স্টাফ রিপোর্টার: মোহনবাগান লনে যে স্টেজে বসে শুক্রবার সইয়ের পর সাংবাদিক সম্মেলন করছিলেন হাইতি তারকা, গত মরশুমে মোহনবাগান ছাড়ার সময়ও বসেছিলেন একই স্টেজে। কিন্তু সেদিন আর এদিনের মাঝে কত ফারাক। শেষ সাংবাদিক সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। এদিন যখন একই জায়গায় বসে সাংবাদিক সম্মেলন করছিলেন, তখন গাল ভরা হাসি। তাহলে ফারাকটা কোথায়? সাংবাদিক সম্মেলন থেকে প্রশ্নটা উড়ে আসতে হেসে সোনি নর্ডি বলেন, “আমার মুখটা দেখলে পার্থক্যটা বোঝা যাবে। ”
ফের মোহনবাগান জার্সিতে ফেরার আনন্দে সোনি না হয় হাসছেন। কিন্তু শনিবার যুবভারতীতে মোহনবাগানের মুখেও কী এই হাসি থাকবে? ইস্টবেঙ্গলের পাহাড় জয়ের পর প্রথম ম্যাচ ড্র করে কিছুটা হলেও চাপে মোহনবাগান। যা ঘোরানোর আশায় শনিবার আইজল এফসির বিরুদ্ধে পাঁচ বিদেশি নিয়ে আক্রমণে নামছেন কোচ শংকরলাল। শুরু থেকেই পাঁচ বিদেশি মানে এরকম নয় যে, এদিন সোনিও শুরু থেকে মাঠে নেমে পড়বেন।
কিন্তু তিনি খেলবেন। তবে শুরু থেকে নয়। দ্বিতীয়ার্ধে। শেষের দশ-পনেরো মিনিট না কী, আরও একটু বেশি সময় খেলানো হবে তা ম্যাচের পরিস্থিতি দেখে ঠিক করবেন বাগান কোচ। সেভাবেই তৈরি থাকতে বলা হয়েছে সোনিকে। আর সোনি নিজে বলছেন, “কোচ কতক্ষণ খেলাবেন সেটা তাঁর উপরই নির্ভর করবে। তবে আমি খেলার জন্য তৈরি।” যদিও শঙ্করলাল বলছেন, “ভাবছি, ম্যাচটা কী ভাবে জিতব। সেই ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে গেলে যা করার করব।”
[মোহনবাগানের আজীবন সদস্যপদ পেয়ে আপ্লুত চুনী-সৌরভরা]
গত মরশুমে ঘরের মাঠে পর পর কয়েকটা ম্যাচ হেরে আই লিগের লড়াই থেকে হারিয়ে গিয়েছিল সঞ্জয় সেনের মোহনবাগান। শংকরলাল তাই ঘরের মাঠের ম্যাচগুলি নিয়ে অতিরিক্ত সতর্ক। যদিও প্রথম ম্যাচে বিদেশিহীন লাজংয়ের কাছে হেরে গিয়েছে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ আইজল এফসি। শংকরলাল বললেন, “আইজলের খেলা দেখে কখনও মনে হয়নি, ওরা দুর্বল। ওদের ক্রোমা, ডোডোজদের মতো ফুটবলার আছে। শুধু আইজল কেন, এবার আই লিগে কোনও দলই দুর্বল নয়। সব দলের মান ভাল। এবার আই লিগ আরও কঠিন। কোনও দলই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারবে না, একে বা ওকে হারিয়ে দেব। তাই আমরা সতর্ক হয়ে মাঠে নামব।”
সোনি শুরুতে নেই বলে প্রথম একাদশে বিদেশি কোটায় ঢুকে পড়ছেন ডিকা, হেনরি, ইউটা, ওমর এবং কিংসলে। শঙ্করলাল ক্লাসে ফুটবলারদের যা বলেছেন, তাতে শুরুতেই তিনি গোল চান। গতবার আই লিগে কোচ ছিলেন শংকরলাল। কিন্তু শুরুতে সঞ্জয় সেনের সহকারী। পরে একক ভাবে। এবার শুরুতে একক দায়িত্বে। মোহনবাগান কোচ এসব নিয়ে ভাবতে রাজি নন। বললেন, “একক ভাবে দায়িত্ব বলে কিছু নেই। সবাই মিলেই একটা দল।” কিন্তু যেভাবে ইস্টবেঙ্গল প্রথম দু’ম্যাচেই পাঁচ গোল করে বসেছে, তা সামান্য হলেও চিন্তার। দলের হাইতি তারকা বললেন, “ইস্টবেঙ্গলের দুটো ম্যাচই দেখেছি। দারুণ খেলেছে বলব না। কিন্তু পুরো পয়েন্ট পেয়েছে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এবার সেভাবে জিততে হবে।”
[ছন্দময় ফুটবল খেলে পাহাড় থেকে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ফিরছে ইস্টবেঙ্গল]
আই লিগ শুরুর আগেই কলকাতা লিগ শেষ হয়ে গেলে হবে কী, আই লিগের পাশাপাশি মিজোরামে এখন স্থানীয় লিগও চলছে। দু’দিকেই মন দিতে গিয়ে ফুটবলাররা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছেন না বলে মনে করছেন আইজল এফসি কোচ গিফট রাইকান। দলে ক্রোমা থাকাটাই পজিটিভ। -“কলকাতার দলগুলির পাশাপাশি ভারতীয় ফুটবল নিয়েও এখন ক্রোমার ভাল অভিজ্ঞতা। এটাই কাজে লাগবে আমাদের। মোহনবাগান কঠিন প্রতিপক্ষ। কিন্তু আমরাও লড়ব।” এক নিঃশ্বাসে বলে থামলেন আইজল এফসি কোচ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.