের তাঁবু। তৃতীয়ত, স্ট্র্যাটেজি। একই বাঁধা-ধরা গতে দলকে খেলিয়ে চলেছেন কোচ। আগের দিন মননদীপ সিংকে নামিয়ে কোনও লাভ হয়নি দেখেও এদিনও একই সিদ্ধান্ত নিলেন। আর যে লং বল খেলে গত ম্যাচে আটকে যেতে হল, এ ম্যাচেও চলল সেই লং বলে খেলার প্রবণতাই। ডিফেন্স শব্দটা হয়তো বাগানের ডিকশনারি থেকে বাদ পড়েছে। চেন্নাইয়ের ডিফেন্ডার যেখানে গোল করে ম্যাচ জেতান, সেখানে দশজনের দলকেও সামলাতে পারে না বাগান রক্ষণ। ফের পরে পাওয়া চোদ্দ আনা পেনাল্টি থেকে গোল দিয়েই হয়তো সঞ্জয় ভেবেছিলেন মানরক্ষা হবে। কিন্তু এবার আর ভাগ্য সহায় হল না।
আর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি থেকে বাগান ফুটবলাররা বেরোতে পারছেন না তা হল সোনি নির্ভরতা। তাঁর যা অবস্থা তাতে ডার্বির আগে ফেরার কোনও উপায় নেই। তবে কি এভাবেই চলবে? তবে কি এখনও সবটা মেনে নেবেন সমর্থকরা? এমন পরিস্থিতিতে সঞ্জয় সেন কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.