স্টাফ রিপোর্টার: “জানি কোচিতে কেরলকে হারানো সহজ হবে না৷ তবু বলছি, আমরা প্রস্তুত৷ বুঝিয়ে দেব, এটিকে আসল সময়ে কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে৷” এক ভারতীয় ফুটবলার কোচি থেকে ফোনে কথাগুলো না লেখার প্রতিশ্রূতিতে বলে গেলেন৷ এই মন্তব্যে তো কোনও বিতর্ক নেই৷ নাম দিতে আপত্তি কেন? তিনি বললেন, “বিশ্বাস করি না রবিবার কোনও আপসেট হবে৷ তবু, ফুটবল তো! তখন নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না৷”
সন্দেহ নেই, রবিবার পুরো স্টেডিয়াম ভর্তি থাকবে৷ স্লোগান উঠছে, “কলাপাতায় মিষ্টি দই”৷ জানা গেল, তিন দিন আগেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে৷ এখন রমরমা কালোবাজারিদের৷ তিনশোর টিকিট বিকোচ্ছে তিন হাজারে৷ দু’জন কালোবাজারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ তাতে তাদের দৌরাত্ম্য কমেনি৷ কেননা, তারা গা ঢাকা দিলেও ফুটবলপ্রেমীরা তাদের খুঁজে নিচ্ছেন৷ ফলে টিকিটের দাম বেড়েই চলেছে হু হু করে৷ সে যাই হোক, ম্যাচের একদিন আগেই এটা পরিষ্কার যে স্টেডিয়ামে তিল ধারনের জায়গা রবিবার থাকবে না৷ এবং এই জনতার পুরো সমর্থন যাবে এটিকের বিপক্ষে৷
প্রশ্ন হল, ঘরের মাঠের অ্যাডভাণ্টেজ নিয়েই কি সব দল বাজি মারতে পারে? রেকর্ড তা বলছে না৷ টাটকা দুটো দৃষ্টান্ত -ব্রাজিল বিশ্বকাপ ও গতবার আইএসএল৷ নিজেদের ঘরের মাঠে খেলেও জার্মানির কাছে সেমিফাইনালে সাত গোল খেয়েছিল ব্রাজিল৷ আবার গত আইএসএল ফাইনাল গোয়ায় হওয়া সত্ত্বেও চেন্নাইয়ের কাছে গোয়ানিজরা হেরেছিল৷ সুতরাং ঘরের মাঠে সুবিধে নিয়ে কোনও দল শুধু চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না৷
কেরলের অ্যাডভাণ্টেজ হল তাদের ডিফেন্স৷ টানা গত ছ’টা ম্যাচ যেমন তারা জিতেছে৷ পাশাপাশি আটটা ম্যাচের মধ্যে চারটেতে একটাও গোল খায়নি৷ শুধু তাই নয়, নিজেদের মাঠে মাত্র চারটে গোল খেয়েছে৷ আসলে আইরিশ ডিফেন্ডার অ্যারন ও সন্দেশ জিঙ্ঘান বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রতিটি দলের সামনে৷ ফলে কেউই তেমন সুবিধে করতে পারেনি৷ তারওপর বেলফোর্ট গোল করে দলকে ভরসা জুগিয়ে গিয়েছেন৷ সেই কেরলকে কোচির মাটিতে হারানো সত্যিই কঠিন৷
এটিকে অবশ্য এসব মাথাতেই রাখছে না৷ মোলিনার স্পষ্ট অভিমত, কেরল ভাল দল৷ তাই বলে এটিকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই৷ গত ম্যাচে মুম্বইয়ের বিপক্ষে ন’জনকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন৷ এই নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মনে কম কৌতূহল জাগেনি৷ তবে এখন বোঝা যাচ্ছে একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে৷ যেহেতু ন’জন পূর্ণ বিশ্রাম পেয়ে গেলেন৷ তাঁরা ফ্রেশ হয়ে আজ নামবেন৷ শুধু তাই নয়, ধারাবাহিকতার দিক দিয়ে এটিকে এই মুহূর্তে অনেক এগিয়ে৷ মাত্র দুটো ম্যাচ তারা হেরেছে৷ শুধু তাই নয়, এই কোচির মাটিতেই হারিয়ে গিয়েছে কেরলকে৷ দ্বিতীয়ার্ধে জাভি লারা গোল দিয়ে এটিকে-কে জিতিয়ে ছিলেন৷ মোলিনা অবশ্য এসব মনে রাখতে নারাজ৷ তাঁর সাফ কথা, “জানি না আমাদের দলকে ধারাবাহিকতার শীর্ষে রাখা হবে কি না৷ তবে এটুকু বলতে পারি, আমরা মাত্র দুটো ম্যাচ হেরেছি৷ তাছাড়া কেরল থেকেই আমরা জিতে ফিরেছিলাম৷ যদিও সেসব মনে রাখতে চাই না৷ এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য ট্রফি নিয়ে ফেরা৷” এটিকে কোচের সূত্র ধরেই পোস্তিগাকেও বলতে শোনা গেল, “ঘরের মাঠে সবচেয়ে বেশি সুবিধা নিয়েছে কেরল৷ যেহেতু তারা দারুণ সমর্থন পাচ্ছে৷ প্রথম ম্যাচ খেলতে এসে বুঝে গিয়েছি, এখানকার দর্শকরা একটা দলকে সমর্থনের জোরে কোথায় নিয়ে যেতে পারে৷ তবে আমাদের একটাই লক্ষ্য, চ্যাম্পিয়ন হওয়া৷” একা কোচ নন, গোটা দলটাই তাকিয়ে আছে হিউম এবং পিয়েরসনের দিকে৷ দু’জনেই কেরালার হয়ে খেলেছেন৷ কেরালার সমর্থক, মাঠের পরিবেশ সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা বেশি৷ দল চাইছে রবিবার মাঠে এই দুই ফুটবলার নেতৃত্ব দিক৷
প্রথম আইএসএল-এ ভাল খেলেও শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে রানার্সের তকমা নিয়ে ফিরতে বাধ্য হয়েছিল শচীন তেণ্ডুলকরের দল৷ হাসিমুখে ফিরেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দল৷ এবার প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে কেরল৷ ফলে তাদের থামানো সহজ হবে না এটিকে-র৷ এখন দেখার পোস্তিগা বনাম অ্যারন লড়াইতে শেষ হাসি হাসে কে? দুটো দলের দু’জনই যে মার্কি ফুটবলার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.